সিজারের পর খাবার তালিকা – সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না

সিজারের পর একজন মায়ের শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে তাই সিজারের পর খাবার তালিকা নির্বাচন করা এবং মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ আপনি যদি আপনার খাবার তালিকায় পুষ্টিগুণ খাবার রাখেন সে ক্ষেত্রে সিজারের পর তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। তাই আজকের আর্টিকেলে সিজারের পর খাবার তালিকা এবং সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলো সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।

নরমাল ডেলিভারির চাইতে সিজারের প্রসবের সময় কম কষ্ট পেলেও সিজারে বেশি কষ্ট দেও কারণ একজন মায়ের শরীর অনেক দুর্বল হয়ে পড়ে সে ক্ষেত্রে সিজারের পর খাবার তালিকা এবং সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলোর থেকে নজর দেওয়া উচিত।

Table of Contents

ভূমিকা

সিজার করার পর প্রতিটা মায়েরিই নিজে সুস্থ থাকা এবং সন্তানকে সুস্থ রাখা খুবই চ্যালেঞ্জিং। কেননা সিজার করার পর প্রতিটা মায়েরিই অনেক কষ্ট হয় কেননা সিজার করার পর সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হতে প্রায় দেড় মাস সময় লেগে যায়। সিজার করার পর আপনি যদি সঠিক খাবার তালিকা মেনে খাবার না খান তাহলে অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন তাই সিজারের পর খাবার তালিকা মেনে খাবার খাওয়া উচিত।

এছাড়া সিজারের পর অনেক খাবার রয়েছে যেগুলো আপনার একদমই খাওয়া উচিত না কেননা সেই খাবারগুলো খেলে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন এমনকি সিজারের ঘা শুকাতে অনেক দেরি হয়ে যায় এছাড়া বিভিন্ন খাবার খাওয়ার ফলে সিজার করার ক্ষত জায়গাতে ইনফেকশন হয়ে যায়। 

আরো পড়ুনঃ কোন ভিটামিনের অভাবে হাতের চামড়া উঠে

তাই সিজার করার পর সঠিক খাবার তালিকা এবং সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলো ভালোভাবে মেনে চলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা যারা সিজার করার পরিকল্পনা করছেন কিংবা সিজার করে ফেলেছেন কিন্তু সিজার করার পর কি কি খাবার তালিকা মেনে চলতে হবে এবং কি কি খাওয়া যাবেনা তা জেনে না থাকেন তাহলে এই পোষ্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

সিজারের পর খাবার তালিকা

ডেলিভারি সিজারের পর কি খাবেন এবং কি খাওয়া যাবেনা তা নিয়ে একটি খাবার তালিকা আপনাকে তৈরি করতে হবে। খাবার তালিকা এমন হওয়া উচিত যেন পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবারে মিশ্রণ হওয়া এবং পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার। যে আইটেম গুলি মায়ের সিজারের পর খাবার তালিকায় রাখা উচিত সেগুলো নিচে দেওয়া হল।

১. খনিজ প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ খাবারঃ প্রোটিন নতুন কৌশবিধিতে সহায়তা করে। প্রোটিন পেশী শক্ত করতে বেশ সহায়তা করে এবং অন্যদিকে ক্যালসিয়াম দাঁত ও হাড়কে শক্তিশালী করে, রক্ত জমা ট বাঁধা এবং পেশী স্থির রাখে। এবং কম চর্বিযুক্ত যেমন কম চর্বিযুক্ত দই, পনির, শুকনো মটর ইত্যাদি প্রোটিন এবং ভিটামিনের চমৎকার উৎস। এবং ডাল প্রোটিন উপাদানসমূহ একটি খাবার।

২. শাকসবজিঃ অনেক মহিলা আছে যারা কিনা প্রসবের পরে কোষ্ঠকাঠিন ভোগেন এটি একটি সাধারণ সমস্যা। তবে এটি সিজারের ক্ষতগুলোকে প্রচন্ড চাপ দিতে পারে তাই বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এছাড়াও সেলাই খসে যেতে পারে। আজযুক্ত খাবার যেমন শাকসবজি এবং সালাদের সাথে ফলমূল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করে।

