ডিএনএ টেস্ট করে কিভাবে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করা যায় জানুন

আজকের এই আর্টিকেল ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব। অনেকেই আছেন যারা ডিএনএ টেস্ট কি এবং ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায় ও ডিএনএ টেস্ট কেন করে ইত্যাদি সকল খুঁটিনাটি বিষয় জানতে পারবেন আজকের এই আর্টিকেলে।
ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায়
অনেকে আছেন যারা পিতৃপরিচয় যাচাই করার জন্য ডিএনএ টেস্ট করতে চান কিন্তু ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সেটা জানেন না। চলুন তাহলে বেশি কথা না বলে ডিএনএ টেস্ট সংক্রান্ত সকল খুঁটিনাটি জেনে নেওয়া যাক। 

ডিএনএ টেস্ট কি

একটি ডিএনএ টেস্ট হল এক ধরনের জেনেটিক টেস্ট যা কোন বংশগত অস্বাভাবিকতা মূল্যায়ন করতে বা আইনি ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে। এটি এমন এক ধরনের পরীক্ষা যা আপনার শরীরের জিন, ক্রোমোজোম বা প্রোটিনের পরিবর্তন শনাক্ত করতে পারে। আপনার রক্ত, ত্বক, চুল, টিস্যু বা অ্যামনিওটিক তরল জেনেটিক পরীক্ষা করার জন্য এটি ব্যবহার করা যেতে পারে। 


বিভিন্ন ধরনের ডিএনএ টেস্ট রয়েছে যার মধ্যে রয়েছেঃ
  • ওয়াই-ডিএনএ টেস্ট
  • অটোসোমাল ডিএনএ টেস্ট
  • মাইটোকন্ড্রিয়াল ডিএনএ টেস্ট
ডিএনএ পিতৃত্ব পরীক্ষার মাধ্যমে জৈবিক সম্পর্ক অর্থাৎ মা ও বাবার পরিচয় যাচাই করতে ডিএনএ টেস্ট ব্যবহার করা হয়ে থাকে অথবা একজন ব্যক্তির বংশ অনুমান করতে এটি ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এছাড়াও প্রাণী এবং গাছপালা ঠিক মানুষের মতোই সম্পর্ক বা বংশ নির্ধারণ করতে ডিএনএ পরীক্ষা করা যেতে পারে। আশা করি তাহলে ডিএনএ টেস্ট কি এবং ডিএনএ টেস্ট কেন করা হয় সে সম্পর্কে জানতে পেরেছেন। 

ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায়

জেনেটিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ডিএনএ টাইপিং এবং ডিএনএ প্রোফাইলিং সহ ডিএনএ টেস্টের জন্য অনেক ব্যবস্থা রয়েছে। একজন মানুষের ডিএনএ অন্যজনের সাথে ৯৯.৯% অভিন্ন। চুল, রক্ত, লালা ইত্যাদি সহ বিভিন্ন জিনিসের উপর ডিএনএ টেস্ট করা যেতে পারে এছাড়াও চুইংগাম থেকে টিস্যু অপসারণ করে, রেজার, টুথব্রাশ এবং অন্যান্য পণ্যে এক কথায় ব্যক্তিগত জিনিস ব্যবহার করে ডিএনএ টেস্ট করা যেতে পারে। 

ডিএনএ টেস্টের পদ্ধতিটি বেশ কঠিন বলা যেতে পারে। কেননা বাংলাদেশে এখনো সেই ভাবে ডিএনএ টেস্ট চালু করা হয়নি অর্থাৎ যে কেউ চাইলে ডিএনএ টেস্ট করতে পারবে না। কিছু কিছু ক্ষেত্রে পিতৃপরিচয় প্রমাণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়। 

তাই আপনি যদি আপনি যদি আইনি অথবা অন্য কারণে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে চান তবে আপনাকে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করার জন্য একটি সরকারি মেডিকেল সেন্টারে ডিএনএ টেস্ট করা উচিত। 


এছাড়াও এটি আপনি বাড়িতেও করতে পারেন তবে এটির জন্য আপনাকে একটি কিট ব্যবহার করতে হবে যা আপনি বিভিন্ন ফার্মেসি এবং অনলাইনে কিনতে পেয়ে যাবেন সেই কিট টা ব্যবহার করে আপনি ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় নিশ্চিত করতে পারেন।

