অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি জেনে নিন

বর্তমানে বিভিন্ন খাবারে ভেজালের কারণে আমাদের নানা রকম রোগ হচ্ছে আর এই রোগ থেকে বাঁচতে আমরা অনেক সময় অপারেশন করে থাকি এবং অপারেশন করার পর বিভিন্ন জটিলতায় ভুগে থাকি তার মধ্যে প্রধান সমস্যা হচ্ছে অপারেশনের ক্ষত জায়গায় ইনফেকশন হওয়া। এই পোস্টে অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি এবং অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত সে বিষয়ে আলোচনা করব।
অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি জেনে নিন
আপনি যদি না জেনে থাকেন অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি এবং অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত তাহলে আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন কেননা এই আর্টিকেলে অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি এবং অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত, অপারেশনের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয় ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব।
পোস্ট সূচিপত্রঃ 

ভূমিকা

বর্তমান সময়ে আমরা এখন বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হই আর এই রোগ থেকে জীবন বাঁচতে ওষুধ খেয়ে থাকি আর যদি ওষুধ খেয়েও ভালো না হয় তাহলে অপারেশনের সাহায্য নিয়ে থাকি তবে এই অপারেশন করার পর কারো কারো অপারেশনের ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয় আর এই ইনফেকশন খুবই মারাত্মক।  

তো আপনি যদি কোন অপারেশন করার পরিকল্পনা করে থাকেন অথবা কোন অপারেশন করেছেন তারপরে ইনফেকশন হয়েছে তাহলে চিন্তার কোন কারণ নেই আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন আজকের এই আর্টিকেলটি আপনি যদি পড়েন তাহলে অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি সে সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন।
এর পাশাপাশি আপনি জানতে পারবেন অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত, হার্নিয়া অপারেশনের পর করণীয় কি এবং অপারেশনের পর জ্বর হলে করণীয় কি এছাড়া অপারেশনের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয় ইত্যাদি। এ সকল সম্পর্কে জানতে হলে পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয়

অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করনীয় কি। ইনফেকশন হওয়া খুবই একটি সাধারণ সমস্যা তবে এটা অবহেলা করলে হতে পারে মারাত্মক সমস্যা। বিভিন্ন কারণে আমাদের ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হয়ে থাকে যেমনঃ রোগীর শরীরে যদি পুষ্টির অভাব থাকে যেটাকে আমরা বলি পুষ্টিহীনতা এবং রোগী যদি স্বাভাবিক ওজনের চাইতে অতিরিক্ত বেড়ে যায় অথবা কমে যায় তাহলেও ইনফেকশন হয়।

ডায়াবেটিসের কারণেও ইনফেকশন হতে পারে। ডায়াবেটিস একটি কমন রোগ বর্তমান সময় প্রচুর মানুষ এই রোগে ভুগে থাকে। এছাড়া রোগীর যদি জন্ডিস থাকে তাহলে ওই রোগীর ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। আরেকটি প্রধান কারণ হচ্ছে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হওয়া রোগীর যদি শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে তাহলেও ইনফেকশন হতে পারে।

এবার জেনে নেওয়া যাক অপারেশনের পর যদি ইনফেকশন হয় তাহলে কি করবেন। অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে আমরা অনেকেই চিন্তিত হয়ে যাই কারণ অপারেশনের পর যদি ইনফেকশন হয় তাহলে সেই জায়গা পচে যায় এমনকি ইনফেকশনের ক্ষতস্থানটি কেটেও ফেলা লাগে তাই অপারেশনের পর ক্ষতস্থান যত্ন নেওয়া খুবই প্রয়োজন।

যদি আপনার ইনফেকশন সামান্য হয় তাহলে প্রথমেই ইনফেকশন হওয়া ক্ষতস্থানটি পরিষ্কার পানি দিয়ে ধৌত করতে হবে তারপর একটি অ্যান্টিসেপটি দিয়ে আবারো ধুয়ে নিতে হবে তারপর ৪৮ ঘণ্টা মতো ক্ষতস্থানটি ঢেকে রাখতে হবে। এবং আপনার যদি ডায়াবেটিস থেকে থাকে তাহলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে তাহলে দ্রুত ক্ষতস্থানটি শুকাবে।

