প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে আমরা বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় এবং বিড়ালের খাবার তালিকা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমরা অনেক সময় কিনে বা রাস্তা থেকে কুড়িয়ে বিড়াল ছানা নিয়ে আসি অনেক সময় আমরা বুঝতে পারি না বিড়াল ছানার বয়স কত এটা জানা খুবই জরুরী কারণ খাওয়া এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে বয়স নির্ধারণ না করতে পারলে এবং বয়স ভুল হলে বাচ্চা বিড়ালের ক্ষতি হয়।
বিড়ালের ব্যবহার এবং শারীরিক কিছু লক্ষণের মাধ্যমে বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করা যায়। আপনি যদি বিড়ালের বয়স বুঝতে না পারেন তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই আর্টিকেলে বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় এবং বিড়ালের খাবার তালিকা সম্পর্কে আলোচনা করা হবে। তাই বিড়ালে বয়স এবং খাবার সহ বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে এই আর্টিকেল পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
আমরা অনেকেই শখের বসে বিড়াল পালন করে থাকি কিন্তু কখনো কখনো বিড়ালের খাবার এবং চিকিৎসার জন্য বিড়ালের বয়স যাচাই করার প্রয়োজন পড়ে তাই বিড়ালের বয়স বোঝা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যারা বিড়াল পালন করেন কিন্তু বিড়ালের বয়স নির্ধারণ করতে পারেন না তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি।
এই পোস্টে বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় ও বিড়ালের জাত চেনার উপায় জানাবো। এর পাশাপাশি বিড়ালের খাবার তালিকা তুলে ধরার চেষ্টা করব কারণ অনেক মানুষই আছে যারা বিড়াল পুষেন কিন্তু বিড়ালের খাবার সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা নেই। তো বিড়াল সংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
বিড়ালের বয়স বোঝার উপায়
আপনি বিড়াল পালন করেন কিন্তু বিড়ালের বয়স জানেন না বিড়ালের খাবার ও মেডিসিন তার বয়স অনুযায়ী দিতে হয় তাই বিড়ালের বয়স জানা খুবই জরুরী। অনেক সময় অনেক ডাক্তার আপনার কাছ থেকে বিড়ালের বয়স জানতে চায় কিন্তু আপনি বিড়ালের বয়স বলতে পারেন না। সদ্যজাত থেকে ছয় মাস পর্যন্ত শারীরিক গঠন দেখে আপনি কিভাবে বুঝবেন বিড়ালের বয়স কত তা এখন জানাবো।
- ৭ দিনের বিড়ালছানাঃ সদ্যজাত থেকে ৭ দিন এ সময় ওজন ৩ থেকে ৪ আউন্স হয়ে থাকে। চোখ ও কান বন্ধ থাকবে চামড়া গোলাপী থাকবে, পেটে নাভির কাছে আংশিক নারী দেখা যাবে তৃতীয় দিন এটা পড়ে যায় শরীর একটু একটু কাপে, নাক ও কপাল সমান্তরাল থাকে।
