ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়, কারণ ও ঔষধের নাম জানুন

ছোট থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্কের একটি বিশেষ সমস্যা হচ্ছে ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়া। উঠতে বসতে চলতে ফিরতে মাঝেমধ্যে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে যাই যা অনেক বিরক্তিকর। এটি বেশিরভাগ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষদের হয়ে থাকে। আজকের এই আর্টিকেলে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়, কারণ ও ঔষধের নাম বিস্তারিত
আমাদের মধ্যে অনেক মানুষই আছেন যারা প্রস্রাবের সমস্যায় ভুগছেন কিন্তু লজ্জায় কাউকে বলতে পারেন না। আপনি যদি ফোটা ফোটা প্রস্রাব বের হওয়ার সমস্যাই ভুগে থাকেন তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি পড়লে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে জানতে পারবেন। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়গুলো সম্পর্কে।
পোস্ট সূচীপত্রঃ 

ভূমিকা

যাদের ফোঁটা ফোটা প্রস্রাবের সমস্যা রয়েছে তারাই একমাত্র বুঝে এটি কি বিরক্তিকর। চলতে ফিরতে উঠতে বসতে কখন যে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে যায় তা বোঝা যায় না। ঠিকমত পস্রাব করার পরেও মনে হয় যে ফোঁটা ফোটা প্রস্রাব বের হচ্ছে এবং নামাজের জন্য ওযু করার আগে প্রস্রাব করার পর যখন ওযু শেষ করে ফেলি তখন আবারো ফোঁটা ফোটা প্রস্রাব বের হয়ে যায় ফলে ওযুও নষ্ট হয়ে যায়।

এটি খুবই বিরক্তকর এই সমস্যার কারণে আমরা অনেকেই ঠিকমতো নামাজ আদায় করতে পারি না। এই ফোটা ফোটা প্রসাবের অনেক কারণ রয়েছে যা এই আর্টিকেলে আপনি জানতে পারবেন। চলুন তাহলে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

ফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব কেন হয়

পুরুষদের ক্ষেত্রে মূত্রথলির ঠিক নীচে মুত্রনালীকে ঘিরে প্রোস্টেট গ্রন্থি অবস্থান করে। প্রোস্টেট গ্রন্থির স্পার্ম বা শুক্রানুকে পুষ্টির জোগান দেয়। পুরুষদের বয়স যখন ৪০ থেকে ৫০ বার তার বেশি হয় তখন পুরুষদের শরীরে পুরুষ হরমোন অর্থাৎ টেস্টোস্টেরনের পরিমাণ কমতে থাকে। 
টেস্টোস্টেরন হরমোন পরিমাণ কমার ফলে প্রোস্টেট গ্রন্থিতে কোষের সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে যার দরুন প্রোস্টের আকার বৃদ্ধি পায়। প্রোস্টেট প্রস্তুতের আকার বারার ফলে মূত্রনালীতে চাপের সৃষ্টি হয়।  মূত্রনালীতে চাপের সৃষ্টি হওয়ার জন্য প্রসবের সময় এক বা একাধিক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি হওয়ার কারণে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে সেগুলি হলঃ 
  • বারবার প্রসাব পাওয়া।
  • প্রসাবের বেগ আটকে রাখা সম্ভব হয় না।
  • প্রসাবের গতিতে দুর্বলতা এবং মাঝপথে প্রসাব থেমে যাওয়া।
  • প্রসাব করার পরও কিছুটা প্রসাব থেকে যাওয়া মনে হওয়া।
  • প্রসব করার পর ফোটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া।
  • অনেক সময় প্রসাবের সাথে রক্ত আসতে পারে।
আপনার মধ্যে যদি এই সমস্যাগুলি থেকে থাকে তাহলে এর পিছনের কারণ হতে পারে প্রোস্টেট গ্রন্থির আকার বৃদ্ধি। এবং কিছু স্নায়ু ঘটিত রোগ রয়েছে যেগুলি থাকলে আপনার ফোটা ফোটা প্রসাব হতে পারে যেমনঃ পেরাপ্লেজিয়া, স্পানালী স্নায়ু। এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে জরায়ু স্থান ত্রুটি হয় সে ক্ষেত্রেও ফোটা ফোটা প্রসাব বের হতে পারে। এছাড়া ফোটা ফোটা প্রসাব পড়ার আরো কারণ রয়েছে যেগুলি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • প্রোস্টেট ক্যান্সার
  • অতিরিক্ত ওজন
  • ব্রেন টিউমার
  • স্ট্রোক
  • পারকিনসন
  • সন্তান প্রসব
  • গর্ভধারণ
  • জরায়ু ফেলে দেওয়া
  • ইউরিনারি ব্লাডার বা ইনফেকশন

ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায়

ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়া বয়স্কদের এটি একটি খুবই বিরক্তিকর সমস্যা। এই সমস্যাটি পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে। নারীদের ক্ষেত্রে মাসিক, জরায়ু ফেলে দেওয়া, গর্ভধারণ ইত্যাদি কারণে পেলভিক ফ্লোরের মাংসপেশী নিচের দিকে ঝুলে যেতে পারে অথবা দুর্বল হয়ে যেতে পারে ফলে ফোটা ফোটা প্রসাব হওয়ার সমস্যাটি দেখা দিতে পারে। 

এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট বড় হওয়া অথবা প্রোস্টেট এ ক্যান্সার হওয়ার কারণে ফোঁটা ফোটা প্রসাবের সমস্যা হতে পারে। আপনার যদি ফোটা ফোটা প্রসাবের সমস্যাই ভুগে থাকেন চিন্তার কোন কারণ নেই কিছু উপায় জানাবো যেগুলি অনুসরণ করলে এটা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন তাহলে ফোটা ফোটা প্রসাব বন্ধের উপায় গুলি জেনে নেওয়া যাক।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করাঃ ফোটা ফোটা প্রসাব হওয়া দূর করতে ব্যায়াম অত্যান্ত কার্যকরী। কিছু ব্যায়াম রয়েছে যেগুলো করলে এই ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। যেমনঃ শুয়ে থেকে পা দুইটা উঁচু করে ১০ মিনিট পর্যন্ত থাকুন এভাবে প্রতিদিন ১০ বার করে ৪ থেকে ৫ সপ্তাহ পর্যন্ত করলে দেখবেন ফোটা ফোটা প্রসাবের সমস্যা অনেকটাই কমে গেছে।
  • বদ অভ্যাস ত্যাগ করাঃ আমাদের মধ্যে অনেক মানুষই যারা নিয়মিত হস্তমৈথুন করে আর এই হস্তমৈথুন ফোটা ফোটা প্রস্রাব হওয়ার প্রধান কারণ। এছাড়া ধূমপান করাও এর মূল কারণ তাই যারা এসব বদঅভ্যেসে আসক্ত হয়ে আছেন তারা এইসব বদ অভ্যাস পরিত্যাগ করুন তাহলে দেখবেন ফোটা ফোটা প্রস্রাবের সমস্যা দূর গেছে।
  • আশযুক্ত খাবার খাওয়াঃ ফটো ফোটা প্রসাব দূর করতে আশযুক্ত খাবার খাওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। আশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে মৌসুমী, তিলের বীজ, ফলমূল, শাকসবজি, বাদাম, মিষ্টি কুমড়া ইত্যাদি। এই খাবারগুলো আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখলে ফোটা ফোটা প্রসাব দূর করতে অনেকটা সহায়তা করবে কারণ এই খাবারগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আশ আছে।
  • কাঁচা রসুনঃ প্রসাবের যাবতীয় সমস্যার সমাধান করতে রসুন অত্যন্ত কার্যকর। তাই আপনি যদি সকালবেলায় খালি পেটে রসুনের একটি কোষ চিবিয়ে ৭ দিন খেতে পারেন তাহলে অনেক উপকারিতা পাবেন।
  • নিয়মিত ডুমুর খাওয়াঃ ডুমুর ফল আমরা প্রায় সকলেই চিনি। এই ডুমুর ফল অনেকেই খাই আবার অনেকেই খাই না। তাই যাদের ফটো ফোটা প্রসাবের সমস্যা আছে তারা যদি প্রতিদিন কাঁচা ডুমুর রান্না করে অথবা কাঁচা চিবিয়ে খেতে পারেন তাহলে প্রসাব হওয়া সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।তবে রান্না করে খাওয়ার চাইতে কাঁচা চিবিয়ে খাওয়ার উপকারিতা বেশি।
  • বেশি বেশি পানি খাওয়াঃ বেশি বেশি পানি খান কারণ ফোঁটা ফোঁটা প্রসাবের সমস্যা ইনফেকশনের কারণে হতে পারে তাই আপনি যদি বেশি বেশি পানি খান তাহলে পানির মাধ্যমে ইনফেকশন দূর হয়ে যাবে। এছাড়া বেশি বেশি পানি খেলে মূত্রথলিতে বিভিন্ন রকম খারাপ ব্যাকটেরিয়া থাকলে তা বেরিয়ে যাবে।
  • ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখাঃ আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে তাহলে এটিও একটি বড় কারণ ফোঁটা ফোটা প্রসাবের। তাই ফোটা ফোটা প্রসব সমস্যা থেকে রেহাই পেতে ওজন নিয়ন্ত্রণ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং বেশি বেশি ব্যায়াম করুন যাতে মূত্রথলির মাংস পেশী শক্তিশালী হয়।
  • চিকিৎসা নেওয়াঃ এই সমস্যাটা যদি দীর্ঘদিন যাবত হয় তাহলে দ্রুত চিকিৎসা নিন। যেহেতু ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যাটি নির্দিষ্ট বয়সের পর থেকে বেশি হয় তাই এই সমস্যাটি নিয়ে কখনোই বাসাতে বসে থাকবেন না ভালো একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন।

