একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় তা জানুন

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় ও দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে একজন ছাত্র ও তার পরিবারের অভিভাবক মন্ডলীকে জানা উচিত। একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এই আর্টিকেলে তা নিয়ে আলোচনা করেছি। আপনারা যদি না জেনে থাকেন তাহলে চলুন জেনে নেই একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়।
একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়
আমাদের জীবনকে সফল ও সর্বোচ্চ জায়গায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ছাত্র জীবনে ভালো হতে হব। তাই আমাদের সকলকেই একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এবং ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী। 

ভূমিকা

প্রিয় পাঠক আমরা সকলেই জানি জীবনে কিছু করার জন্য শিক্ষার অনেক অবদান রয়েছে। জীবনে আমাদেরকে বড় হতে হলে আমাদেরকে ছাত্র জীবনে ভালো হতে হবে মেধাবী হতে হবে। আমরা যদি ছাত্র জীবন থেকে ভালো না হতে পারি তাহলে আমরা আমাদের জীবনে কোনদিন কোন উন্নতি করতে পারব না। এমনকি দেশ ও দেশের মানুষ জনকে বিশ্বের কাছে উন্নতির শিখরে নিয়ে যেতে পারবো না। এবং নিজেকে সমাজের কাছে সম্মানীয় ও মর্যাদাবান ব্যক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারবো না।

আরো পড়ুনঃ ফ্রোজেন কোলাজেন ওষুধ এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

ছাত্র জীবনে সকলেরই মাথার ব্রেন সমান হয় না কেউ ভালো হয় কেউ খারাপ হয়। সে ভালো হয়েছে অতিরিক্ত তার চেষ্টার ফলে এজন্য যে ছাত্র ছাত্র জীবনে দুর্বল হয়ে পড়ে তাকে সর্বদা পরিশ্রমী ও চেষ্টা করে যেতে হয়। তাই একজন দুর্বল উন্নতি কিভাবে করা যায় এবং ভালো ছাত্র হওয়ার উপায় গুলো জানতে হবে। 

আমরা যদি একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এই সম্পর্কে জানতে পারি তাহলে আমরা অবশ্যই ছাত্রজীবনে উন্নতি লাভ করব। তাই চলুন কথা না বাড়িয়ে জেনে নেই একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়।

পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয়

আমাদের শিক্ষক, অভিভাবক এবং ভালো শিক্ষার্থীদের উচিত পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং তাদেরকে কিভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে হয় সেই বিষয়ে অনেকে জানে না। এজন্য পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে আজ আমরা বিস্তারিত আলোচনা করেছি। চলুন সেই সম্পর্কে জেনে নেই।

  • পিছিয়ে পড়া ছাত্রদের সঙ্গে সব সময় ভালো ব্যবহার এবং তাদের উৎসাহিত দেওয়া।
  • তাদের সঙ্গে সর্বদা বন্ধুত্ব আচার-আচরণ করা।
  • ভাল ছাত্রদল উচিত তাদের সঙ্গে প্রতিদিনের পড়াশোনা নিয়ে কিছু মূল তথ্য আলোচনা করা।
  • তাদের সমস্যা দেখা দিলে সেই সমস্যার সমাধান করে দেওয়া।
  • পিছিয়ে পড়া ছাত্রছাত্রীরা কোন সমস্যা হলে বা না বুঝতে পারলে হাসাহাসি করা যাবে না। এর ফলে তাদের মন আরো খারাপ ও তাদের ভালো হওয়ার উৎসাহিত কমে যাবে।
  • পিছিয়ে পড়া ছাত্রদের প্রতি শিক্ষককে বিশেষভাবে নজর দিতে হবে।
  • কোনোভাবে তাদের ছোট করে দেখা যাবে না।
  • তাদের ভুল হলে বকাঝকা না করে ভালোভাবে বুঝিয়ে বলা।
  • তাদের ওপরে চাপ সৃষ্টি না করা।

দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয়

একজন দুর্বল শিক্ষার্থীকে ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার জন্য তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। এবং অনেক কিছু মেনে চলতে হয়। এগুলো বিষয় হয়তো অনেকেই জানেন না যে দুর্বল শিক্ষার্থী হলে ভালো শিক্ষার্থী হওয়ার করণীয় কি। সেজন্য আজ আমরা দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি। চলুন দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় কি সেই সম্পর্কে জেনে নিন।

দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করনীয় হচ্ছে,

  • দুর্বল শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন ক্লাসে উপস্থিত থাকতে হবে।
  • সবার সামনের দিকে বসতে হবে। যাতে করে শিক্ষকের সকল কথা বুঝতে পারে।
  • শিক্ষক যে কথা বলবে সেই কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা।
  • শিক্ষকের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করা।
  • কোন বিষয় না বুঝতে পারলে লজ্জা না করে শিক্ষকের সঙ্গে পরামর্শ করে তা বুঝে নেওয়া।
  • ক্লাসের ভালো ছাত্রদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করা।
  • প্রতিদিনের পড়া প্রতিদিন করে আসতে হবে।
আশা করা যায় আপনারা এতক্ষণে নিশ্চয়ই দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় কাজগুলো কি তা ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। আপনারা যদি আমাদের আর্টিকেলের থেকে দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য করণীয় সম্পর্কে জেনে আপনি একজন ভালো শিক্ষার্থী হতে পারবেন। এবং আপনার দ্বারা অন্য দুর্বল শিক্ষার্থী ভালো হতে পারবেন।

একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়

ছাত্র জীবনে সকলেই সমান নয় কেউ হয়তো দুর্বল আবার কেউ হয়তো সবল। কারো মুখস্ত করার ক্ষমতা বেশি আবার কারো কম। তবে আমাদের সকলকেই জীবনে উন্নতি করার জন্য এবং জীবনে সফলতা অর্জনের জন্য ছাত্র জীবন থেকে ভালো হতে হবে। এবং ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে হবে। কিন্তু আপনারা অনেকেই জানিনা যে, একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়। আমাদের ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে হলে আমাদেরকে এই বিষয়ে অবশ্যই দক্ষতা ও জ্ঞান থাকতে হবে। তাহলে চলুন কথা না বাড়িয়ে দেরি না করে একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় সে সম্পর্কে জেনে নেই।

দুর্বল ছাত্রকে একাএকি ভাবে শেখানোঃ অন্যান্য বুদ্ধিমতা ছাত্রদের মতো তাদেরকে শিখালে তারা বুঝতে পারবে না। এজন্য তাদেরকে একা একি ভাবে শেখাতে হবে।

পড়ালেখায় উৎসাহিত করাঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের এবং শিক্ষকদের সর্বদা পড়ালেখাতে তাদের উৎসাহিত করতে হবে। যাতে করে তারা পড়ালেখার ক্ষেত্রে আরও বেশি উৎসাহ পায়।

বাড়ির কাজ ঠিকমতো করাঃ একজন দুর্বল ছাত্র যখন তার শিক্ষক ক্লাসে বাড়িতে কোন কাজ দেবে তখন সেই কাজ সময় মত এবং সঠিকভাবে করা।

মনোযোগ সহ পড়ালেখায় যোগদান করতে হবেঃ দুর্বল ছাত্রকে অবশ্যই তার পড়ালেখার প্রতি যোগদান করতে হবে। যাতে করে সে ভালো হতে পারে এবং ভালো ছাত্রদেরকে অনুসরণ করতে হবে।

ছাত্রজীবনের লক্ষ্য ঠিক রাখাঃ একজন ছাত্রকে তার ছাত্র জীবনের লক্ষ্য ঠিক রাখা। যাতে করে সে তার সঠিক ভাবে পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে। এবং ছাত্র জীবনের সফল হতে পারে।