- ২য় সপ্তাহের বিড়ালছানাঃ ওজন হবে ৬ থেকে ৮ আউন্স। চোখ ও কান আংশিক খুলবে, চোখের রং সাধারনত গাড়ো নীল হয়ে থাকে। পেট দিয়ে একটু একটু হামাগুড়ি দেয়, মাথা ও ঘাড় একটু সময়ের জন্য তুলে রাখতে পারে। বেশিরভাগ সময় খাই এবং ঘুমায়। একা একা সময় পুপস এবং পেই করতে পারেনা এছাড়া নাক একটু করে উঁচু হতে শুরু করে।
- ৩য় সপ্তাহের বিড়ালছানাঃ ওজন হবে ৬ থেকে ১২ আউন্স। চোখ পুরোপুরি খুলবে বসতে পারে একটু একটু হাঁটতে পারে এবং কিছু পেলে তা নিয়ে খেলতে শুরু করে। গলার আওয়াজ বাড়তে থাকে মাড়িতে ছোট ছোট দাগ জন্মাতে শুরু করে এবং সবকিছুতে কামড়াতে চায়।
- ৪র্থ সপ্তাহের বিড়ালছানাঃ ওজন হবে ১২ আউন্স থেকে ১ পাউন্ড। মাটিতে আছরাতে পারে দৌড়াতে পারে এবং উঁচু জায়গায় চড়তেও পারে। দুধ ছাড়া অন্যান্য খাবার একটু একটু খেতে পারে। ঘুমের চাইতে বেশি সময় খেলতে পছন্দ করে। লিটার বক্স চিনতে শিখে এবং মাড়ির দাঁত উঠে পড়ে।
- ৫ম সপ্তাহের বিড়ালছানাঃ ওজন হবে এক থেকে দেড় পাউন্ড। এক জায়গায় থাকতে চায় না সামাজিক হতে শিখে। চোখের রং পুরোপুরি বদলে যায়, দুধ খাওয়া ছেড়ে দেয় এবং স্বীকার করতে শিখে।
- ৬ষ্ঠ সপ্তাহের বিড়ালছানাঃ ৬ সপ্তাহের বেশি বয়স হলে সব ধরনের খাবার খেতে শিখে এবং নিয়মিত লিটার বক্স ব্যবহার করতে পারে।
বিড়ালের জাত চেনার উপায়
সারা বিশ্বে কুকুরের পর সবচেয়ে জনপ্রিয় পোশা প্রাণী হলো বিড়াল। আদরের স্বভাবের শান্ত এই প্রাণীটি খুব সহজে মানুষের খুব কাছের বন্ধু হতে পারে এজন্য সবাই বিড়াল পুষতে পছন্দ করে। পৃথিবীতে প্রায় ৬০০ মিলিয়নের মতো পুষা বিড়াল রয়েছে আর এ সকল বিড়ালের রয়েছে নানান জাত।
আরো পড়ুনঃ সেরা ১৫ জন নাক কান গলা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার
বিড়ালের ৫০ টা বেশি চা জাত রয়েছে এগুলোর মধ্যে ছয়টি জাতের সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় আসুন জানা বিড়ালের ছয়টি জনপ্রিয় জাতের বৈশিষ্ট্য জেনে নেই।
১. বেঙ্গল বিড়ালঃ চিতা বাঘের মতো কালো সোনালী ছোপ যুক্ত বিড়ালকে বেঙ্গল বিড়াল বলে। এই বিড়াল দেখতে কিছুটা চিতা বাঘের মত বন্যভাবে জনপ্রিয় এই বিড়ালগুলো এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকায় সুখ্যাত উৎপত্তি। বেঙ্গল বিড়াল আমেরিকায় আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য ১৫০০ থেকে ৩ হাজার ইউএসডি ডলার।
২. পার্সিয়ান বিড়ালঃ বিড়ালের বিভিন্ন জাতের মধ্যে পারসিয়ান বিড়াল খুবই জনপ্রিয়। এই পার্শিয়ান বিড়াল কে বিড়ালদের মধ্যে সেলিব্রিটি হিসেবে অভিহিত করা হয়। আমেরিকায় পার্শিয়ান বিড়ালের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। এই বিড়ালের লম্বা লোম এবং চমৎকার চোখের রং দেখে যে কেউ এদের ওপর মুগ্ধ হয়ে যায়। পার্সিয়ান বিড়াল গায়ের লম্বা লোমের জন্য বিখ্যাত।
