এই আর্টিকেলে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ বের করার নিয়ম এবং বিআরটিএ গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম আপনাদের জানাবো। অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন কিভাবে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ বের করতে হয় বা আদেও এটা কি সম্ভব কিনা? বর্তমান সময়ে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম যাচাই করা সম্ভব।
বর্তমান সময়ে অনেক মানুষই আছেন যারা গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম যাচাই করতে চান তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। আপনি যদি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ এবং বিআরটিএ গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।
ভূমিকা
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো যে ধরুন আপনি নতুন একটি গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন অথবা পুরাতন একটি গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন এখন এখন বিক্রেতা বলছে গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কিন্তু আপনি চাচ্ছেন গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা নিজে চোখে দেখতে অথবা আপনি কাউকে দিয়ে নতুন গাড়ি কিনেছেন সে নতুন গাড়ির সঠিক মত কাগজপত্র ঠিক করেছে কিনা তা যাচাই করতে।
আজকের এই আর্টিক্যাল পোস্টটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ সহকারে পড়ুন কারণ এই পোস্টটি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকানা নাম যাচাই করা এবং বিআরটিএ গাড়ির কাগজ কিভাবে চেক করবেন সকল কিছু বিস্তারিত তুলে ধরার চেষ্টা করবো এই আর্টিকেলে।
গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ
আপনার কীভাবে অনলাইনে ঘরে বসে যে কোন মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন নাম্বার দিয়ে আপনি মালিকের নাম বের করবেন যদি একটু সহজ ভাষায় বলি তাহলে যে কোন মোটরযানের যে রেজিস্ট্রেশন যার নামে করা আছে সেটি কিভাবে আপনারা ঘরে বসে বের করবেন সেই প্রসেসটা আজকের এই আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো।
আরো পড়ুনঃ সৌদি আরবে চাকরির বিজ্ঞপ্তি
ধাপ ১ঃ সর্বপ্রথম এই প্রসেসটি যদি আপনি মোবাইল ফোনের মাধ্যমে করতে চান সে ক্ষেত্রে আপনি আপনার মোবাইল ফোনের গুগল ক্রোম ব্রাউজার অথবা অন্যান্য ব্রাউজার ওপেন করার পর কর্নার সেটিং এ গিয়ে “Desktop site” অপশনটি অন করে নিন আর যদি আপনার বাড়িতে কম্পিউটার থাকে তাহলে কোন অপশন অন করা লাগবে না।
তো প্রথমে আপনাকে মোবাইল অথবা কম্পিউটারে ব্রাউজারে সার্চ অপশনে গিয়ে টাইপ করতে হবে “bsp brta” লিখে সার্চ করবেন তারপর প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি আসবে সেটিতে ঢুকবেন।