এছাড়া চেষ্টা করতে হবে ইনফেকশন হওয়া ক্ষতস্থানটি সব সময় পরিষ্কার রাখার কারণ যদি কোন ময়লা ধুলাবালি ক্ষতস্থানে পড়ে তাহলে ইনফেকশনের মাত্রা আরো বেড়ে যেতে পারে। আর যদি আপনার ইনফেকশনের মাত্রা বেশি হয় সে ক্ষেত্রে নিকটস্থ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে তাহলে আপনি এই ইনফেকশন থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত

অনেক রোগী এবং রোগীর গার্জেনরা জানতে চেয়ে থাকেন অপারেশন পর কি কি খাবার খাওয়া উচিত। আমাদের দেশের শত শত হসপিটাল বা ক্লিনিং রয়েছে এবং এসব হসপিটাল বা ক্লিনিকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকম অপারেশন করা হয়ে থাকে তার মধ্যে সবচেয়ে কমন যে অপারেশনগুলো হয়ে থাকে সেগুলো হলো সিজারিয়ান সেকশন বা সিজার, কিডনিতে পাথর অপারেশন, পিত্তথলির পাথর অপারেশন, হার্নিয়া অপারেশন ইত্যাদি।

অনেক রোগী আছেন যারা অপারেশনের পর টক জাতীয় ফল খেতে চান না তারা মনে করে টক জাতীয় ফল খেলে ক্ষতস্থান ভালো হতে দেরি হবে এবং ক্ষতস্থানে ইনফেকশন হবে এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল।কারণ টক জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, মিনারেলস এবং অন্যান্য ভিটামিন থাকে যা দ্রুত ক্ষত সারাতে সহায়তা করে।

এছাড়া অপারেশনের পর অনেক রোগী আছেন যারা দূর, ডিম খেতে চায় না তারা মনে করে দুধ, ডিম খেলে ক্ষতস্থানে পুঁজ সৃষ্টি হবে কিন্তু এটাও একটি সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ ডিম, দুধ প্রোটিনের খুব ভালো উৎস আর এই প্রোটিন শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়তা করে। অপারেশনের পর একজন রোগীর যেসব খাবার খাওয়া উচিত সেগুলি হলঃ দুধ-ডিম, মাছ-মাংস, শাকসবজি ইত্যাদি।

এই খাবারগুলি যদি অপারেশনের পর একজন রোগী খায় তাহলে ক্ষতস্থানটি দ্রুত শুকাবে এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। এছাড়া অনেক রোগীর অপারেশনের পর কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা দেখা দিয়ে থাকে এক্ষেত্রে রোগীর ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত যেমনঃ ফলমূল, শাকসবজি  ইত্যাদি। 
মাশরুম, সিডস, নাটস, বেল পেপার, পাইনা পেল, সাইট্রাস ফুড, পাপাইয়া এইগুলো খাবারগুলো অপারেশনের পর একজন রোগী খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে এবং রোগী খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবে। এবং অপারেশনের পর রোগীর তরল এবং হালকা নরম খাবার খাওয়া উচিত যে খাবার গুলো খেলে খুব দ্রুত হজম হবে। অপারেশনের পর রোগী কি কি খাওয়া উচিত সেগুলোর তালিকা নিচে দেওয়া হলো।
  • সুপ
  • নরম ভাত
  • মধু
  • মাছ-মাংস
  • ডিম-দুধ
  • শাকসবজি
  • ফলমূল
  • পাইনা পেল
  • মাশরুম
  • সিডস
  • নাটস
  • বেল পেপার
  • ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার
উপরের উল্লেখিত এই খাবারগুলি অপারেশনের পর একজন রোগী খেতে পারেন তবে কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো অপারেশনের পর এড়িয়ে চলা উচিত যা নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