ডিএনএ টেস্ট কেন করা হয়

একটি ডিএনএ পরীক্ষা হল এক ধরনের ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি যা আপনার জিন, ক্রোমোজোম বা প্রোটিনের পরিবর্তন খুঁজে পাই। চিকিৎসা ও আইনগত কারণে একজন ব্যক্তির পিতৃত্ব পরিচয় যাচাই করার জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে। 

এছাড়াও সন্দেহজনক পরিস্থিতির ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে। একজন ব্যক্তির পূর্বপুরুষ নির্ধারণ ও গর্ভাবস্থায় শিশুর জেনেটিক ব্যাধি পরীক্ষা করতে এবং অসুস্থতার জন্য ওষুধ নির্ধারণ করার জন্য ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে।

ডিএনএ টেস্ট কিভাবে করে?

অনেকেই জানেন না ডিএনএ টেস্ট কিভাবে করে। ডিএনএ টেস্ট করতে প্রথমে আপনার রক্ত বা মুখের লালা একটি পরীক্ষার কোটাতে সংগ্রহ করা হয় তারপর সেটিকে  ডিএনএ একটি ল্যাবে পরীক্ষা করা হয় তারপর আপনার ডিএনএ তথ্য অন্য মানুষজনের অথবা আত্মীয়-স্বজনের ডিএনএ এর তথ্য সাথে মিলানো হয়।

ডিএনএ টেস্ট খরচ কত?

ন্যাশনাল ডিএনএ প্রোফাইলিং ল্যাবরেটরি, মহিলা ও শিশু মন্ত্রনালয় এবং ঢাকা মেডিকেল কলেজে অবস্থিত যেকোন ধরণের ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে যার মধ্যে রয়েছে পিতৃত্ব পরিচয় যাচাই। ডিএনএ টেস্টের জন্য ৫ হাজার টাকা প্রয়োজন হবে এবং ফি দেওয়া লাগবে।


এবং বিভিন্ন আইন বা আদালতের অনুমতি নিয়ে ডিএনএ টেস্ট করাতে হবে। এবং আপনাকে আদালতে কিসের জন্য ডিএনএ টেস্ট করবেন তার প্রমাণ দেখাতে হবে। তারপর যদি অনুমতি পান তবে তারাই আপনাকে ব্যবস্থা করে দিবে।

ডিএনএ টেস্ট কত দিনের মধ্যে করতে হয়

ডিএনএ টেস্ট কত দিনের মধ্যে করতে হয় এটি আপনার পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে আপনি যদি বিভিন্ন আইনি ক্ষেত্রে ডিএনএ টেস্ট করাতে চান তাহলে এটি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে করাতে হবে এবং দ্রুত সেই ডিএনএ টেস্টের তথ্য ফরেনসিক ল্যাব পাঠাতে হবে। আপনি যদি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ডিএনএ টেস্ট করাতে না পারেন তাহলে আপনার ডিএনএ টেস্ট করে কোন লাভ হবে না।

ডিএনএ পরীক্ষা করতে কত দিন সময় লাগে?

রক্ত বা মুখের লালা মাধ্যমে ডিএনএ টেস্ট করা হয়ে থাকে এবং এই টেস্ট করতে ৮ থেকে ১০ দিন সময় লাগে। এছাড়াও একজন ব্যক্তির হাড় বা দাঁত থেকেও ডিএনএ টেস্ট করা যায় তবে এই টেস্ট করতে কমপক্ষে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ সময় লাগে। যদি এ ডিএনএ টেস্ট করে কোন তথ্য না মিলে তাহলে আবার পরীক্ষা করতে হয় এক কথায় বলতে গেলে এটি করতে দীর্ঘদিন সময় লাগে।

আমাদের শেষ কথা

আজকের এই আর্টিকেলে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে পিতৃপরিচয় কিভাবে নিশ্চিত করা যায় সে বিষয়ে বিস্তারিত আপনাদের সাথে আলোচনা করলাম এর পাশাপাশি ডিএনএ টেস্ট কি এবং ডিএনএ টেস্ট কত দিনের মধ্যে করতে ইত্যাদি আরো অনেক বিষয় আপনাদের সাথে বিস্তারিত আলোচনা করেছি।

আশা করি আপনি ডিএনএ টেস্ট সংক্রান্ত সকল কিছু বুঝতে পেরেছেন আর যদি না বুঝে থাকেন অথবা কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্ট করতে পারেন। এই আর্টিকেলটি যদি ভালো লেগে থাকে অবশ্যই অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রতিনিয়ত চোখ রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url