ফোটা ফোটা প্রস্রাবে হোমিও চিকিৎসা

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা দূর করতে হোমিও চিকিৎসা কেমন কাজ করে এবং ওষুধ কি কি। ফোটা ফোটা প্রসাব সমস্যা দূর করতে হোমিও চিকিৎসা অনেক কার্যকরী।আপনি যদি হোমিও চিকিৎসা নেন এবং এই সমস্যাটা যদি একবার ভালো হয়ে যায় তাহলে আর কক্ষনো এই সমস্যার সম্মুখীন হবেন না এটাই হোমিও চিকিৎসার বিশেষ বৈশিষ্ট্য।
এই ফোঁটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমন ইউরিনারি ইনফেকশন, ইউরিনারি ব্লাডার এবং মূত্রথলী আশারতা কারণে এই সমস্যাটি হয়ে থাকে। আজকে আমি আপনাদের কিছু হোমিওপ্যাথি ওষুধ এর নাম জানাবো যেগুলি হোমিওপ্যাথি চিকিৎসকের পরামর্শে সেবন করলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে পারেন। চলুন তাহলে হোমিও ওষুধের নাম গুলি জেনে নেওয়া যাক।

১. Equisetum Hyemale 30 CH: এই ওষুধটি আপনারা যেকোনো হোমিওপ্যাথি ফার্মেসিতে পেয়ে যাবেন।যদি আপনার অসারে ফোঁটা ফোটা প্রসাব ধরে এবং বারবার প্রসাব হয় সে ক্ষেত্রে খুবই কার্যকারী একটি হোমিওপ্যাথি ওষুধ। এটি জিহ্বায় ৩ ফোঁটা করে দিয়ে দিনে তিনবার খাবেন এবং খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে খাবেন অথবা খাওয়ার ৩০ মিনিট পরে খাবেন।

২. Caustium 200 CH: এই ওষুধটিও ফোঁটা ফোটা প্রসাব সমস্যা দূর করতে অনেক ভালো কাজ করে। এই ওষুধটি সপ্তাহে তিনবার খেতে হবে একদিন গ্যাপ দিয়ে দিয়ে খেতে হবে অর্থাৎ আজ রাত্রে যদি ৩ ফোঁটা করে জিহ্বায় দিয়ে খান তাহলে কাল খাবেন না তারপরের দিন আবা খাবেন। এইভাবে প্রতিদিন রাতে একবার করে একদিন পরপর খাবেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

এইভাবে আপনি যদি এই হোমিও ওষুধ দুটি এক মাস খান তাহলে আপনার ফোটা ফোটা প্রসাব করা এবং ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ। তবে ওষুধটি খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন হোমিওপ্যাথি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

বাচ্চাদের ফোটা ফোটা প্রস্রাব কেন হয়

অনেক বাবা মায়েরা আছেন তারা বলে আমার ছোট বাচ্চা সব সময় তার প্রস্রাবের রাস্তার মুখ দিয়ে ফোটা ফোটা প্রসাব বের হতে থাকে এ কারণে কাপড় নষ্ট হয়ে যায় অর্থাৎ কাপড়টা সব সময় প্রসাব দিয়ে ভিজা থাকে এর কারণ কি। বাচ্চার ফোটা ফোটা প্রসাব বের হওয়া এটার পিছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে।