ধাপ ২ঃ তো দ্বিতীয় স্টেপ হচ্ছে ওয়েবসাইটে ঢোকার পর আপনার যদি কোন অ্যাকাউন্ট না খোলা থাকে তাহলে কন্যারে একটি “নিবন্ধন” লিখা অপশন দেখতে পাবেন ওইখানে ক্লিক করে একটি ফরম দেখতে পাবেন সেখানে আপনার ভোটের আইডি কার্ড অনুযায়ী নাম, জন্ম তারিখ সবকিছু
ভোটের আইডি কার্ড অনুযায়ী বসিয়ে একটি ফোন নাম্বার অথবা ইমেইল এবং একটি পাসওয়ার্ড নির্বাচন করে নিচে “নিবন্ধন করুন” অপশনে ক্লিক করবেন তাহলে আপনার অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যাবে।
ধাপ ৩ঃ তৃতীয় স্টেপ হচ্ছে প্রথমেই যে “নিবন্ধন” অপশন এ ক্লিক করেছেন তার পাশে “প্রবেশ করুন” লেখা আছে অপশনে ক্লিক করুন এবং আপনি যেই ইমেইল বা ফোন নাম্বার দিয়ে একাউন্ট খুলেছেন সেই ইমেইল বা ফোন নাম্বার পাসওয়ার্ড দিয়ে “login” অপশনে ক্লিক করুন। আপনাদের বোঝার সুবিধার্থে নিচে একটি সুবিধা হল
ধাপ ৪ঃ লগইন করার পর একটি নতুন পেজে যাবেন তারপর অনেক ধরনের সেবা দেখতে পাবেন।আমরা যেহেতু মটর গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম যাচাই করব সেজন্য “মোটরযানের তথ্য” লেখা আছে ওইখানে ক্লিক করবেন তারপর নিচে “মোটরযান সংযুক্ত করুন” লেখা আছে ওইখানে ক্লিক করবেন তারপর একটি ফর্ম দেখতে পাবেন।
ধাপ ৫ঃ ফর্ম কিছু তথ্য চাইবে সেই তথ্যগুলো সঠিকভাবে পূরণ করবেন এবং রেজিস্ট্রেশন নাম্বার এর শেষের ৪টি সংখ্যা অর্থাৎ আপনি ধরুন একটি মোটরসাইকেলের নাম্বার দিয়ে দেখতে চাচ্ছেন যে এই মোটরসাইকেলটি কার নামে রেজিস্ট্রেশন করার আছে।
সেই ক্ষেত্রে আপনি যে মোটরসাইকেলের রেজিস্ট্রেশন টা দেখতে চাচ্ছেন সেই মোটরসাইকেলের নাম্বারের শেষের ৪টি সংখ্যা বসিয়ে দিবেন খালি ঘরে।
ধাপ ৬ঃ উৎপাদনের বছর অর্থাৎ হচ্ছে যে ওই গাড়িটির যে সাল মডেল টা কোন সালে আসলে আসছে সেই সালটা দিতে হবে তো এই সালটি আপনি গাড়ির ট্যাক্স টোকেন কাগজে রয়েছে সেটিতে পেয়ে যাবেন।তারপরে ফাঁকা ঘরগুলো রয়েছে সেগুলি সঠিক তথ্য দিয়ে পূরণ করতে হবে
তারপরে নিচে “অনুসন্ধান” লেখা রয়েছে ওই অপশনে ক্লিক করতে হবে তাহলে আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম খুব সহজেই দেখতে পারবেন এই হল গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম যাচাই করার নিয়ম বাংলাদেশ।
বিআরটিএ গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম
পুরাতন মোটরসাইকেল কিনবেন অথবা একটি গাড়ি কিনবেন এখন এই সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি বা মোটরসাইকেলটি ক্রয় করার পূর্বে কিন্তু অবশ্যই আপনার উচিত এই গাড়িটি কার নামে রয়েছে গাড়িটিতে কোন মামলা রয়েছে কিনা এই বিষয়গুলো যাচাই করে নেওয়া
এখন আপনারা অনেকেই বলবেন আমি ডকুমেন্ট দেখেইতো গাড়িটি কিনব এখানে আর দ্বিতীয়বার কিভাবে যাচাই করব আপনি চাইলে এই কাজটি মাত্র ২ মিনিটে আপনার মোবাইল ফোন দিয়ে পড়ে ফেলতে পারেন।
আপনার মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আপনি অনলাইন থেকে যাচাই করতে পারেন যেই গাড়িটি আপনি ক্রয় করতে যাচ্ছেন সেটার প্রকৃত মালিক কে কার নামে রেজিস্ট্রেশন করা এবং এই গাড়িটিতে কোন মামলা রয়েছে কিনা কিভাবে আপনারা কাজটি করতে পারেন এই আর্টিকালি সেটি দেখানো হবে চলুন তাহলে বেশি দেরি না করে বিআরটিএ গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম জেনে নেওয়া যাক।