মিষ্টি দেখতে এই পার্শিয়ান বিড়াল খুবই শান্ত এবং অলস স্বভাবের হয়ে থাকে। পারস্য বা ইরানের উৎপত্তি হওয়ায় এদের নাম দেওয়া হয়েছে পার্শিয়ান বিড়াল। আন্তর্জাতিক বাজার এদের মূল্য প্রায় ১৩০০ থেকে ৩০০০ ইউএসডি ডলার।
৩. স্কটিশ ফোল্ড বিড়ালঃ আদরের স্বভাবের স্কটিশ ফোল্ড বিড়াল খুবই শান্ত প্রকৃতির অন্য সকল বিড়াল থেকে এদের আলাদা একটি বৈশিষ্ট্য হলো এদের কান ভাজ হয়ে থাকে যার ফলে এদেরকে অনেকটা প্যাঁচার মতো দেখতে মনে হয়।
বন্ধুস্বলভ এই জাতটি খুব সহজে যেকোনো পরিবেশে মিশে যায়। এদের উৎপত্তি স্কটল্যান্ডে হাওয়াই এদের নাম দেওয়া হয়েছে স্কটিশ ফোল্ড। আন্তর্জাতিক বাজারে এদের মূল্য ১০০০ থেকে ২০০০ ইউএসডি ডলার।
৪. ব্রিটিশ শর্ট হেয়ার বিড়ালঃ ব্রিটিশ শর্ট হেয়ার বিড়াল হল প্রাচীন একটি জাত। এ জাতের বিড়াল গুলো শান্ত স্বভাবের হয়ে থাকে এদের শরীরের লোম অনেকটাই ঘন ও ছোট আকৃতির হয়ে থাকে। এই বিড়ালগুলো বিভিন্ন রঙের হয়ে থাকে তবে নেলচে রঙ সবচেয়ে কমন এবং জনপ্রিয়।
ব্রিটিশ শর্ট হেয়ার বিড়ালটির উৎপত্তি গ্রেট ব্রিটেনে। ঘন এবং ছোট আকারের লোমের জন্য এই বিড়ালের নাম ব্রিটিশ শর্ট হেয়ার। আন্তর্জাতিক বাজারে এদের মূল্য প্রায় ১২০০ থেকে ২৩০০ ইউএসডি ডলার।
৫. স্ফিনক্স বিড়ালঃ এই স্ফিনক্স বিড়ালটি দেখতে কিছুটা অদ্ভুত। এই বিড়ালের পরিচিতি লোমবিহীন শরীরের গঠনের জন্য। কিছু কিছু স্ফিনক্স বিড়ালের ক্ষেত্রে অল্প পরিমাণ চিকন লোম দেখা গেল বেশিরভাগ বিড়ালের লোমহীন।
এদের মাথা অনেকটা চিকন লম্বা হয়ে থাকে। লোমহীন হাওয়ায় অন্য বিড়ালের চেয়ে এদের শরীরে থেকে বেশি পরিমাণ তাপ বের হয়ে যায় তাই এদের শরীর ধরলে অনেকটাই গরম মনে হয়। এরা সবসময় বিশ্রাম নেয়ার জন্য গরম থাকে খুঁজতে থাকে এদের উৎপত্তি কানাডায়। আন্তর্জাতিক বাজারে ১৫০০ থেকে ৩০০০ ইউএসডি ডলার।
৬. সিয়ামিজ বিড়ালঃ একসময় এই বিড়ালের জাতটি শুধু রাজা এবং অভিযোগ শ্রেণীর ব্যতীত কারো পালন করার অনুমতি ছিল না এটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে অভিজাত জাত বলা হয় কারণ অন্য সকল বিড়াল থেকে খুব সহজে একে আলাদা করা যায়। এই বিড়ালের জাত শান্ত সামাজিক এবং বুদ্ধিমান প্রকৃতির হয়ে থাকে এদের উৎপত্তি থাইল্যান্ডে আন্তর্জাতিক বাজারে মূল্য ৬০০ থেকে ১২০০ ইউ এস ডি ডলার।
বিড়ালের বাচ্চা কতদিন মায়ের দুধ খায়
অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন বিড়ালের বাচ্চা কতদিন মায়ের দুধ খায় অর্থাৎ মা বিড়াল কতদিন পর্যন্ত বাচ্চাদেরকে দুধ খাওয়াই। দেশী বা বিদেশি যেকোন বিড়ালী হোক না কেন সাধারণত এরা ৩৫ দিন পর্যন্ত বাচ্চাদেরকে দুধ খাওইয়ে থাকে আবার অনেক সময় দেখা যায় ৪২ বা ৪৫ দিনও লেগে যাই। তো এইসব নির্ভর করে বিড়ালের মানসিক ও শারীরিক অবস্থানের উপর।