৩. ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারঃ সিজারের পর অনেকেরই কোষ্ঠকাঠিন হয়ে থাকে ফলে এটি অনেক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে থাকে সেজন্য বেশি বেশি শাকসবজি এবং কাঁচা ফল, সবুজ ছোলা, মসুর ডাল এতে অনেক ভাইবার এবং প্রোটিন রয়েছে যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে খাবার তালিকায় যুক্ত করা যেতে পারে।

৪. তাড়াতাড়ি হজম হয় এমন খাবারঃ আমাদের শরীরে জন্মের পর থেকেই গ্যাস জমতে শুরু করে তাই গ্যাস এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সৃষ্টি করে এমন খাবার থেকে দূরে থাকা উচিত সিজারের মায়েদের। সিজারের পর কার্বোহাইড পানীয় এবং জ্যাঙ্ক ফুড খাবারগুলি এড়িয়ে চলা উচিত। সুপ এবং ঝোল এছাড়াও অন্যান্য খাবারগুলি খাওয়া উচিত যেগুলো শরীরে খুব তাড়াতাড়ি হজম হয়।

৫. আয়রন সমৃদ্ধ খাবারঃ আইরন আমাদের শরীরে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বজায় রাখতে বেশ ভূমিকা পালন করে এবং প্রসবের করার সময় রক্ত ফিরে পেতে বেশ সাহায্য করে। আয়রন সমৃদ্ধ খাবার গুলো হল লাল মাংস, ডিমের কুসুম, গরুর কলিজা, ঝিনুক, শুকানো ফল ইত্যাদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার। মেয়েদের ১৯ বছরের বেশি বয়স যদি হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে প্রতিদিন ৯ মিলিগ্রাম আয়রন গ্রহণ করা উচিত।

৬. তরল খাবারঃ কোষ্ঠকাঠিন্য এবং ডিহাইডিশন সাথে অন্ত্রের গতিবিধি করতে বেশ সাহায্য করে। এবং তরলের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পায় বিশেষ করে মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়। তরল জাতীয় বেশ কিছু খাবার রয়েছে যার মধ্যে অ-সাইট্রাস ফলের রস, ডাবের পানি, এবং পানি এবং অন্যান্য জাতীয় পানীয়।

৭. দুগ্ধজাত খাবারঃ কম চর্বিযুক্ত দুগ্ধজাত খাবার যেমন রয়েছে দুধ এবং আমিষ প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়াম ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ডি রয়েছে যেগুলো মায়ের বুকের দুধ বাড়াতে বেশ সহায়তা করে। এবং মায়ের শরীরে শক্তি এবং পুষ্টি যোগায় এবং সুস্থ রাখতেই বিষয়টা করে। এছাড়াও পনির দই এই প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন এবং আমিষ পাওয়া যায়।

৮. পর্যাপ্ত পানি খাওয়াঃ সিজার করা মায়েদের ডিহাইড্রেশনের ঝুঁকি অনেক বেশি থাকে যার কারণে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত ৭ থেকে ৮ গ্লাস পানি পান করা।কেননা যদি শরীরে পানি শূন্যতা দেখা যায় তাহলে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়া কিংবা শরীর দুর্বল হয়ে যেতে পারে।

৯. মেথির বীজঃ যেসব মায়েরা সিজার করেন তাদের মধ্যে বেশিরভাগ মায়েরিই পিঠে ব্যথা এবং প্রচুর পরিমাণে কোমর ব্যথা সমস্যায় ভুগে থাকে। এ ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে আপনার প্রতিদিনের সিজারের পর খাবার তালিকায় মেথির বীজ যোগ করুন কেননা এই মেথির বীজ সকল রকমের ব্যথা উপশম করতে খুবই কার্যকরী এবং ডাক্তারেরা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