অপারেশনের পর কি খাওয়া নিষেধ

ক্ষত বা অপারেশনের পর সুস্থ হতে কিছুটা সময় লাগে। বিশেষ করে অপারেশনের ক্ষত জায়গাটি শুকাতে সময় লাগে। কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলি খেলে আপনার ক্ষত জায়গাটি দ্রুত সেরে উঠে বাধা দিবে। চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক কোন সেই খাবার যেগুলো অপারেশনের পর খাওয়া যাবেনা।
  • চিনিঃ প্রথমেই আপনার খাবার তালিকা থেকে চিনি বাদ দিন। এমনকি যেসব খাবার চিনি দ্বারা তৈরি সেই খাবার গুলি এড়িয়ে চলুন যেমনঃ মিষ্টি, ক্ষীর, পায়েস, পুডিং, ইত্যাদি। চীনের বদলে আপনি মধু অথবা গুড় খেতে পারেন এতে কোন ক্ষতি নেই।
  • কিছু তেলঃ সূর্যমুখী তেল, আঙ্গুরের বীজের তেল ইত্যাদি এসব ধরনের তেল এড়িয়ে চলুন কারণ এগুলি প্রদাহ আরো বাড়িয়ে তোলে। এসব তেলের বদলে আপনি অলিভ অয়েল তেল ব্যবহার করতে পারেন।
  • ভাজাপোড়া খাবারঃ জাঙ্ক ফুড এবং অতিরিক্ত ভাজাপোড়া খাবারে প্রচুর পরিমাণে ট্রান্স ফ্যাট থাকে যার ফলে এগুলো এড়িয়ে চলুন কারণ এই খাবারগুলি শরীরে জন্য ক্ষতিকারক। এর বদলে আপনি বাটার জাতীয় খাবার খেতে পারেন এটি আপনার শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করবে।
  • দুগ্ধজাত দ্রব্যঃ কিছু কিছু দুগ্ধজাত দ্রব্য খাবার আছে যেগুলি খেলে আপনার শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাবে যেমনঃ মাখন ইত্যাদি এসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। এর পরিবর্তে আপনি দুধ খেতে পারেন। দুধ স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
  • অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও লাল মাংসঃ যেকোনো ধরনের অতিরিক্ত চর্বিযুক্ত ও লাল মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকুন কারণ এটি শরীরের জন্য খুবই মারাত্মক ক্ষতি করে। তাই এই জাতীয় মাংস খাওয়া থেকে একদম বিরত থাকুন। এর বদলে আপনি মাছ খেতে পারেন যে মাছগুলোতে ওমেগা-৩ আছে।
  • অ্যালকোহল বা মদ্যপানঃ যেকোনো ধরনের মদ বা অ্যালকোহল পান করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ এটি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর এছাড়া এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা একদমই নষ্ট করে দেয়। প্রতিদিন মদ্যপান করলে কাটা জায়গা বা ক্ষতস্থান শুকাতে অনেক দেরি হয় তাই মদ্যপান করা একদমই ছেড়ে দিন। এর বদলে আপনি গ্রিন টি খাওয়া অভ্যাস করুন।
  • ফ্যাট জাতীয় খাবারঃ অপারেশনের পর যদি ফ্যাট জাতীয় খাবার খান তাহলে ক্ষত শুকাতে দেরি হতে পারে এবং ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত হতে পারে তাই ফ্যাট জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন।

অপারেশনের পর ড্রেসিং

মেডিকেলের চিকিৎসায় ড্রেসিং খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি চ্যাপ্টার বলা হয়ে থাকে। বিভিন্ন ক্ষত, কাঁটা ছেঁড়া, পোড়া, ঘা এবং আলসারের ক্ষেত্রে ড্রেসিং করা হয়ে থাকে। ড্রেসিং করার ক্ষেত্রে যেসব জিনিসপত্র ব্যবহার করা হয় সেগুলো নিয়মিত জীবাণুমুক্ত পরিষ্কার করা হয়। তবে এই পরিষ্কার যেমন তেমন পরিষ্কার নয় লাইজল, ফরমাল্ডিহাইড, অটোক্লেভিং ইত্যাদি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়।