১ ধাপঃ প্রথমে আপনার মোবাইল ফোন থেকে আপনার “google chrome” ব্রাউজারে চলে যাবেন তারপর সার্চ বারে গিয়ে টাইপ করবেন “bsp.brta.gov.bd” তারপর প্রথমে যে ওয়েবসাইটটি দেখতে পাবেন সেটিতে ঢুকবেন।
২ ধাপঃ আপনার যদি একাউন্ট না খোলা থাকে তাহলে আপনার ভোটের আইডি কার্ডের নাম জন্ম তারিখ ফোন নাম্বার ইমেইল দিয়ে সেখানে একটি অ্যাকাউন্ট খুলে ফেলুন।
৩ ধাপঃ অ্যাকাউন্ট করা হয়ে গেলে ইউজার নেম পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করে নিবেন একাউন্টে লগইন হয়ে গেলে আপনাদের সামনে এরকমই থাকে চলে আসবে এইখানে আপনি “মোটরযান তথ্য” রয়েছে এটাতে প্রেস করবেন এবং এইখানে দেখবেন কোন তথ্য পাওয়া যায়নি এরকমটি লেখা আসতে পারে আপনি এখান থেকে “মোটরযান সংযুক্ত করুন” এটাতে ক্লিক করবেন।
৪ ধাপঃ তারপর আপনি দেখতে পারবেন ওইখানে আপনাকে মোটরযানের কিছু তথ্য দিতে বলা হচ্ছে। আপনি শুরুতেই যেটা দিবেন সেটা হচ্ছে আপনার মোটরযানের রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের শেষের ৪ সংখ্যা তারমানে আপনার যে রেজিস্ট্রেশন রয়েছে নাম্বার প্লেটের ভিতরে সে রেজিস্ট্রেশন নাম্বারের শেষের ৪ সংখ্যাটা ওইখানে বসাবেন।
আরো পড়ুনঃ দুবাই ভিসার আজকের খবর
৫ ধাপঃ তারপর এখানে গাড়িটির উৎপাদনের বছর দিবেন এখানে চেস নাম্বার এবং ইঞ্জিন নাম্বারটি দিয়ে দিবেন সকল তথ্য সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে গেলে আপনি এখান থেকে “অনুসন্ধানে” ক্লিক করবেন অনুসন্ধানে ক্লিক করলে দেখতে পারবেন আপনার মোটরযানের তথ্যটি চলে আসবে। যেই গাড়িটি কিনতে চাচ্ছেন সেই গাড়ির প্রকৃত মালিকের নাম আপনি দেখতে পাবেন।
৬ ধাপঃ এবার এই গাড়িটিতে কোন মামলার হয়েছে কিনা এটা যাচাই করার জন্য এই “সংযুক্ত করুন” এটাতে ক্লিক করবেন “সংযুক্ত করুন” এ ক্লিক করলে দেখতে পারবেন এটা সংযুক্ত হয়ে যাবে এবার আপনি আবারও “মোটরযান তথ্য” ওটাতে ক্লিক করবেন
ওটাতে ক্লিক করলে আপনি দেখতে পারবেন পারবেন নিচে সেই গাড়ির তথ্যটি চলে আসছে আপনি এটাকে একটু ডান দিকে টান দিবেন এবং এইখানে দেখতে পাবেন মামলার তথ্য লেখা রয়েছে আপনি দেখুন লেখাতে ক্লিক করবেন।
৭ ধাপঃ এবার আপনি দেখতে পারবেন এখানে কিছুক্ষণ সময় সার্চিং করবে এখানে সার্চিং পড়া পর্যন্ত আপনার অপেক্ষা করবেন অনেক সময় এখানে ৪ থেকে ৫ মিনিট সময় লাগে সুতরাং ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন
তাহলেই দেখতে পারবেন যে এই গাড়িটিতে কোন মামলা রয়েছে কিনা যদি কোন মামলা থাকে তাহলে সেটা দেখাবে এবং আপনি দেখতে পারবেন কত টাকার মামলা খেয়েছে জরিমানা কত কি ডকুমেন্টস ইউজ করা হয়েছে এগুলো সকল কিছু আপনি এখানে দেখতে পারবেন।
অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক বাংলাদেশ