১০. মাছ ও মাংসঃ মাছ এবং মাংসে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন ও আমিষ থাকে যা বাচ্চার মাকে এবং বাচ্চাকে সঠিক পুষ্টি দিতে বেশ সহায়তা করে। তাই একজন মায়ের সিজার করার পর খাবার তালিকায় মাছ ও মাংস থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া এই মাছ ও মাংস সিজার করা মায়ের শরীরে শক্তি যোগাতে এবং শরীরের দুর্বলতা দূর করতে বেশ সহায়তা করে।

১১. তরল খাবারঃ সিজার করার পর যেন কোন মতেই কোষ্ঠকাঠিন্য না হয় সে ক্ষেত্রে তরল খাবার খেতে হবে কারণ কোষ্ঠকাঠিন্য হলে ক্ষতস্থানে চাপ পড়বে সেজন্য এই অবস্থায় বেশি বেশি করে তরল খাবার পান করতে হবে যেমনঃ সুপ, ফলের রস, শরবত জাতীয় খাবার ইত্যাদি।

১২. ভিটামিন জাতীয় খাবারঃ সিজার করার পর ভিটামিন জাতীয় খাবার খাওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনার শরীরে যদি ভিটামিনের ঘাটতি থেকে থাকে তাহলে সিজার করার পর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারবেন না এমনকি ঘা শুকাতে দেরি হবে তাই প্রতিদিন আপনার খাবার তালিকায় ভিটামিন যুক্ত খাবার রাখুন যেমনঃ তরমুজ, আঙ্গুর, পেঁপে এবং স্ট্রবেরি জাতীয় খাবার।

সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না

সিজারের পর কি কি খাবার খাবেন সেদিকে খেয়াল রাখা কেন গুরুত্বপূর্ণ কারণ পর্যাপ্ত বিশ্রাম এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য একজন মায়ের পুনরুদ্ধার ও তার শিশুর সুস্থতার জন্য পুষ্টিকর ভেজালমুক্ত খাবার তালিকা প্রয়োজন। তাই আপনার খাবার তালিকায় এমন খাওয়ার রাখুন যেগুলো পুষ্টিতে ভরপুর যা ভালো স্বাস্থ্যর জন্য ভালো এবং মলত্যাগী বেশ উন্নতি করে। 

সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবেনা সেই সম্পর্কে আপনার সচেতন থাকা উচিত। চলুন তাহলে ডেলিভারি অর্থাৎ সিজারের পর একজন মায়ের জন্য কি কি খাবার পরিত্যাগ করা উচিত সেগুলো জেনে নেওয়া যাক। সিজারের পরে যে খাবার গুলি এড়ানো উচিত তার মধ্যে রয়েছে প্রচুর ভাজাপোড়া যুক্ত খাবার এবং অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এছাড়াও রয়েছে বাঁধাকপি ফুলকপি এবং

আসপাড়া গ্যাসযুক্ত খাবার। এছাড়াও

  • কার্বনেটেড পানীয় জাতীয় খাবার
  • বেশি মসলাদার খাবার
  • ভাত এবং ঘি
  • জ্যাক ফল
  • কম রান্না করা খাবার
  • নুডলস
  • ঠান্ডা জাতীয় খাবার
  • অতিরিক্ত ভাজা, ফাস্টফুড
  • গ্যাস জাতীয় খাবার
  • চা এবং কফি
  • কাঁঠাল
  • কমলা
  • কলা
  • আম
  • ধূমপান এড়িয়ে চলুন
  • কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এমন খাবার এড়িয়ে চলুন

