গর্ববস্থায় রক্তক্ষরণ হওয়া একটি সাধারন বিষয় চিন্তার কোন কারণ নেই। গর্ভাবস্থায় তিন মাসের সময় ১০জন মহিলার ভেতর ২ জনের রক্তক্ষরণ দেখা যায়। অনেকেই ভাবেন গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয় ব্যাপারটা এমনটা না এই সময় আপনার সাধারণত হালকা রক্তপাত হয়ে থাকে চিন্তার কোন কারণ নেই এই পোস্টটি পড়লে গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয় কিনা বিস্তারিত জানতে পারবেন।
আপনি যদি একজন গর্ভবতী মহিলা হয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ একটু ভয়ের ব্যাপার নানা কারণে এই গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে যেমন প্রথম তিন মাসের শুরু অথবা মাঝে অথবা শেষের দিকে রক্তপাত হতে পারে তাই অনেকেই এই রক্তক্ষরণ দেখে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন।
তাই এই আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়লে গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয়? কেন রক্তক্ষরণ হয় বিস্তারিত জানতে পারবেন তাই গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয় জানতে হলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
অনেক মা-বোনেরাই আছে যারা প্রথমবার গর্ভধারণ করার পর অনেক ছোটখাটো বিষয় নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন রক্তক্ষরণ হলে তো আর কোন কথাই নাই আসলে গর্ভধারণ মেয়েদের কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা সময় অনেক মহিলারা তাদের বাচ্চাকে এবং নিজের শরীরকে গর্ববস্থায় কিভাবে সুস্থ থাকবেন বেশ চিন্তিত থাকেন।
১০০ ভাগের ভিতর প্রায় ২০-৩০% মহিলারই গর্ববস্থায় রক্তক্ষরণ দেখা যায় এটা একটি সাধারণ বিষয় হলেও কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো বিষয়ে সতর্ক থাকা প্রয়োজন তাই আজকেরে আর্টিকেলটি পড়লে আপনাদের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন।
গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ কেন হয়
গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে অর্থাৎ তিন মাসের শুরুর দিকে বা তিন মাসের শেষের দিকে রক্তক্ষরণ হতে পারে এটি একটি সাধারণ বিষয় কোন চিন্তার কারণ নেই বা কোনো ক্ষতিকারকও না। তবে রক্তপাত হওয়ার কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো বিষয়ে সতর্ক থাকা উচিত। প্রথম তিন মাসে গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন
- গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ
- ইমপ্ল্যান্টেশন রক্তক্ষরণ
- ইনফেকশন
- জরায়ুর পরিবর্তন
- মোলার প্রেগনেন্সি
- এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি
ওপরের কারণগুলোর ফলে আপনার গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হতে পারে। সাধারণত শিশুর মৃত্যু হলে আমরা সেটাকে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ বলে থাকি এই গর্ভপাত সাধারণত গর্ভধারণে ২৮ সপ্তাহের ভিতরে হয়ে থাকে আর এই গর্ভপাতের অন্যতম লক্ষণ রক্তক্ষরণ
আরো পড়ুনঃ মুখে এলার্জি দূর করার ক্রিম ও ঘরোয়া উপায়
এছাড়াও আপনার যদি ইনফেকশন হয় সেক্ষেত্রে রক্তপাত হতে পারে তাই প্রথম তিন মাসের ভিতর বেশি বা অল্প রক্তকরণ হলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। এবং প্রথম তিন মাসের পরে গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে মায়ের এবং শিশুর জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ যেমন প্লাসেন্টা, ভাসা প্রিভিয়া, গর্ভফুল ছিঁড়ে যাওয়া এইসব কারণেও রক্তক্ষরণ হতে পারে।
তাই এই উপসর্গগুলি অনুভব করেন তাহলে দেরি না করে তাড়াতাড়ি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন। আশা করি গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ কেন হয় এবং কারণগুলি জানতে পেরেছেন।
গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয়
গর্ভবস্থায় রক্তক্ষরণ একটি সাধারণ সমস্যা হলেও এটি ভয়েরও কারণ রয়েছে। প্রথম তিন মাসে রক্তক্ষরণ বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এবং অনেক সময় দেখা যায় অল্প রক্তপাত হয় তাই আপনি যদি ঠিক মতন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলেন তাহলে বাচ্চা প্রসব করা সম্ভব।
১৫ জন মহিলার ভিতর এক থেকে দুইজনেরই গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে তবে কিছু রক্তক্ষরণের কারণ রয়েছে যেগুলি তিন মাসের শুরুতে অথবা শেষে অথবা মাঝে দেখা দিলে বাচ্চা নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