কোন অপারেশনের একদিন পর ড্রেসিং করা লাগে আবার ৫ দিন পর পর ড্রেসিং করা লাগে। যেসব রোগের ক্ষতস্থান বড় সেসব রোগীর ড্রেসিং করার সময় অনেক কষ্ট পাই এমনকি চিৎকার করে তাই যে ডাক্তার ড্রেসিং করে তার মন অনেক শক্ত হতে হয়। হালকা করে ড্রেসিং করলে কম উপকার পাওয়া যায় কারণ হালকা ড্রেসিং করার ফলে ভিতরে জীবাণু অথবা মৃত টিস্যু থেকে যাই।

আর এই জীবাণু অথবা মৃত্যুর টিস্যু থেকে যাওয়ার ফলে রোগীর ক্ষতস্থানটি দূরত্ব শুকাই না এবং রোগী দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে না। ক্ষতের এবং বহিঃবিভাগের প্রধান চিকিৎসার অংশ হলো ড্রেসিং। ক্ষতস্থানের জায়গায় পুঁজ না বের করে ড্রেসিং না করে যতই অ্যান্টিবেটিক খাওয়া হক না কেন কোন লাভ হবে না তাই ড্রেসিং একমাত্র সমাধান।

হার্নিয়া অপারেশনের পর করণীয়

হার্নিয়া এমন একটি সমস্যা যা শরীরের ভেতরের কোন অঙ্গ চামড়ার বাইরে অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে যাওয়ায় হল হার্নিয়া। আমরা অনেকেই এই হার্নিয়া সমস্যাই ভোগে থাকি। কারো কারো হার্নিয়া এতটাই বেড়ে যায় যে পরবর্তীতে অপারেশন করা লাগে। অনেকে জানতে চেয়ে থাকেন হার্নিয়া অপারেশনের পর করণীয় কি।

হার্নিয়া অপারেশনের পর বেশিরভাগ রোগী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে বাড়ি চলে যেতে পারবে কোন অসুবিধা নেই। তবে রোগী পুরোপুরি সুস্থ হতে ১ থেকে ২ সপ্তাহ সময় লেগে থাকে। রোগী হালকা কাজকর্ম করতে পারবে ২ সপ্তাহ পর থেকেই তবে ভারি কোন কাজ করা যাবে না। হার্নিয়া অপারেশনের একমাস পরে যেকোনো কাজ করতে পারবে কোন অসুবিধা নেই।

অপারেশনের পর সর্দি কাশি, ভারী কাজ করা, কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা পেটে জোরে চাপ দেওয়া ইত্যাদি হলে পেটের মধ্যকার চাপ বাড়ে আর এই পেটের মধ্যকারের চাপ বাড়লে হার্নিয়ার ঝুঁকি অনেকটাই বেড়ে যায়। তাই হার্নিয়া অপারেশনের পর এমন খাবার খেতে হবে যে খাবার খেলে খুব দ্রুত হজম হয় যেমনঃ শাকসবজি, ফলমূল ইত্যাদি। 

কোন ভারী কাজ করা যাবে না অপারেশনের ৪ সপ্তাহ পর্যন্ত। এবং ধূমপান করা থেকে বিরত থাকতে হবে যাতে কাশি না হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ওজনের কারণেও হার্নিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে তাই যাদের অতিরিক্ত ওজন রয়েছে তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। যাদের ডায়বেটিসে রয়েছে তাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।

অপারেশনের পর জ্বর হলে করণীয়

অপারেশন করলে আমাদের শরীরের উপর দিয়ে একটি বড় চাপ যায় তাই অপারেশন করার পর একটু জ্বর আসা স্বাভাবিক। কোন অপারেশনের পর যদি জ্বর আসে তাহলে প্যারাসিটামল ট্যাবলেট খেতে হবে। আর যদি প্যারাসিটামল খেয়েও যদি জ্বর না ভালো হয় এবং অতিরিক্ত মাত্রায় জ্বর আসে তাহলে দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