সিজারের পর একজন মায়ের উপরের উল্লেখিত খাবার গুলি কখনো খাওয়া উচিত নয়। আর সিজারের পর প্রতিটা মায়েরিই উচিত যে কোন খাবার খাওয়ার আগে সেই খাবারটি ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে নেওয়া। এছাড়া মাংস ডিম দুধ এবং শাকসবজি ভালো করে সিদ্ধ করে রান্না করতে হবে যাতে বাচ্চা মায়ের দুধ খেয়ে অসুস্থ না হয়ে পড়ে সেজন্য। আশা করি বুঝতে পেরেছেন যে সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না।

সিজারের পর কি কি খাবার খাওয়া উচিত

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকেন সিজারের পর কি কি খাবার খেলে শরীরের দুর্বলতা তাড়াতাড়ি দূর হয়ে যাবে। দুধ ও দুগ্ধ র্জাতীয় খাদ্য যেমনঃ পনির, দই যেগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আমিষ বা প্রোটিন, ভিটামিন বি ভিটামিন ডি ও ক্যালসিয়াম আছে যা কিনা মায়ের বুকের দুধের উৎপাদন পুষ্টি বজায় রাখবে এবং মায়ের সুস্বাস্থ্যও দ্রুত আরোগ্য নিশ্চিত করবে এবং সিজারের ঘা দ্রুত শুকাতে সহায়তা করে। 

মা যদি দুধ না খান তবে এ সময় মায়ের শরীর থেকে ক্যালসিয়াম প্রচুর পরিমাণে শিশুর দুধে চলে যাবে এবং মায়ের হার ক্যালসিয়াম পড়বে যা সহজেই যেকোন ফ্যাক্টর ঘটাতে পারে অতএব দুধ খাওয়া উচিত। প্রচুর তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে, যা কিনা বাচ্চার জন্য দুধ উৎপাদন ও মায়ের সুস্বাস্থ্য অপারেশন পরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করবে। 

ভালো পরিমানে তরল পান করলে ১৬ চিকিৎসার পরে আরোগ্য এবং অন্ত্রের গতি মসৃণ করতে সহায়তা করে। নারকেলের জল স্বল্প ফ্যাট যুক্ত দুধ, সাইট্রাস নয় এমন রস, বাটার মিল্ক এবং সুপের মতো তরল গুলি প্রয়োজনীয় পুষ্টির ভালো উৎস। আপনার প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস জল খাও উচিত। ক্যালসিয়াম কমফ্যাট যুক্ত দই এবং দুধের মত তরল গুলি আপনার বুকের দুধে সরবরাহকে উন্নত করে যা শিশুর প্রতিদিনের ডায়েটেদের একটি প্রয়োজনীয় উপাদান।

সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবে না

আমাদের দেশের অধিকাংশ লোক কি মনে করে টক জাতীয় ফল খেলে ঘা পেকে যায়। দাদি নানীর কাছ থেকে শোনা এ তথ্যের উপর মানুষের বিশ্বাস এতই মজবুত যে সাজন বলে গেলেও রোগী সেটি বিশ্বাসই করতে চায় না হাজার বার বলার পরও তারা ভাবে সাজন ভুল। আসলে ভুলটা কার? সার্জন নাকি আপনি? হ্যাঁ আপনি বা আপনার আশেপাশের মানুষগুলি ভুল।

আসলে টক জাতীয় ফল ঘা শুকাতে সাহায্য করে। টক জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকে। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলের মধ্যে রয়েছে কাগজি লেবু, কমলালেবু, আমলকি, কামরাঙ্গা, জাম্বুরা ইত্যাদি। অপারেশনের পর ভিটামিন সি খুবই প্রয়োজন। ভিটামিন সি সংযোজক করার কোলাজেন তৈরি করতে সাহায্য করে এবং ভিটামিন কোলাজেনে অবস্থিত প্রোলিনের সঙ্গে পানির সংযোজন ঘটিয়ে হাইড্রক্সি প্রোলিন তৈরি করে। 

এভাবেই কোলাজেনের উৎপাদন সহজ করে কাটা বা ক্ষতস্থানকে মাংসপেশির তন্ত্রতে ভরাট করে ফেলে এবং ঘা শুকিয়ে যায় কাজেই দেখা যাচ্ছে টক জাতীয় ফল খেলে ঘা পাকে না বরং এটি ঘা শুকাতে বিশেষভাবে সাহায্য করে।