আগে আমাদেরকে যে কোন গাড়ির কাগজ চেক করতে যেতে হতো বিআরটিএ অফিসে কিন্তু বর্তমান সময়ে এখন আর গাড়ির কাগজ চেক করার জন্য বিআরটিএ অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। আপনি পুরাতন গাড়ি কিনেন কিংবা নতুন গাড়ি কিনেন আপনি চাইলে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি দিয়েই অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করে নিতে পারবেন।
অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক বাংলাদেশ করার জন্য প্রথমে আপনাকে বিআরটিএ যে অফিসিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে সেটিতে প্রবেশ করতে হবে তারপর সেখানে রেজিস্ট্রেশন করে একটি একাউন্ট তৈরি করতে হবে তাছাড়া আপনি অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করতে পারবেন না। এরপরে আপনার গাড়ির নাম্বার অথবা রেজিস্ট্রেশন নাম্বার লাগবে।
এগুলা যদি আপনার কাছে থেকে থাকে তাহলে আপনি খুব সহজেই অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করে নিতে পারবেন। কোন পুরাতন গাড়ি কেনার আগে অবশ্যই আপনার উচিত গাড়ির কাগজটি ঠিক আছে কিনা সেটা যাচাই করে নেওয়া কারণ বর্তমানে অনেকেই চোরাই গাড়ি বিক্রি করছে তাই আপনি যদি প্রতারিত না হতে চান তাহলে অনলাইনে গাড়ি নাম্বার দিয়ে গাড়ির কাগজ যাচাই করে নিন।
আপনি যদি পুরাতন গাড়ি কিনেন তাহলে শুধু গাড়ির মালিকের নাম এবং কাগজ চেক করলেই হবে না বরং গাড়ির নাম্বার দিয়ে সেই গাড়িটির নামে কয়টি মামলা রয়েছে সেটিও চেক করা খুবই জরুরী। কারণ আপনি যদি না জেনে একটি গাড়ি কিনেন পরবর্তী যদি সেই গাড়িতে মামলা থাকে তাহলে বিভিন্ন ঝামেলায় পড়তে পারেন তাই আগেই সতর্ক হওয়া ভালো।
গাড়ির নাম্বার প্লেট যাচাই
অনেকে আছেন যারা নতুন গাড়ি বা পুরাতন গাড়ি কেনার পর গাড়ির নাম্বার প্লেট যাচাই করতে চান এবং অনলাইনে গাড়ির নাম্বার চেক করতে চান তাদের জন্য ইতিমধ্যেই গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ উক্ত আলোচনায় বিস্তারিত জানিয়ে দিয়েছি সেই একই নিয়মে আপনি আপনার গাড়ির নাম্বার প্লেট যাচাই করতে পারবেন খুব সহজে।
অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক
আপনি যদি অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করতে চান তাহলে আর বিআরটিএ অফিসে গিয়ে গাড়ির কাগজ চেক করা লাগবে না এখন আপনি চাইলে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ চেক করার মাধ্যমে খুব সহজেই অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করে নিতে পারবেন। এছাড়া আপনি যদি এসএমএস এর মাধ্যমে গাড়ির কাগজ চেক করতে চান তাহলে নিচের নিয়ম গুলি ফলো করুন।
আপনি যদি আপনার গাড়ির কাগজের সকল ইনফরমেশন জানতে চান তাহলে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি দিয়ে প্রথমে মেসেজ করার অপশনে প্রবেশ করুন। তারপর সেখানে গিয়ে টাইপ করুন DL <Space> Reference Number তারপর 26969 নাম্বারে আপনার মেসেজ লিখাটি সেন্ড করে দিন।