একটি বিড়ালের বাচ্চা জন্মের পর থেকে প্রয়োজনীয় সকল পুষ্টি উপাদান তার মায়ের কাছ থেকে পেয়ে থাকে অর্থাৎ তার মায়ের দুধে এমন কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা অন্য খাবারে নেই এবং এই মায়ের দুধ বাচ্চাকে সুস্বাস্থ্যবান গড়ে তোলে ও বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।
বিড়ালের খাবার তালিকা
বিড়াল একটি আদরের প্রাণী। বিড়ালের নরম তুলতুলে শরীর গুলিয়ে দিতে কার না ভালো লাগে তাইতো আমরা অনেকেই বাড়িতে বিড়াল পালন করে থাকি। বিড়ালকে পোষ মানানোর জন্য নানান খাতির যত্ন করে থাকি।
তবে যতই যাই বলেন বিড়াল একটু সামান্য খাবার ও নির্ভরযোগ্য আশ্রয় স্থান পেলে খুব সহজেই আপনার পোষ মানবে এজন্য বিড়ালের খাবারের দিকে যত্নবান হওয়া উচিত। তো চলুন বিড়ালের বয়স অনুযায়ী বিড়ালের খাবার তালিকা সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
১। জন্মের পর থেকে ৪ সপ্তাহঃ জন্মের পর থেকেই মায়ের দুধ বিড়ালের আদর্শ খাবার। এ সময় বিড়াল শক্ত খাবার খেতে পারে না এই সময় শুধু তরল খাবার খেতে পারে তাই এই সময় বিড়ালকে শক্ত খাবার খাওয়ানো যাবে না। তবে বিড়ালছানা যদি এতিম হয়ে থাকে তাহলে ফিডারে করে তরল দুধ অথবা দুধ পাউডার খাওয়াতে হবে।
দুধ যদি বেশি ঘন হয় তাহলে দুধের সঙ্গে একটু পানি মিশিয়ে পাতলা করে খাওয়াতে হবে কারণ বেশি ঘন দুধ বিড়াল কে খাওয়ালে ডায়রিয়া হতে পারে এজন্য দুধের সাথে সমপরিমাণে পানি মিশিয়ে খাওয়াবেন।
২। ১ মাস থেকে ৩ মাসঃ এই সময়ের মধ্যে বিড়ালের বাচ্চা দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার খেতে পারে। এ সময় আপনার বিড়ালকে মসলা ছাড়া থেতলানো মাংস এবং কাটাছেড়া সিদ্ধ মাছ খেতে দিতে হবে এর পাশাপাশি আপনি চাইলে ভাত মিশিয়েও খাওয়াতে পারেন।
এ সময় বিড়ালের অধিক পুষ্টির প্রয়োজন পড়ে তাই বাজার থেকে কিটেন ফুড কিনে খাওয়াতে পারেন। বিড়ালের বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুধ খাওয়ানো কমিয়ে দিতে হবে অর্থাৎ দুই মাস বা আড়াই মাস এর পর থেকে বিড়ালকে আর দুধ খাওয়ানোর কোন প্রয়োজন নেই।
৩। ৩ মাস পরেঃ তিন মাস পরে বিড়াল প্রায় সব ধরনেরই খাবার খায় তাই আপনি চাইলে এই সময়ে বিড়ালকে যেকোনো মাছ, ডিম, মুরগির মাংস, গরুর মাংস খাওয়াতে পারবেন। প্রয়োজনে ক্যাট ওয়েট ফুড খাওয়াতে পারেন। এই সময়ে বিড়ালকে প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়াতে হবে এবং বিড়ালের খাবারই তেল, মসলা, রসুন, পেঁয়াজ ব্যবহার করা যাবে না।
আরো পড়ুনঃ শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা
বিড়ালকে কাঁচা মাছ, মাংস খাওয়ানো যাবে না। শুধুমাত্র পানি দিয়ে সিদ্ধ করে বিড়ালের খাবার তৈরি করতে হবে এবং বিড়ালকে দিনে ২ থেকে ৩ বার খাওয়াতে হবে।
৪। মা বিড়ালের জন্যঃ বিড়ালের গর্ভকাল আনুমানিক ৯ সপ্তাহ। প্রেগন্যান্ট থাকা অবস্থায় মা বিড়ালের খাবারের চাহিদা ৫০ গুণ বেড়ে যায় সেজন্য এই সময় বিড়ালকে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে এবং বেশি করি যত্ন নিতে হবে। বিড়ালের অন্যান্য খাবারের পাশাপাশি কিটেন ফুড খাওয়াতে পারেন। কিটেন ফুড যদি খাবারের সঙ্গে মিশে খাওয়ান তাহলে অনেক বেশি পুষ্টিকর হবে খাবারটা।
বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর খাবার
আমরা যারা বাড়িতে বিড়াল পালন করি আমরা অনেকেই শখ করে আদরের বিড়ালকে পছন্দের খাবার দিয়ে থাকি কিন্তু মানুষের এমন অনেক খাবার আছে যা বিড়ালের জন্য বিষাক্ত এবং বিপদজনক তাই এসব খাবার খেয়ে অনেক সময় আপনার বিড়াল অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে আবার অসাবধানতা বসত পোষা বিড়াল অনেক সময় কিছু জিনিস যা বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর তাই আসুন জেনে নেই বিড়ালের জন্য ক্ষতিকর খাবার কি কি সেই সম্পর্কে।
- চকলেট কফি ও চাঃ এই খাবারগুলো কোকো বীজ থেকে তৈরি হয় যাতে মিথেল জানথিন নামে একটি পদার্থ থাকে এটি খেলে বিড়ালের বমি, ডায়রিয়া, অতিরিক্ত তৃষ্ণা এবং অস্বাভাবিক হৃদ কম্পন হয়ে থাকে।
- আঙ্গুর ও কিসমিসঃ আঙ্গুর কিসমিস বিড়ালে কিসের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এগুলো খেয়ে ফেললে প্রথম ১২ ঘন্টার মধ্যে বিড়ালের বমি শুরু হবে এবং পরবর্তী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিড়ালের ডায়রিয়া খাবারে অরুচি ও পেটে ব্যথা শুরু হতে পারে তাই কখনোই এগুলো বিড়ালকে খেতে দেয়া যাবে না।
- পেঁয়াজ ও রসুনঃ পেঁয়াজ ও রসুন এ রয়েছে এমন কিছু খাদ্য প্রদান যা বিড়ালের রেড ব্লাড সেল ধ্বংস করে দেয় যার ফলে বিড়ালের রক্তশূন্যতার অর্থাৎ এনিমিয়া দেখা দিতে পারে।
- কাঁচা মাংস ও কাঁচা ডিমঃ বিড়াল কাঁচা ডিম বা কাঁচা মাংস খেয়ে ফেললে তার কিন্তু মানুষের মতই সালমোনেলা, পয়জনীন হতে পারে এছাড়াও কাঁচা ডিমে এমন কিছু এনজাইম রয়েছে যা বিড়ালের চামড়ার জন্য বা পশমের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর তাই বিড়ালকে কাঁচা ডিম ও কাঁচা মাংস থেকে দূরে রাখুন।
- অ্যালকোহল মিশ্রিত খাবার বা পানীয়ঃ এই ধরনের খাবার খেয়ে ফেললে বিড়ালের অতিরিক্ত ব্লাড সার্কুলেশন হতে পারে এবং এমনকি এর ফলে বিড়ালের হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে তাই কখনোই পানীয় বা অ্যালকোহল মিশ্রিত খাবার খাওয়ানো যাবে না।