সিজারের কতদিন পর শক্ত খাবার খাওয়া যাবে

ডেলিভারি সিজারের পর প্রায় ১ থেকে ২ দিন হজম শক্তি এবং শরীর দুর্বল হয়ে থাকে তাই সিজারের পর একজন মায়ের খাবার তালিকায় হজমযোগ্য খাবার রাখা উচিত এবং অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। এবং এমন খাবার খাওয়া উচিত নয় যে খাবারটি খেলি কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে। 

আরো পড়ুনঃ শিশুদের জিংক সিরাপ এর উপকারিতা

সিজারিয়ান শিকশনের পর ৩ থেকে ৪ দিন অতিরিক্ত স্যুপ খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলা উচিত। এবং সিজারের এক সপ্তাহ পর আপনি স্বাভাবিকভাবে খেতে পারেন। যদি আপনার খাওয়ার প্রতি রুচি ভালো হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে ডিম, দুধ, মুরগি আপনার খাবার তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। 

সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে

অনেকেই প্রশ্ন করে থাকে বিশেষ করে যারা সিজার করেছেন কিংবা সিজার করার পরিকল্পনা করছেন তারা অনেকেই সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে তা জানতে চেয়ে থাকে। সিজারের পর বেশ কয়েকদিন ব্যাথা এবং অস্বস্তি করা এটা স্বাভাবিক। সিজারের পর ব্যথা কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত থাকতে পারে। আর চিন্তার করার কোন কারণ নেই এটি স্বাভাবিক ব্যথা সিজার করার পর প্রতিটা মায়েরিই এই ব্যথাটা হয়ে থাকে।

আপনার যদি একমাস পরেও সিজার করা জায়গাটিতে ব্যথা করে তাহলে আপনি অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। সাধারণত সিজার করার পর কয়েক সপ্তাহ ব্যথা করতে পারে তারপর এমনিতেই ব্যথা চলে যায়।

সিজারের পর আম খাওয়া যাবে কিনা?

বর্তমানে আমের মৌসুম চলছে আর প্রত্যেকটা মানুষেরই আম খাওয়ার প্রচন্ড ইচ্ছা করে একইভাবে সিজারিয়ান মায়েদের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয়। যারা কিছুদিন আগে সিজার করেছেন বা সামনে সিজার করবেন ভাবছেন তাদের আম খাওয়ার ক্ষেত্রে একটু দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়তে হয় তাদের মনে দিন শেষে একটা প্রশ্ন পাক খাই সেটা হল সিজারের পর আম খাওয়া যাবে কিনা।

ছোট-বড় প্রায় সবাই আম পছন্দ করে তবে সবাই আম পছন্দ করলেও সিজারিয়ান মায়েদের ক্ষেত্রে আম খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ আমে উচ্চমাত্রায় সুগার থাকে যা আপনার কাটা ঘায়ের সমস্যার কারণ হতে পারে সুতরাং বোঝা যাচ্ছে সিজারের পর আম খেলে আপনার কাটা ঘায়ে ইনফেকশন হওয়ার ঝুকি আছে তাই সিজার করার পর আম না খাওয়াই ভালো।

সিজারের পর কি আনারস খাওয়া যাবে?