মেসেজ পাঠানোর ৫ থেকে ১০ মিনিট পর আপনার মোবাইলে আরেকটি মেসেজ আসবে এবং সেই মেসেজের মাধ্যমে আপনার গাড়ির সকল ইনফরমেশন এবং কাগজপত্রের তথ্য লেখা থাকবে যার মাধ্যমে আপনি অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক না করে অফলাইনেও গাড়ির কাগজ চেক করে নিতে পারবেন খুব সহজেই।
মেসেজ টাইপ করার উদাহরণঃ DL DM 23278m643
আপনি যদি চান এইভাবে আপনি অনলাইনে ওয়েবসাইট ভিজিট না করে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি দিয়ে মেসেজ করে গাড়ির সকল কাগজপত্রের তথ্য জেনে নিতে পারবেন। এই 26969 নাম্বারে মেসেজ পাঠানোর পর আপনাকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে মাঝেমধ্যে মেসেজ ব্যাক আসতে অনেক সময় লাগে তাই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করবেন।
গাড়ির কাগজ চেক করার সফটওয়্যার
গাড়ির কাগজ চেক করার জন্য নির্দিষ্ট কোন অফিসিয়াল সফটওয়্যার এখন পর্যন্ত রিলিজ হয়নি তবে আন অফিসিয়াল সফটওয়্যার রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি গাড়ির কাগজ চেক করতে পারবেন এছাড়া বিআরটিএ অফিশিয়াল ওয়েবসাইট রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি আপনার গাড়ির নাম্বার দিয়ে গাড়ির কাগজপত্র খুব সহজেই বাড়িতে বসে যাচাই করতে পারবেন যা ইতিমধ্যে আপনাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি কিভাবে গাড়ি অথবা মোটরসাইকেলের কাগজ চেক করবেন কোন সফটওয়্যার ছাড়াই।
গাড়ির কাগজ চেক করার সফটওয়্যার এর নাম হচ্ছে CarInfo যেটা আপনারা প্লে স্টোরে সম্পূর্ণ ফ্রিতে পেয়ে যাবেন। আপনি চাইলে এই সফটওয়্যারটি আপনার অ্যান্ড্রয়েড মোবাইলে সম্পূর্ণ ফ্রিতে ব্যবহার করে আপনার গাড়ির তথ্য এবং RTO তথ্য জানতে পারবেন। এছাড়া আপনি এই সফটওয়্যার এর মাধ্যমে আপনার গাড়ির নামে বীমা করতে পারবেন।
এছাড়া আপনি চাইলে এই গাড়ির কাগজ চেক করার সফটওয়্যার মাধ্যমে আপনার গাড়িটি বিক্রি করতে পারবেন অর্থাৎ সেই সফটওয়্যারের মধ্যে আপনার গাড়ির বিজ্ঞাপন দিয়ে খুব সহজেই বিক্রি করে দিতে পারবেন। এছাড়া এই সপ্তাহের মাধ্যমে আপনার পুরাতন গাড়ি বিক্রি করে নতুন গাড়ি কিনতে পারবেন এর পাশাপাশি আপনি গাড়ি চালানোও চেক করতে পারবেন।
আপনাদেরকে আগেই বলেছি গাড়ির কাগজ চেক করার জন্য অফিশিয়াল কোন সফটওয়্যার এখনো বের হয়নি তাই আপনি যদি আপনার গাড়ির কাগজের তথ্য সংগ্রহ করতে চান তাহলে আপনাকে BRTA এর অফিসিয়াল ওয়েবসাইট প্রবেশ করতে হবে।
গাড়ির নাম্বার দিয়ে ফিটনেস চেক
দিন দিন গাড়ি যেন মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যাচ্ছে এর বিপুল পরিমাণে ট্যাক্স দিতে অনেকেই হিমশিম খাচ্ছেন। গত এক দশকে গাড়ির ট্যাক্স বেড়েছে ৮ থেকে ২৫ গুন। একটি তথ্যে দেখা গেছে ২০০৯ থেকে ২০১০ অর্থবছরে ১৫০০ সিসির একটা গাড়ির আয়কর ছিল মাত্র ৩ হাজার টাকা সেখানে এটি বর্তমান সময়ে এসে দাঁড়িয়েছে ২৫ হাজারে আগের তুলনায় ব্যয় বেড়েছে প্রায় ৮ গুনেরও বেশি।