প্রতিদিনের রুটিন তৈরি করতে হবেঃ ছাত্র জীবনে ভালো করতে হলে তাকে সব সময় রুটিন ফলো করে চলতে হবে। সেজন্য তাকে আগে তার পড়ালেখার জন্য একটি রুটিন তৈরি করতে হবে। এবং সেই রুটিন মেনে পড়ালেখা সঠিকভাবে চালিয়ে যেতে হবে।

দুর্বল ছাত্রকে পজেটিভ থাকতে হবেঃ প্রতিটি ছাত্রকে পড়ালেখার পাশাপাশি তার স্কুলের প্রতি তার একটি ভালো আকর্ষণীয় মনোভাব এবং স্কুল প্রেম গড়ে তুলতে হবে।

শিক্ষকের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করাঃ প্রতিটি ছাদের উচিত তার শিক্ষকের সঙ্গে সর্বদা ভালো আচার-আচরণ করা। এর ফলে শিক্ষক তার প্রতি আরো মনোযোগী হবে এবং তার পড়ালেখার বিষয়ে তাকে সর্বদা সাহায্য সহযোগিতা করবে।

সহপাঠীদের সঙ্গে ভালো আচরণ করাঃ একজন দুর্বল ছাত্রকে তার সকল সহপাঠীর সঙ্গে ভালো ব্যবহার ও আচরণ তৈরি করা। এর কারণ আপনি আপনার সহপাঠীর সাথে থেকে অনেক কিছু শিক্ষা লাভ করতে পারেন এবং তাদের কাছ থেকে সাহায্য ও সহযোগিতা নিতে পারেন।

ভালো ছাত্রদের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করাঃ ভালো ছাত্রের সঙ্গে বন্ধুত্ব তৈরি করলে তাদের কাছ থেকে সবসময় সাহায্য ও সহযোগিতা করা। ক্লাসে কোন বিষয় বুঝতে না পারলে তাদের কাছ থেকে তখন বুঝে নিতে পারবেন।

দুর্বল ছাত্রদের জন্য প্রাইভেট বা টিউশনে নেওয়াঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এর ভেতরে এই টিপসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কেননা স্কুলের কোন বিষয়ে বুঝতে না পারলে তখন সে তার প্রাইভেট ও টিউশনি শিক্ষকের দ্বারা তা ভালোভাবে বুঝিয়ে নিতে পারে।

ক্লাসের সব সময় ভদ্রতা বজায় রাখাঃ ক্লাসে যদি আপনি সর্বদা ভদ্রতা বজায় রাখেন তাহলে শিক্ষক তাকে বেশি ভালোবাসে। এবং শিক্ষক পড়ালেখার ক্ষেত্রে তার প্রতিবেশী গুরুত্ব দেয়।

নিয়মিত স্কুলে আসাঃ একজন ভাল ছাত্র হওয়ার জন্য আপনাকে নিয়মিত স্কুলে আসতে হবে। একজন দুর্বল ছাত্র যদি নিয়মিত স্কুলে আসে তাহলে সে ভালো ছাত্রের পরিণত হয়ে যায়।

ক্লাসের পড়া বুঝতে না পারলে শিক্ষকের কাছ থেকে বুঝে নেওয়াঃ পড়া যদি আপনি বুঝতে না পারেন। তাহলে লজ্জা না করে তা বুঝিয়ে নেওয়া। 

বাড়িতে কতক্ষণ পড়বেন তার রুটিন তৈরি করাঃ একজন দুর্বল ছাত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সে তার বাড়িতে কত ঘন্টা পড়ালেখা করে তার একটি রুটিন তৈরি করা।

শিক্ষকের প্রশ্নের উত্তর দেওয়াঃ ক্লাসে যখন শিক্ষক কোন প্রশ্ন করে থাকে তখন ভয়ভীতি না করে সকল প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করা।