সাধারণত কারণ হচ্ছে বাচ্চা যদি জন্মগতভাবে কোন রোগ থাকে যেমনঃ বাচ্চার যদি প্রসাবের রাস্তায় জন্মগত ভাবে কোন পর্দার মতো জিনিস থাকে অথবা তার যদি নিউরোপ্যাথি বাধা হয় এছাড়া বাচ্চার যদি প্রসাবের রাস্তায় ইনফেকশন থাকে বা বাচ্চা যদি দীর্ঘ সময় ধরে প্রসাব আটকে রাখে এই কারণেও ফোটা ফোটা প্রসাব নিঃসরণ হতে পারে।

এবং বাচ্চার যদি কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা থাকে তাহলে ফোঁটা ফোটা প্রসাববের সমস্যা হতে পারে। তাই কোন বাচ্চার যদি এই সমস্যা গুলো থেকে থাকে তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আপনার বাচ্চাকে একজন ভালো চিকিৎসকে দেখান।

প্রস্রাব ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায়

আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যাদের প্রস্রাব ক্লিয়ার হয় না। কারো কারো প্রসব করতে গিয়ে মাঝপথে আটকে যাই অথবা প্রসাব হলুদ রঙের হয় এবং প্রসাব করার পর ফোঁটা ফোঁটা পোশাক বেরিয়ে যায়। আপনি যদি এই সকল সমস্যায় ভুগে থাকেন তাহলে নিচের প্রস্রাব ক্লিয়ার করার ঘরোয়া উপায় গুলো অনুসরণ করতে পারেন।
  • প্রতিদিন ব্যায়াম করাঃ ঘন ঘন প্রস্রাব এবং ফোটায় ফোটায় প্রসাব বের হওয়া এই সকল সমস্যা দূর করতে ব্যায়াম খুবই উপকারী। মূত্রথলির ব্যায়াম করলে তলপেটের মাংস পেশি শক্ত হয় এবং প্রসবের বেগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় তাই প্রস্রাবে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস করুন।
  • অভ্যাস পরিবর্তনঃ ঘুমাতে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘন্টা আগে তরল খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন। ক্যাফেইন, অ্যালকোহল এবং ধূমপান করার অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন। আপনার যদি ওজন বেশি থাকে তাহলে ওজন কমিয়ে ফেলুন এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে প্রস্রাব করুন।
  • ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াঃ বর্তমান সময়ে আমরা এখন একটু গা ব্যথা বা মাথাব্যথা করলেই বিভিন্ন রকম ওষুধ খেয়ে ফেলে এটা একদম উচিত নয়। বিভিন্ন ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া কারণেও প্রসাবের রং হলুদ অথবা গাঢ় হতে পারে। তাই প্রয়োজন ছাড়া বিভিন্ন রকম ওষুধ খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।
  • ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারঃ প্রস্রাবে যাবতীয় সমস্যা দূর করতে ভিটামিন সি এর তুলনা হয় না। তাই ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার বেশি বেশি খান যেমন কমলালেবু, টমেটো, পেয়ারা, পাকা পেঁপে, আলু এবং ব্রকোলি ইত্যাদি। এইসব খাবার যদি আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকায় রাখেন তাহলে দ্রুত প্রসাবের সমস্যা দূর হবে।
  • বেশি বেশি পানি পান করাঃ আমরা সবাই জানি যে পানির অপর নাম জীবন। তাই প্রসাবের সমস্যার ক্ষেত্রে পানির কোনো তুলনা হয় না। আপনি যদি প্রতিদিন ২ থেকে ২.৫ লিটার পানি পান করেন তাহলে দেখবেন আপনার প্রসাব ক্লিয়ার হবে এ পাশাপাশি আপনার শরীরও ভালো থাকবে।
  • আদা ও রসুনঃ প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় আদা এবং রসুনের গুরুত্ব অপরিসীম। আপনি যদি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এক কোষ কাঁচা রসুন চিবিয়ে খান তাহলে অনেক উপকারিতা পাবেন কারণ এই আদা এবং রসুন এ প্রচুর পরিমাণে এন্টি ব্যাকটেরিয়াল রয়েছে।
  • আখের রসঃ প্রস্রাব ক্লিয়ার করার অন্যতম উপায় হচ্ছে প্রতিদিন আখের রস খাওয়া। আপনি যদি প্রতিদিন এক গ্লাস করে আখের রস খান তাহলে আপনার প্রসাব ক্লিয়ার হবে এবং আপনার প্রসাবে যদি ইনফেকশন থেকে থাকে তাহলে সেটির বিরুদ্ধে লড়াই করবে এই আখের রস। এই আখের রসের অনেক উপকারিতা রয়েছে যা বলে শেষ করা যাবে না।
  • বেকিং সোডাঃ প্রসাবে ইনফেকশন হলেও প্রসাব ক্লিয়ার হয় না আর এই প্রসাবে ইনফেকশন দূর করতে বেকিং সোডা অত্যন্ত কার্যকারী। আপনি যদি কয়েকদিন ১ গ্লাস পানিতে ১ চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে খান তাহলে দ্রুত উপকারিতা পাবেন। তবে খুব বেশি বেকিং সোডা খেতে যাবেন না কারণ এতে ক্ষতিও রয়েছে।
  • পানীয় দ্রব্য কম খাওয়াঃ আপনি যদি অতিরিক্ত মাত্রায় চা,কফি এবং বিভিন্ন কোল্ড ড্রিংকস খান তাহলেও আপনার প্রসাবের রং গাঢ় হতে পারে তাই প্রসাব ক্লিয়ার করতে চাইলে অতিরিক্ত মাত্রায় পানীয় দ্রব্য খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোটা রক্ত আসার কারণ কি