অন্যদিকে ২০১০ সালে ২৮০০ সিসি বা এর উপরে একটি গাড়ির আয়কর ছিল মাত্র ৮ হাজার টাকা যার ব্যয় এখন দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা। আর চলতি অর্থবছরে এ ধরনের সর্বোচ্চ সিসির গাড়ি অর্থাৎ ৩৫০০ সিসির উপরে যে সমস্ত গাড়ি আছে সে সমস্ত গাড়ির মালিকদের গুনতে হবে দুই লক্ষ টাকা।
গাড়ি কেনার সময় বিপুল পরিমাণে আমদানি শুল্ক সহ অন্যান্য করা পরিশোধ করার পর এভাবে প্রতিবছর কর বৃদ্ধি পেতে এখন এটি অসহনীয় পর্যায়ে এসে দাঁড়িয়েছে। শুধু যে এখানেই শেষ তা নয় কিন্তু এর সঙ্গে রয়েছে এর সঙ্গে রয়েছে
- বিআরটিসি নিবন্ধন ফি
- সার্ভিস চার্জ
- ট্যাক্স টোকেন
- নবায়ন ফি
- ফিটনেস সনদ নবায়ন ফি
এর বাইরে আবার রিকন্ডিশন গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে বাড়তি ট্রান্সফার ফি নেওয়া হচ্ছে যা একপ্রকার নিয়ম বহিীভূত মনে করা হয়েছে। গাড়ি কেনার সময় অনেকে প্রতারণা শিকার হন বিশেষ করে সেকেন্ড হ্যান্ড বা পুরানো গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে এই ঝুকিটা সবথেকে বেশি এই সমস্যা সমাধানের জন্য বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক একটি সার্ভিস পোর্টাল ব্যবহার করে অনেক অংশ ঝুঁকিমুক্ত হতে পারেন।
এক্ষেত্রে আপনি যখন একটা রিকন্ডিশন বা সেকেন্ড হ্যান্ড গাড়ি কিনতে যাবেন তখন ওই গাড়ির নাম্বার প্লেটটির নাম্বার ব্যবহার করেই আপনি খুব সহজেই গাড়ির মালিকানা, গাড়ি ট্যাক্স টোকেন, ফিটনেস সবকিছু যাচাই করে নিতে পারবেন। তো চলুন কিভাবে গাড়ির নাম্বার দিয়ে ফিটনেস চেক করবেন সেই পদ্ধতি জেনে নেওয়া যাক।
- প্রথমে আপনার হাতে থাকা মোবাইল ফোনটি দিয়ে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করে গুগলে গিয়ে সার্চ বারে BRTA লিখে সার্চ করুন। তারপর BSP Fee Calculator লেখা অপশনে প্রবেশ করবেন। তারপর আপনার ব্রাউজারটি ডেক্সটপ মোড করে নিবেন।
- বিআরটিএ ওয়েবসাইটে প্রবেশ করার পর ” নিবন্ধিত মোটরযানের ফি ” নামে একটি অপশন পাবেন সেখানে ক্লিক করে প্রবেশ করবেন।
- তারপর আপনার সামনে একটি নতুন ইন্টারফেস হবে সেখানে তিনটি খালিঘর দেখতে পাবেন। প্রথম ” রেজিস্ট্রেশন নাম্বার ” খালিঘরটিতে আপনার গাড়ির নাম্বার প্লেটের নাম্বারটি সেখানে বসিয়ে দিন।
- তারপর দ্বিতীয় ” ফি সমূহ ” লিখা খালিঘরটিতে সিলেট করে অনেকগুলো অপশন আসবে সেখান থেকে Fitness সিলেট করবেন যেহেতু আপনি গাড়ির নাম্বার দিয়ে ফিটনেস চেক করতে চাচ্ছেন তাই।
- তারপর ” সিকিউরিটি কোড ” অপশনে ভালোভাবে দেখেছি সিকিউরিটি কোডটি ” এখানে সিকিউরিটি কোড প্রবেশ করুন” লেখা খালি ঘটতে সিকিউরিটি কোডটি বসিয়ে দিন।
- তারপর সর্বশেষে ” ক্যালকুলেট ” অপশনে ক্লিক করলেই আপনার গাড়ির নাম্বার দিয়ে ফিটনেস চেক করার কাজ শেষ তারপর আপনি আপনার ফিটনেস এর সকল ইনফরমেশন দেখতে পারবেন।