মিনিটে সময় ব্যবস্থাপনাঃ পড়াশোনার আগে আমরা সকলেই চিন্তা ভাবনা করি যে কোন সাবজেক্ট আগে পড়বো এবং কোন সাবজেক্ট পরে করব। এই চিন্তা ভাবনা না করা। কারণ এই চিন্তা ভাবনা করতে করতে আমাদের অনেক সময় কেটে যায় তখন আমরা আর পড়তে চাই না।

ফেসবুকে আসক্ত না হওয়াঃ দেখা যায় অনেক ছাত্রছাত্রী পড়ালেখার সময় ফেসবুকে ঢুকে অনেক বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে আড্ডা দেয়। এর ফলে ছাত্রছাত্রীরা দুর্বল হয়ে পড়ে।

অতিরিক্ত মোবাইল টিপাটিপি না করাঃ ছাত্রছাত্রীদের দুর্বল হয়ে পড়ার ক্ষেত্রে আরেকটি ভূমিকা রাখে এই মোবাইল। এজন্য আমরা মোবাইল বেশি টিপবো না।

মোবাইলের প্রতি আসক্ত হবো নাঃ অনেক ছাত্রছাত্রী মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে তাদের পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে সব সময় মোবাইল নিয়ে পড়ে থাকে। এভাবে চলতে থাকলে সে দুর্বল ছাত্রের পরিণত হয়ে পড়বে।

হিসাব করে পড়ালেখা করাঃ পড়ালেখা বৃদ্ধির জন্য আপনাকে সময় মেনে পড়ালেখা করতে হবে। এবং ধীরে ধীরে আগের সময় থেকে পরবর্তীতে সময় বাড়াতে হবে।

শরীরের যত্ন নিতে হবেঃ পড়ালেখার পাশাপাশি নিজের শরীরের খেয়াল রাখতে হবে। শরীর জড়িত ঠিক না থাকে তাহলে আপনার পড়ালেখা করতে মন চাইবে না। তখন আপনি দুর্বল সাথে পরিণত হবেন।

অতিরিক্ত চাপ আসলে তা সামাল দেওয়াঃ অনেক সময় দেখা যায় যে পরীক্ষার জন্য এছাড়াও পরীক্ষাতে ভালো রেজাল্টের জন্য শিক্ষক আমাদের ওপরে পড়াশুনার অনেক চাপ দিয়ে দেয়। সেই পরিস্থিতিতে আমাদের সেই চাপগুলোকে সামাল দেওয়া শিখতে হবে।

কখন আপনি পড়ালেখা করবেন তা ঠিক করাঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ আপনাকে প্রতিদিনের জন্য একটি সময় বেছে নিতে হবে যে সময়টিতে আপনি ভালোভাবে পড়ালেখা করতে পারেন।

একজন দুর্বল ছাত্র কতক্ষণ পড়বেঃ একজন দুর্বল ছাত্রকে ভালো হওয়ার জন্য তাকে বাড়িতে প্রায় চার থেকে পাঁচ ঘন্টা সময় দিতে হবে পড়ালেখার প্রতি। তাহলে সে একজন ভালো ছাত্র হতে পারবে।

হোমওয়ার্ক সঠিকভাবে করাঃ শিক্ষক যখন দুর্বল ছাত্রকে বাড়ির কাজ দেবে সেই কাজটি যথাযথভাবে পালন করা। তাহলে শিক্ষক তার প্রতি খুশি হবে এবং তার প্রতি পড়ালেখার আরো নজর বাড়িয়ে দেবে।

নিজের প্রতি সর্বদা ভরসা রাখাঃ ছোটবেলা থেকে আমরা অনেকে বৃহৎ অংককে ভয় করতাম। এবং অঙ্গের প্রতি আতঙ্কিত হয়ে থাকতাম সেগুলোর প্রতি ভয়ভীতি কাটিয়ে সর্বদা নিজের প্রতি ভরসা রাখা। যে আমি সকল কাজে পারবো।