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন প্রস্রাবের শেষে এক ফোঁটা করে রক্ত আশার কারণ সম্পর্কে। প্রস্রাবের শেষে এক ফোটা করে রক্ত আসার পিছনে অনেক কারণ রয়েছে। প্রাপ্তবয়স্ক সুস্থ নারীদের মাসিক চলাকালীন সময়ে প্রসাবের রাস্তা দিয়ে কিছু রক্ত কণিকা ঝরতে পারে এটা স্বাভাবিক।
তবে কোন শিশু, পুরুষ, বৃদ্ধ এবং যেকোন নারীর যদি প্রসাবের সঙ্গে ফোটা ফোটা রক্ত বের হয় সে ক্ষেত্রে মারাত্মক কোন রোগের কারণে হতে পারে। তাই প্রসাবের শেষে ফোটা ফোটা রক্ত বের হলে সময় নষ্ট না করে দ্রুত চিকিৎসা নেয়া উচিত। প্রস্রাবের শেষে ফোঁটা ফোটা রক্ত আসার কারণ গুলি নিচে উল্লেখ করা হলোঃ
  • রোগ ছাড়াও কিছু ওষুধ এবং খাবার রয়েছে যেগুলো খেলে প্রস্রাব রক্তের মতো রং লাল হতে পারে যেমনঃ বিটস, রিফাম্পিসিন এবং কিছু ভিটামিন।
  • মূত্রথলিতে যদি সংক্রমণ হয় সে ক্ষেত্রেও প্রসাবে রাস্তা দিয়ে রক্ত বের হতে পারে এবং প্রসাব করার সময় জ্বালাপোড়া করা ও দুর্গন্ধ ব্যথা, ইত্যাদি হতে পারে।
  • কিডনিতে যদি কোন সংক্রমণ হয় অথবা কিডনিতে যদি পাথর হয় তাহলেও প্রস্রাব করার পরে ফোটা ফোটা রক্ত আসতে পারে এবং কোমরের পিছে ব্যথা হতে পারে।
  • যাদের হাই প্রেসার আছে তাদের ক্ষেত্রেও প্রসাবে রাস্তা দিয়ে রক্ত পড়তে পারে।
  • প্রসাবের থলিতে যদি ইনফেকশন হয় তাহলেও প্রসবের করার পর ফোঁটা ফোটা রক্ত বের হতে পারে।
  • কোন ধরনের টিউমার সে কিডনিতে হোক অথবা মূত্রথলিতে হোক তাতেও রক্ত বের হতে পারে।
  • বয়স্কদের প্রসাবে রক্ত আসার প্রধান কারণ হচ্ছে প্রোস্টেট। প্রোস্টেট থেকে অনেক সময় রক্ত আসে এবং প্রোস্টেট এ যদি ক্যান্সার হয় সে ক্ষেত্রে রক্ত আসতে পারে।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে ফোটা ফোটা প্রস্রাব বন্ধের উপায় ও কারণ সম্পর্কে আপনাদের জানিয়েছি। আর্টিকেলে উল্লেখিত ঘরোয়া উপায় গুলি অনুসরণ করেও যদি আপনার সমস্যার সমাধান না হয় তাহলে আপনি একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। 

আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন। এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন। আর আপনার যদি কোন মতামত অথবা প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url