- আর যদি আপনি দ্বিতীয় ” ফি সমূহ ” লিখা খালিঘরটিতে Tranfer of Ownership সিলেট করে ” ক্যালকুলেট ” অপশনে ক্লিক করতেন তাহলে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ যাচাই করে নিতে পারতেন অর্থাৎ কার নামে গাড়িটি রয়েছে।
গাড়ির কাগজ করতে কত টাকা লাগে
বিআরটিএ ওয়েবসাইটে গিয়ে আপনার গাড়ির অথবা মোটর গাড়ির সিসি এবং ওজন দিয়ে সাবমিট করলেই দেখতে পারবেন আপনার কত টাকা লাগবে কাগজ করতে এবং আপনাদের ধারণা দেওয়ার জন্য বাইকের কাগজ করতে কত টাকা লাগতে পারে তা নিচে দেওয়া হল।
- ১০০ সিসি এবং ৯০ কেজির নিচে ওজনের মটর গাড়ির ১০ বছর মেয়াদে কাগজ করার জন্য ১২৩৯০ টাকা লাগে।
- ১০০ সিসি এবং ৯০ কেজির উপরে ওজনের মোটর গাড়ির ১০ বছরের মেয়াদে ১৭৩৯০ টাকা লাগে।
- ৯০ কেজি ওজন এবং ১০০ থেকে ১৫০ সিসি এর মধ্যে মোটর গাড়ির ১০ বছরে মেয়াদে কাগজ করতে ১৩৭৯০ টাকা লাগে।
- ৯০ কেজি বেশি এবং ১০০ থেকে ১৫০ সিসির মধ্যে মোটর গাড়ির ১০ বছর মেয়াদে কাগজ করতে ১৮৭৯০ টাকা লাগে। প্রত্যেকটা মোটর গাড়ি র কাগজ করার জন্য ১৫% ভ্যাট প্রযোজ্য।
গাড়ির নাম্বার চেক অনলাইন
এই আর্টিকেলে উপরের অংশে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ চেক করার নিয়ম জেনে নিয়ে আপনি খুব সহজেই গাড়ির নাম্বার প্লেট দিয়ে যাচাই করে নিতে পারবেন সেই গাড়ির মালিক কে এবং গাড়ির রেজিস্ট্রেশন নাম্বার সহ বিভিন্ন তথ্য জানতে পারবেন। তো চলুন এখন গাড়ির নাম্বার চেক অনলাইন সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
এখন আমরা জানবো যে আপনি নতুন একটি গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন অথবা পুরাতন একটি গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন এখন যার থেকে গাড়ি কিনতে চাচ্ছেন উনি বলতেছে কাগজপত্র ঠিক আছে আমি চাচ্ছেন যে আপনার কাগজপত্র ঠিক আছে কিনা অনলাইনে চেক করতে।
অথবা আপনি নতুন গাড়ি কিনেছেন কাউকে দিয়ে কাগজপত্র করিয়েছেন বাট ওই কাগজপত্রগুলো আপনাকে সঠিক দিয়েছে কিনা সেগুলো আসলে এপ্রুভ কাগজপত্র কিনা সেগুলা কিভাবে চেক করবেন অর্থাৎ কিভাবে অনলাইনে গাড়ির নাম্বার চেক করবেন।
ধাপ ১ঃ প্রথমে আপনার মোবাইল অথবা ডেস্কটপ এর মাধ্যমে যেকোনো একটি ব্রাউজার ওপেন করে bsp.brta.gov.bd ওয়েবসাইটে প্রবেশ করবেন। তারপর নিচে স্ক্রল করে একটি লেখা দেখতে পাবেন ” পোর্টাল থেকে সেবা পেতে এখানে ক্লিক করুন ” সেখানে প্রবেশ করবেন।
আরো পড়ুনঃ বোয়েসেল বিদেশি নতুন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি
ধাপ ২ঃ তারপর আপনার সামনে আরেকটি নতুন ইন্টারপ্রেস আসবে। আপনি যদি ওয়েবসাইটে নতুন ইউজার হয়ে থাকেন তাহলে রেজিস্ট্রেশন করে নিতে হবে আর যদি আপনার আগে থেকেই রেজিস্ট্রেশন করা থাকে তাহলে লগইন করে নিতে হবে।
ধাপ ৩ঃ আপনার অ্যাকাউন্টটি লগইন করার পর “সাইট বার” থেকে “মোটরযানের তথ্য” অপশন এ ক্লিক করবেন তারপর আবারো “মোটরযান যুক্ত করুন” অপশনে ক্লিক করবেন।