মোবাইলকে দূরে সরিয়ে দেওয়াঃ একজন দুর্বল ছাত্রের ভালো হওয়ার প্রথম উপায় হচ্ছে মোবাইলকে দূরে সরিয়ে দেওয়া। কারণ আমরা মোবাইলকে যতটা সময় দিয়ে থাকি সেই সময়টা পড়ালেখাতে দিলে আমরা একজন ভালো ছাত্রের পরিণত হতে পারব।

আরো পড়ুনঃ সিরাম ব্যবহারের নিয়ম ও সিরাম ব্যবহারের অপকারিতা

পড়ালেখার জন্য নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করাঃ আপনি যে সময়ে পড়েন না কেন আপনার একটি পড়ালেখার জন্য নির্দিষ্ট স্থান তৈরি করতে হবে। এরপরে আপনার পড়ালেখার মনোযোগ ও আকর্ষণ আরো বেড়ে যাবে।

বিশ্রাম নিয়ে পড়াঃ আমরা যখন একটানা পড়ে যায় তখন আমাদের মস্তিষ্কের মধ্যে সঠিকভাবে সেই কথাটি গেটে যায় না। সেই কথা আমাদের স্মৃতিশক্তিতে আটকে রাখার জন্য পড়ার মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা বিশ্রাম নিয়ে পড়তে হবে। তাহলে সেই পড়াটি আমাদের স্মৃতিশক্তিতে অনেক বেশি স্থায়ী পাবে।

নিজে শিখে অন্যকে শিক্ষা দিতে হবেঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এ উপায়ের মধ্যে অন্যকে শিক্ষা দেওয়া খুবই একটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। কারণ আপনি যখন নিজে শিখে অন্যকে শিক্ষা দিবেন তখন সেই বিষয়টি আপনার মাথার ভেতরে সুন্দরভাবে গেঁথে যাবে।

পড়ার মাঝে গুরুত্বপূর্ণ শব্দগুলোকে হাইলাইট করঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উচিত যখন সে পড়বে সে সময় যদি তার চোখের সামনে কোন গুরুত্বপূর্ণ শব্দ দেখা দেয়। তখন সঙ্গে সঙ্গে তাকে সেই গুরুত্বপূর্ণ শব্দকে হাইলাইট করে রাখতে হবে। তাহলে সেই গুরুত্বপূর্ণ শব্দটি তার সব সময়ের জন্য মনে থাকবে।

অনুশীলন বা চর্চা বাড়াতে হবেঃ ছাত্র জীবনে মনে রাখার সবথেকে ভালো একটি গুরুত্বপূর্ণ টিপস হচ্ছে অনুশীলন বা চর্চা করা। আপনি সেই জিনিসটি মনে রাখার জন্য যদি ওই জিনিসটি বারবার চর্চা করেন তাহলে সেই জিনিসটি আপনার মনের ভেতরে এবং মস্তিষ্কের ভেতরে সম্পূর্ণভাবে গেঁথে যাবে। তখন আপনি দুর্বল ছাত্র থেকে আস্তে আস্তে উন্নতি করতে পারবেন।

বেশি করে লিখতে হবেঃ একবার লিখলে তিনবার পড়া সমান হয়ে যায়। যে পড়াটি আমরা লেখালেখি করব সেই পড়াটি আমাদের মনের ভেতরে গেঁথে যাবে সেজন্য আমরা পড়ার পাশাপাশি সেই পড়াটি লেখালেখি করব।

নোট করে রাখাঃ টিচার যখন ক্লাসে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করবে তখন সেগুলো আমাদেরকে নোট করে রাখতে হবে। তাহলে পরবর্তীতে সে কথাগুলো আমরা রিপিট করতে পারবো। এবং ক্লাসে ভালো ছাত্র হতে পারবো।