সিজারের পর কি আনারস খাওয়া যাবে? বর্তমানে আনারসের মৌসুম চলছে আর আপনি যদি সদ্য সিজারিয়ান কোন মা হয়ে থাকেন তাহলে হয়তো সিজারের পর আনারস খাওয়া যাবে কিনা সেটা নিয়ে একটু বেশি চিন্তায় আছেন। সিজারের পর আনারস খাওয়া যাবে কিনা এই প্রশ্নটা মনে আসার প্রধান কারণ হলো ফলটি টকমিষ্টি জাতীয় হওয়ার কারণে। 

আমাদের মনে একটা প্রচলিত ধারণা আছে যে টক জাতীয় ফল খেলে নাকি ঘা পেকে যায় তবে এটা মোটেও সত্যি কোন ধারণা নয়। সিজারের পর আপনি নিশ্চিন্তে টক জাতীয় ফলগুলো খেতে পারেন তবে আপনার যদি ডায়াবেটিস আক্রান্ত হয়ে থাকেন সে ক্ষেত্রে টক জাতীয় ফলগুলো এড়িয়ে চলায় সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।

সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যাবে?

সিজার করার পর মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হয় তবে কতদিন পর্যন্ত বিরত থাকতে হয় তা হয়তো বেশিরভাগ গর্ভবতী মাই জানতে পারেনা। সিজার অপারেশন সম্পূর্ণ হওয়ার পরে কেউ যদি মিষ্টি খাই তাহলে ঘা শুকাতে দেরি হবে এবং সিজারে ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকবে।

কেউ যদি ভুল ক্রমে মিষ্টি খেয়ে ফেলে তাহলে সিজারের স্থানে সমস্যা তৈরি হতে পারে। সিজার হওয়ার পরে অন্তত কিছুদিন পর্যন্ত আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে এর পাশাপাশি সবুজ শাকসবজি সহ অন্যান্য খাবার গুলো খেতে হবে যাতে করে তাড়াতাড়ি ঘা টা শুকিয়ে যায়। 

কেউ যদি সিজারের পর মিষ্টি খেতে চাই তাহলে তাকে অন্তত ৩ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। ৩ সপ্তাহ পরেও যদি সিজারের স্থানে বা সিজারের কাঁটা স্থানে ঘা থাকে তাহলে মিষ্টি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। যখন ঘা পুরোপুরি ভাবে শুকিয়ে যাবে তখন আপনি মিষ্টি খেতে পারেন।

সিজারের পর গরুর মাংস খাওয়া যাবে?

সিজারের পর গরুর মাংস খাওয়া যাবে কিনা অনেকে প্রশ্ন করে থাকেন। সিজারের পর গরুর মাংস খাওয়া যাবে তেমন একটা কোন সমস্যা ধরা পড়েনি তবে এড়িয়ে চলা উচিত এছাড়াও যদি পছন্দ করে থাকেন গরুর মাংস খেতে তবে একটু আকটু খেতে পারেন। 

এবং যাদের গরুর মাংসে অ্যালার্জি আছে তাদের এড়িয়ে চলা উচিত কারণ গরুর মাংস খেলে আপনার ত্বকে বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হতে পারে সে ক্ষেত্রে সিজারে সেলায় অংশে চুলকাতে পারে সেজন্য গরুর মাংস না খাওয়াই উত্তম। এবং যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে থাকে তারা অবশ্যই গরুর মাংস খাবেন না। 

সিজারের পর মিষ্টি খেলে কি হয়?

সিজারের পর যদি আপনি মিষ্টি খান তবে ঘাস শুকাতে অনেক সময় লাগবে এছাড়া যদি ভুল ক্রমে মিষ্টি খেয়ে ফেলে সেক্ষেত্রে অনেক সমস্যা হতে পারে যেমন যাদের ডায়াবেটিস রয়েছে এবং ইনফেকশন জনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে। সেক্ষেত্রে সিজারের পর মিষ্টি খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। সিজারের ৩ সপ্তাহ আপনাকে অপেক্ষা করতে হবে এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার বাদ দিয়ে সবুজ শাকসবজি খাবারগুলি খেতে হবে ফলে তাড়াতাড়ি ঘা শুকিয়ে যাবে।

সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে?