ধাপ ৪ঃ তারপর আপনার সামনে আরেকটি নতুন পেজ ওপেন হবে সেখানে আপনারা মোট চারটি খালিঘর দেখতে পাবেন অর্থাৎ চারটি ছক দেখতে পাবেন। সেখানে প্রথম “রেজিস্ট্রেশন নাম্বার” লিখা খালিঘরটিতে আপনার রেজিস্ট্রেশন নাম্বারটি বসিয়ে দিন।
ধাপ ৫ঃ তারপর দ্বিতীয় ” উৎপাদনের বছর” লেখা খালিঘরটিতে আপনার রেজিস্ট্রেশন সনদপত্র দেখে উৎপাদনের তারিখটি দিয়ে দিবেন। তারপর তৃতীয় ” চ্যাসিস নম্বর” লেখা খালিঘরটিতে আপনার চ্যাসিস নম্বরটি বসিয়ে দিবেন।
ধাপ ৬ঃ তারপর শেষের ” ইঞ্জিন নম্বর” লেখা ঘরটিতে আপনার গাড়ির ইঞ্জিন নাম্বারটি বসিয়ে ” অনুসন্ধান ” অপশনে ক্লিক করলেই মালিকের নামসহ সবকিছু শো করবে।
ধাপ ৭ঃ আর যদি “অনুসন্ধানে” ক্লিক করার পর কোন কিছুই না আসে তাহলে বুঝবেন গাড়িটা অনলাইনে আছে এবং গাড়ির কাগজপত্র ঠিক আছে। তো তো এইভাবে আপনি যে কোন গাড়ির নাম্বার চেক অনলাইন করতে পারবেন।
গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বিষয়ে জিজ্ঞাসা বা প্রশ্ন (FAQ)
প্রশ্নঃ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন করতে কত টাকা লাগে?
উত্তরঃ গাড়ির রেজিস্ট্রেশন চার্জ বাবদ ৫০০ টাকা প্রয়োজন পড়ে এবং আপনি যদি নাম্বার প্লেট লাগান তাহলে ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা লাগবে এক্সট্রা।
প্রশ্নঃ ১০০০ সিসির গাড়ির ট্যাক্স কত?
উত্তরঃ আপনি ১০০০ সিসির গাড়ি কিনুন কিংবা ১৩০০ সিসির কিনুন আপনাকে মিনিমাম ২৫ হাজার টাকা ট্যাক্স দিতে হবে।
প্রশ্নঃ বাংলাদেশে কত সিসির বাইক পাওয়া যায়?
উত্তরঃ বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মোটরসাইকেলের সীমা ২৫০ সিসি থেকে ৫০০ সিসি পর্যন্ত।
লেখকের শেষ কথা
আপনি যদি পুরাতন গাড়ি অথবা বাইক কিনেন তাহলে খুব সহজে বাড়িতে বসে অনলাইনে বিআরটিএ অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে গিয়ে সঠিক ইনফরমেশন দিয়ে ফর্মটি ফিলাপ করলেই দেখতে পাবেন গাড়ির মালিকের নাম এবং গাড়িতে কয়টি মামলা রয়েছে সবকিছু দেখতে পাবেন।
এবং আপনি যদি মোবাইল দিয়ে অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করেন তাহলে প্রথমে যেই ব্রাউজার দিয়ে গাড়ির কাগজ চেক করবেন সেই ব্রাউজারটি Desktop mode করে নিবেন তাহলে আপনার বুঝতে এবং চেক করতে সুবিধা হবে। আর যদি আপনি কম্পিউটারের মাধ্যমে চেক করেন তাহলে Desktop mode করা লাগবে না সরাসরি আপনি অনলাইনে গাড়ির কাগজ চেক করতে পারবেন।
আজকের এই আর্টিকালে আপনাদের সাথে গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম বাংলাদেশ এবং বিআরটিএ গাড়ির কাগজ চেক করার নিয়ম জানিয়েছি এর পাশাপাশি গাড়ির কাগজ করতে কত টাকা লাগে সেটাও আপনাদেরকে জানিয়েছি আশা করি আপনি সবকিছু বুঝতে পেরেছেন।
যদি গাড়ির নাম্বার দিয়ে মালিকের নাম যাচাই করতে আপনার কোন অসুবিধা বা প্রশ্ন থেকে থাকে এই আর্টিকেল সম্পর্কিত তাহলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন আমরা আপনাদেরকে সাহায্য করবো। বিভিন্ন রকম তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটি প্রতিনিয়ত ভিজিট করতে পারেন ধন্যবাদ।