গল্পের মাধ্যমে শিক্ষা লাভ করাঃ আমরা সকলেই জীবনী গল্প শুনতে ভালবাসি এজন্য আমরা সকলেই পড়ালেখাকে গল্প হিসেবে তুলে ধরে তা আমরা আমাদের মাথায় ধরে রাখবো।

শব্দ করে পড়তে হবেঃ আমরা অনেকেই রয়েছে যারা মনে মনে পড়তে ভালোবাসি কিন্তু সেই পড়াটি আমাদের বেশিক্ষণ দেব মনে থাকে না। যখন আমরা জোরে জোরে শব্দ করে পড়বো তখন সেই শব্দটি আমাদের স্মৃতিশক্তিতে আঘাত খেয়ে সেই কথাটি মনে রাখতে সাহায্য করে।

পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ শরীরকে সুস্থ এবং শীত রাখার জন্য এবং পড়ালেখার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য আমাদেরকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে। নিয়মিত প্রেমের ফলে আমাদের শরীরটি তথ্য থাকে এবং সকল কাজকামের প্রতি আমাদের মনোযোগ বসে।

গ্রুপ ভাবে স্টাডি করে পড়াঃ আমরা যখন বন্ধুবান্ধবরা সকলে মিলে আড্ডা দেই তখন তাদের সকলের কথা আমাদের মনে কেটে যায় এবং স্মৃতিশক্তিতে খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায়। সেজন্য আমরা যদি গ্রুপ তৈরি করে পড়াশোনা করি তাহলে সেই বন্ধুদের পড়ার সকল কথাগুলো আমাদের স্মৃতিতে গেছে যাবে। তাই আমরা সকলেই চেষ্টা করবো গ্রুপভাবে স্টাডি করে পড়ালেখা করা।

অনলাইনের সাহায্য নিয়ে পড়ালেখা করাঃ পড়ালেখার মাঝেমধ্যে আমাদের অনেক সমস্যা হতে পারে সে ক্ষেত্রে আমরা অনলাইন কে ব্যবহার করে আমাদের সমস্যাগুলো সমাধান করতে পারি।

দক্ষ শিক্ষকের কাছে টিউশনি নেওয়াঃ আপনার বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং দুর্বল ছাত্রদের অনেক জায়গায় বসতে সমস্যা হয়। সেজন্য তাকে ভালোভাবে বোঝার জন্য একজন দক্ষ টিচারের দরকার হয়। কারণ একজন দক্ষ টিচারি পারে দুর্বল শিক্ষার্থীদের সমস্যার সমাধান ভালোভাবে করতে।

হোম টিউশনি নেওয়াঃ দুর্বল শিক্ষার্থীদের ভালোভাবে পড়ার জন্য তাকে হোম টিউশনি যেতে দিবে কারণ দুর্বল শিক্ষার্থীরা অন্য সকল ভালো শিক্ষার্থীদের মতো বুঝতে পারে না। এজন্য তাকে একাকি ভাবে পড়তে হবে। তাই তার হোম টিউশনি খুবই জরুরী।

নিয়মিত পড়াঃ অনেক ফাঁকিবাজ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে যারা দীর্ঘদিন যাবৎ পড়াশোনা করে না কিন্তু পরীক্ষার সময় আসলে বইয়ের পাতা এক হয় না পরীক্ষার আগের দিন ছাড়া তারা পড়তে বসে না। কিন্তু তাদের এটা ঠিক নয় তাদের নিয়মিত অল্প অল্প করে পড়তে হবে। তাহলে সেই পড়াগুলো তাদের মাথার ভিতরে গেছে থাকবে।

সাবজেক্ট ভাগ করে নেওয়াঃ একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায় এর ভেতরে খুবই উন্নতমানের টিপস হচ্ছে যে প্রতিদিনের জন্য সাবজেক্ট গুলি ভাগ করে নেওয়া। আপনি যদি প্রতিদিন সকল সাবজেক্ট একসঙ্গে পড়েন তাহলে কোন সাবজেক্টের পড়া আপনার  ঠিকমতো মনে থাকবে না। এজন্য প্রতিদিন সকল সাবজেক্ট না পড়ে সাবজেক্ট গুলো ভাগ করে নেওয়া