তবে প্রতিটা বাচ্চা নষ্ট হয় সেই কারণগুলি হল ইনফেকশন, উচ্চ রক্তচাপ, এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি, গর্ভপাত, প্লাসেন্টা এবং ইমপ্ল্যান্টেশন রক্তক্ষরণ এইসব কারণগুলোর ফলে বাচ্চা নষ্ট হতে পারে তাই প্রথম তিন মাসে শুরু অথবা শেষের দিকে যদি আপনি কোন উপসর্গ অনুভব করেন তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
হালকা রক্তপাত কিসের লক্ষণ
অনেকের গর্ভাবস্থায় হালকা রক্তপাত হয়ে থাকে এর কয়েকটি কারণ রয়েছে যেগুলো এই অংশে আপনাদের জানাবো অনেক মায়েরা আছে এটা নিয়ে বেশ চিন্তিত হয়ে পড়েন চিন্তার কোন কারণ নেই গর্ববস্থায় হালকা রক্তপাত হওয়াটা সাধারন। ইস্ট্রোজেন জরায়ুর অস্তরণ বাড়াই যার কারণে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় হালকা রক্তপাত হতে পারে।
এছাড়াও ডিম্বস্ফোটনে, ডায়েট খারাপ এবং অতিরিক্ত ব্যায়াম করার ফলে ইস্ট্রোজেন মাত্রা কমে যেতে পারে ফলে গর্ভাবস্থায় হালকা রক্তক্ষরণ হতে পারে তাই আমাদের উচিত ভালো ডায়েট কন্ট্রোল করা এবং ইস্ট্রোজেন মাত্রা যাতে না কমে যাই সেদিকে খেয়াল রাখা।
কি কি কারণে গর্ভাবস্থায় প্রথম পর্যায়ে রক্তক্ষরণ হয়
যদিও গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে রক্তক্ষরণ হলে তেমন একটা ক্ষতিকারক না তবে অনেকেই আছেন গর্ভাবস্থায় প্রথম পর্যায়ে রক্তক্ষরণ হয় ফলে তারা বেশ চিন্তিত হয়ে পড়ে তাই এই অংশে আপনাদের কি কি কারণে গর্ভাবস্থায় প্রথম পর্যায়ে রক্তক্ষরণ হয় সে বিষয়ে জানাবো।
ইমপ্ল্যান্টেশন জনিত কারণে গর্ভাবস্থায় প্রথমদিকে হালকা হালকা রক্তক্ষরণ দেখা যাই যাকে বলা হয় স্পর্টিং। গর্ভাবস্থায় জরায়ুমুখের পরিবর্তনের ফলে রক্তক্ষরণ হতে পারে। এছাড়াও এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ফলে গর্ভাবস্থায় প্রথম ১২ সপ্তাহে পর্যায়ে রক্তক্ষরণ বা গর্ভপাত দেখা দিতে পারে।
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হলে করনীয় কি
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হলে মা সহ পুরো পরিবার চিন্তিত হয়ে পড়েন তাই এই অংশে গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হলে করনীয় কি যে সম্পর্কে আলোচনা করব। গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হলে ডাক্তারেরা সাধারণত একটি আলট্রাসন করে আপনার শিশুটি ভালো আছে কিনা বা বাচ্চার হার্টবিট আছে কিনা।
যদি এই রক্তপাতটা তিন মাস পরে হয়ে থাকে তাহলে ডাক্তারেরা ইনজেকশন এবং রেস্টে থাকার পরামর্শ দিয়ে থাকে। এবং বিভিন্ন কারণে গর্ভাবস্থায় রক্তপাত হতে পারে তাই যদি মাসিকের পথে অল্প অথবা বেশি রক্তপাত হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
গর্ভাবস্থায় রক্তপাত কতদিন থাকে
গর্ভাবস্থায় বারো সপ্তাহ অথবা প্রথম তিন মাস রক্তপাত হওয়া সাধারণ তবে এটি ক্ষতিকারক লক্ষণ হতে পারে এবং নাও হতে পারে। লাল রক্ত এবং হালকা বাদামি দাগ রক্তপাত হতে পারে এটি সাধারণত ১ দিন থেকে ৭ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে
এছাড়াও পিঠে ব্যথা হতে পারে অনেক সময় দেখা যায় রক্তপাত এমনি ভালো হয়ে যায় এবং গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক হয়ে যায়। যদি আপনার ১ থেকে ৭ দিন পর রক্তক্ষরণ বন্দনা হয় সে ক্ষেত্রে একজনের ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
শেষ কথা
আপনি যদি একজন গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে বেশি কিংবা অল্প তাহলে বেশি দেরি না করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ এই রক্তপাত বিভিন্ন কারণে হতে পারে এই গর্ভাবস্থায় রক্তপাত কখনো কখনো ক্ষতিরও কারণ হতে পারে এবং সাধারণ সমস্যা হতে পারে তাই দ্রুত রক্তক্ষরণ এর কারণ
খুঁজে বের করা উচিত।
আজকের এই আরটিকালে কি কি কারণে গর্ভাবস্থায় প্রথম পর্যায়ে রক্তক্ষরণ হয় এবং গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ হলে কি বাচ্চা নষ্ট হয় আরো অনেক প্রশ্নের উত্তর আপনাদের দিয়েছি আশা করি আপনি পোস্টটি মনোযোগ সহকারে করেছেন।
এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন যাতে অন্যরা গর্ভাবস্থায় রক্তক্ষরণ কেন হয় এবং রক্তক্ষরণ হওয়ার মূল কারণ সম্পর্কে জানতে পারে। আর আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে তোমাদেরকে জানাতে পারেন। আমাদের সাথে এতক্ষণ থাকার জন্য ধন্যবাদ।