- মানুষের ওষুধঃ মানুষের কোন ধরনের ওষুধ বিড়ালকে খাওয়ানো যাবে না। অনেকে আছেন যারা বিড়াল অসুস্থ হয়েছে কিংবা ঠান্ডা লেগেছে সেই কারণে নাপা খাইয়ে দেন এটা একদমই উচিত নয় কেননা এতে উল্টে বিপরীত হতে পারে।
- লেবু বা টক জাতীয় খাবারঃ লেবু এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি জিনিস। লেবু বা টক জাতীয় যেকোনো জিনিস বিড়ালের জন্য পুরোপুরি বিষের মতো কাজ করে। এগুলো খাওয়ার ফলে বিড়ালের স্টমাতে সমস্যা সৃষ্টি করে এমনকি বিড়াল মারাও যেতে পারে তাই লেবু বা টক জাতীয় যেকোনো জিনিস বিড়ালকে খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন।
- লবণ ও চিনিঃ সোডিয়াম, আয়ন বিড়ালের জন্য বিষ। অতিরিক্ত লবণ খেলে বিড়াল বমি ও ডায়রিয়া করে মারাও যেতে পারে। অতিরিক্ত চিনে ডায়াবেটিস সৃষ্টি করে ও দাঁতের ক্ষতি করে অতিরিক্ত মিষ্টি বিড়ালের জন্য বিষাক্ত তাই আপনার বিড়ালকে অতিরিক্ত লবণ ও চিনি খাওয়ানো থেকে বিরত রাখুন।
- কাঁচা আটা, টুথপেস্ট ও চিংগামঃ ইস্ট যুক্ত কাঁচা আটা বিড়ালের জন্য বিষ। টুথপেস্ট ও চিংগাম এর পদার্থ বিড়ালের শরীরের জন্য অত্যান্ত ক্ষতিকর তাই এইসব খাবার খাওয়ানো থেকে আপনার বিড়ালকে দূরে রাখুন।
- দুধ জাতীয় খাবারঃ অনেক সময় দুধ বা দুধ জাতীয় খাবার বেশি খেলে ডায়রিয়া হয়ে বিড়াল মারা যেতে পারি তবে জীবাণুমুক্ত ও পরিমান মত পানি মিশানো দুধ বিড়ালের জন্য উপকারী। সেজন্য আপনি চাইলে আপনার বিড়ালকে অল্প পরিমাণে দুধে পানি মিশিয়ে খাওয়াতে পারেন।
বিড়াল কত বছর বাঁচে
অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন বিড়াল কত বছর বাঁচে? বিশেষজ্ঞদের মতে বিড়াল সাধারণত ১২ থেকে সর্বোচ্চ ১৭ বছর পর্যন্ত বাঁচে তবে কিছু কিছু বিড়ালের ভালোভাবে যত্ন নিলে এর চাইতেও বেশি দিন বাঁচে। যুক্তরাষ্ট্রে একটি বিড়াল রেকর্ড গড়ে তুলেছে সে বিড়ালটার বয়স হচ্ছে ২৬ বছর। সব বিড়ালের চাইতে বয়স বেশি হওয়ার কারণে এই বিড়ালটির নাম রাখা হয়েছে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ড।
লেখকের শেষ কথা
প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে বিড়ালের বয়স বোঝার উপায় ও বিড়ালের খাবার তালিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি সঠিকভাবে বিড়ালের বয়স বুঝতে পারেন তাহলে আপনি আপনার বিড়ালকে সঠিক খাবার এবং চিকিৎসা দিতে পারবেন।
আশা করি এই পোস্টটি পড়ে আপনারা উপকৃত হয়েছেন এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন আর আপনি যদি বিড়ালের বয়স বুঝতে কোনো অসুবিধায় পড়েন অথবা এই আর্টিকেল সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন আমরা উত্তর দিয়ে দিব।