সঠিক সময় নির্বাচন করাঃ পড়ালেখার জন্য আপনাকে একটি নির্দিষ্ট সময় বেছে নিতে হবে। যে সময়গুলোতে আপনি পড়ালেখা মনোযোগ সহকারে পড়তে পারবেন।

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়াঃ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পরে আপনার মন শান্তি এবং প্রফুল্ল থাকবে। এবং সকল কাজকামের ক্ষেত্রে আপনার মন উৎসাহিত হবে। এবং আপনি যখন ফজরের নামাজ পড়বেন তারপরে সকল হওয়া পর্যন্ত যে সময়টুকু পাবেন। সে সময়টুকুতে আপনি যদি পড়েন তাহলে আপনার স্মৃতিশক্তিতে এসে পড়াগুলো ভালোভাবে গেটে থাকবে। কারণ এই সময় আমাদের মস্তিষ্ক ঠান্ডা ও আরামে থাকে।

বেশি বেশি পড়তে হবেঃ আপনাকে ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য বেশি বেশি করে পড়তে হবে তাহলে আপনি ভালো ছাত্র হওয়ার দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।

ঘুমকে কন্ট্রোলে রাখতে হবেঃ জীবনে ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য আপনাকে আপনার ঘুমকে কন্ট্রোল দিতে হবে। তাহলে আপনি জীবনে দক্ষতার সঙ্গে একজন ভাল ছাত্র হতে পারবেন।

সাহায্য নেওয়াঃ ছাত্র জীবনে ভালো কিছু করতে হলে আপনাকে অন্যের অবশ্যই সাহায্য নিতে হবে। কারণ অন্যের কাছ থেকে অনেক বিষয় আপনি জানতে পারবেন। এবং সেই বিষয়গুলি শিক্ষা অর্জন করে একজন ভালো ছাত্র হতে পারবেন।

আদর্শবান ছাত্র হতে হবেঃ ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য আপনাকে একজন ভদ্র ও আদর্শবান ছাত্র হতে হবে। এটি আপনার ছাত্রজীবনী উন্নতি করার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।

মনোযোগী হওয়াঃ ছাত্র জীবনে উন্নতি করার জন্য আপনাকে সকল বিষয়ে মনোযোগ দিতে হবে। এবং ভালো বিষয়গুলোকে স্মৃতিতে ধরে রাখতে হবে এবং খারাপ বিষয়গুলোকে বর্জন করে ফেলতে হবে।

ছাত্র জীবনে ভালো বন্ধুত্ব করাঃ ভালো শিক্ষা দিলে সঙ্গে সব সময় ভালো বন্ধুত্ব করে রাখা। কারণ একজন দুর্বল ছাত্রের সকল বিষয়ে বুঝতে অনেক সমস্যা হতে পারে। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকের পরপরই সেই ভালো ছাত্র আপনাকে ওই সমস্যাগুলো আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারবে।

খারাপ বন্ধুত্ব ত্যাগ করাঃ ভালো ছাত্র এবং ছাত্র জীবনে উন্নতি করার জন্য আপনাকে খারাপ বন্ধু ত্যাগ করতে হবে। কারণ তারা আপনাকে কখনো ভালো হতে দেবে না। এবং তাদের সঙ্গে মিশে আপনি সর্বদা সময় নষ্ট করে ফেলবেন এবং আপনি পড়ার জন্য কোন সময় দিতে পারবেন না তখন আপনি কোনভাবেই ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারবেন না।

দোয়া করাঃ সকল বিষয়ে বড় এবং উন্নতি করার জন্য সবার আগে আমাদেরকে সৃষ্টিকর্তার কাছে দোয়া করতে হয়। এজন্য আপনি যদি আপনার ছাত্র জীবনকে উন্নতিময় করতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার কাছে আগে দোয়া বা প্রার্থনা করতে হবে।