অনেকে আবার প্রশ্ন করে থাকেন সিজারের পর কলা খাওয়া যাবে কিনা জি হ্যাঁ আপনি নিশ্চিন্তে ডেলিভারি সিজারের পর কলা খেতে পারেন এটি সম্পূর্ণরূপে নিরাপদ তবে দিনের বেলা কলা খান। কলা ফাইবার এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ খাবার। কলা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে সহায়তা করে। বিশেষ করে মহিলাদের জন্য কলা খুবই উপকারী।

সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবে?

উক্ত আলোচনায় আমরা আপনাদের সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না সেগুলো সম্পর্কে আগেই জানিয়েছি। এখন আপনাদের জানাবো সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবে অর্থাৎ ডেলিভারি সিজারের পর কি কি ফল কেটে উপকার পাওয়া যাবে এবং দ্রুত ঘা শুকাবে। 

আরো পড়ুনঃ ফেমিকন পিল খাওয়ার কত দিন পর মাসিক হয়

ডেলিভারি সিজারিয়ান পরে আপনি ভিটামিন যুক্ত ফল খেতে পারেন যাতে পুনরুদ্ধারের গতি বাড়ানোর জন্য। এবং শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করার জন্য ফল খেতে পারেন। ভিটামিন সমৃদ্ধ ফল গুলোর মধ্যে হলো কুমড়া, গাজর, টমেটো, আপেল এবং চেরি ফলগুলো খেতে পারে।

সিজারের কতদিন পর দুধ খাওয়া যায়?

বেশিরভাগ মা এবং বোনদের ডেলিভারি সিজারের পর দুধ, ঘি এবং ভাত খাওয়া থেকে এড়িয়ে চলার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ দিয়ে থাকে। যদিও এটি খুব একটা কেউ মানে না। তাই ডেলিভারি সিজারিয়ানের পর এক বা দুই দিন পর আপনি আবার আগের মতন স্বাভাবিক খেতে পারেন।

সিজারের পর তরমুজ খাওয়া যাবে কি?

তরমুজের প্রচুর পরিমাণে আন্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ক্ষত বা ঘা শুকাতে সাহায্য করে। এছাড়াও গাজর, পালং শাক, মেথি পাতা, স্ট্রবেরি, পেপেতে তেও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন রয়েছে যা আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে এবং দ্রুত ক্ষত সারতে বেশ ভূমিকা পালন করে।

সিজারের কতদিন পর জার্নি করা যায়?

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন সিজার করার কতদিন পর যাতায়াত করা যায় অর্থাৎ জার্নি করা যায়।সিজার করা সাধারণত দেড় মাস পরেই আপনি যেখানে খুশি সেখানে যেতে পারবেন তবে এমন জায়গায় যাবেন না যে জায়গাতে শরীরের ওপর প্রচন্ড চাপ পড়ে। যখন আপনার ঘা জায়গাটি পুরোপুরি ভাবে শুকিয়ে যাবে তখন আপনি যে কোন জায়গায় যেতে পারবেন।

সিজারের পর খাবার তালিকা সম্পর্কে শেষ কথা

সিজারের পর কি কি খাওয়া যাবে না উক্ত আলোচনায় আপনাদের জানিয়েছি যে খাবারগুলি সিজারের পর এড়িয়ে চলা উচিত এবং মিষ্টি জাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা উচিত এবং যাদের অ্যালার্জি রয়েছে গরুর মাংস থেকে দূরে থাকা উচিত। এছাড়াও আপনাদের সিজারের পর খাবার তালিকা গুলো সম্পর্কে জানিয়েছি। 

যে খাবারগুলি আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখলে আপনার শরীর সুস্থ সবল রাখতে বেশ ভূমিকা পালন করবে। এছাড়াও আজকের এই আর্টিকালে আপনাদের সিজারের পর গরুর মাংস খাওয়া যাবে কি না এবং সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যাবে এই সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। 

আশা করি আপনি পোস্টটি সম্পূর্ণ পড়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। এবং আপনার যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করতে পারেন এবং আমাদেরকে জানাতে পারেন। ধন্যবাদ।

Leave a Comment