পড়ালেখার প্রতি অবহেলা করা যাবে নাঃ আপনি যদি কাজের প্রতি অবহেলা করেন তাহলে আপনি কখনোই ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারবেন না।

পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ ও ভালোবাসা বোধ দেখাতে হবেঃ পড়ালেখার সময় বিরক্ত হওয়া যাবেনা। ধৈর্য সহকারে পড়ালেখা করতে হবে। এবং সর্বদা পড়ালেখার প্রতি ভালোবাসা দেখাতে হবে তাহলে দুর্বল ছাত্র থেকে আপনি ভালো ছাত্র হওয়ার জন্য উন্নতি করতে পারবেন।

আরো পড়ুনঃ বিলাসী গল্পের অনুধাবন প্রশ্নের উত্তর

চিন্তা শক্তি বাড়ানোঃ যে ছাত্র চিন্তাশক্তি যত বেশি সে ছাত্রের উন্নতির অগ্রগতি ততই বেশি। এজন্য আমাদেরকে ছাত্র জীবনে পড়ালেখার ক্ষেত্রে চিন্তাশক্তি বাড়াতে হবে।

শরীরচর্চাঃ পড়ালেখাতে মনোযোগ বসানোর জন্য সবার আগে আমাদের শরীরকে ঠিক রাখতে হবে। আমাদের শরীর ঠিক না থাকলে আমাদের কোথাও মনোযোগ বসেনা তখন আমরা পড়ালেখাতে আমাদের মনোযোগ কোন ভাবে বসাতে পারবো না। সেজন্য আমাদেরকে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে।

অতিরিক্ত চাপ কমানোঃ ছাত্র জীবনে আমাদের অতিরিক্ত চাপ যদি থাকে তাহলে আমরা পড়ালেখার প্রতি কখনো মনোযোগ বসাতে পারবো না। সেজন্য আমাদেরকে অতিরিক্ত চাপ থেকে দূরে থাকতে হবে এবং অতিরিক্ত চাপ কমাতে হবে।

আত্মনির্ভরশীল হওয়াঃ নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে যে আপনি ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারবেন। নিজেকে কখনো ছোট মনে করা যাবে না। সব সময় বিশ্বাস রাখতে হবে যে আপনি একদিন না একদিন দুর্বল ছাত্র থেকে আপনার ছাত্র জীবনকে উন্নতি করে তুলতে পারবেন। এই বিশ্বাস রাখতে পারলে আপনি ছাত্র জীবনে উন্নতি করতে পারবেন।

উপসংহার

আপনারা নিশ্চয়ই এতক্ষণে বুঝতে পেরেছেন যে একজন দুর্বল ছাত্রের উন্নতি কিভাবে করা যায়। একজন দুর্বল ছাত্রকে তার জীবনে উন্নতি করতে হলে অনেক পথ অবলম্বন করে চলতে হয়। তাহলে সে জীবনে উন্নতি করতে পারবে এবং সফলতার শিখরে পৌঁছাতে পারবে। আপনারা যদি একজন দুর্বল সাথে উন্নতি কিভাবে করা যায় এ সম্পর্কে আরো বিস্তারিত জানতে চান তাহলে আপনারা অবশ্যই আমাদের কমেন্ট বক্সে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে রাখবেন। তাহলে আমরা চেষ্টা করব আপনার সমস্যার সমাধানটি খুব শীঘ্রই করে দেওয়া।

আর কথা না বাড়িয়ে এখানেই শেষ করছি দেখা হবে পরবর্তী কোনো আর্টিকেলে। ততক্ষণ সবাই ভালো থাকবেন এবং আমাদের জন্য দোয়া করবেন যাতে আমরা আপনাদের জন্য এই রকমের সকল মানসম্মত কনটেন্ট নিয়ে হাজির হতে পারে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url