যদি অধিক মাত্রায় জ্বর আসে এবং রোগী অজ্ঞান হয়ে যায় তাহলে নিকটস্থ হাসপাতালে অথবা ক্লিনিকে ভর্তি করতে হবে। তবে জ্বরের মাত্রা যদি হালকা হয় তাহলে যে ডাক্তারের মাধ্যমে অপারেশন করিয়েছিলেন সে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করতে হবে। বিশেষ করে মা-বোনদের সিজারের অপারেশনের পর অধিক মাত্রায় জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে।

কারণ কোন মা যদি প্রথম সিজার করে তখন মেরুদন্ডে একটি ইনজেকশন দেয়া হয় আর এই ইনজেকশন দেয়ার ফলে শরীরে প্রচন্ড ব্যথা সৃষ্টি হয় আর এই ব্যথা থেকে জ্বর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। কোন অপারেশনের পর সামান্য মাত্রায় জ্বর হলে চিন্তার কোন কারণ নেই আর যদি অধিক মাত্রায় জ্বর আসে তাহলে দ্রুত ডাক্তারে পরামর্শ নিন।

সাইড কাটা ইনফেকশন হলে করণীয়

অনেকেই আবার জানতে চেয়ে থাকেন সাইট কাটা ইনফেকশন হলে করনীয় কি। অনেক মা-বোনরা আছেন যারা সিজার করার পরিবর্তে সাইড কাটান কেননা সিজারের চাইতে সাইড কাটার অনেক উপকারিতা রয়েছে তবে যেহেতু এটি একটি কাটা কাটির বিষয় তাই কাঁটা স্থানে ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।

সাইড কাটা ইনফেকশন হলে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হয় যেমনঃ কাটার আশেপাশে লাল হয়ে যাওয়া অথবা ফুলে যাওয়া, কাটা স্থান সবসময় ব্যথা করা, কাটা জায়গা থেকে দুর্গন্ধ ও পুঁজ বের হওয়া ইত্যাদি। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক সাইট কাটা ইনফেকশন হলে করণীয় কি।
  • প্রথমে যে ডাক্তারের মাধ্যমে সাইড কাটিয়েছিলেন সে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।
  • কাটা স্থানটি সব সময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন।
  • চেষ্টা করুন বেশিরভাগ সময় বিশ্রাম নেওয়ার এবং কোন ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • কাটা স্থানটি ব্যথা করলে একটি নরম তোয়ালের ভিতর বরফ পেচিয়ে কাটা স্থানে শেক দিতে পারেন এতে কাটা স্থানের ব্যথা অনেকটাই দূর হয়ে যাবে।
  • কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে সমস্যা তাই নরম এবং তরল খাবার খান যে খাবারগুলো দ্রুত হজম হয়।
  • বেশি বেশি করে ডিম দুধ, ফলমূল, শাক-সবজি সেবন করুন।

অপারেশনের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়

অনেক রোগেরাই জানতে চেয়ে থাকেন অপারেশনের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়। প্রথমে আসা যাক গলা থেকে মাথার দিকের অংশ। এই অংশের চামড়ার নিচে রক্তের সাপ্লাই সব থেকে বেশি থাকে তাই দ্রুত ক্ষত শুকাই এবং ভালো হয়ে যায় তাই গলা থেকে মাথা পর্যন্ত কোন অপারেশনের পর সাধারণত ৩ থেকে ৫ দিন পর সেলাই কাটা যায় কোন অসুবিধা হয় না।
এবার আসা যাক পুরা শরীর অর্থাৎ গলা থেকে পা পর্যন্ত অপারেশনের কতদিন পর সেলাই কাটতে হয়? শরীরের ডানে বামে যেদিকেই হোক না কেন ৭ থেকে ১০ দিন পর ক্ষত শুকিয়ে এবং ভালো হয়ে যায় তারপর ৭ থেকে ১০ দিন পর সেলাই কাটা যায় কোন অসুবিধা নেই। এবার আসা যাক হাতের ক্ষেত্রে কত দিন পর সেলাই কাটা যায়? হাতের ক্ষেত্রে সাধারণত অপারেশনের ১০ থেকে ১৪ দিন পর সেলাই কাটা যায়।

আমাদের শেষ কথা

আপনার যদি অপারেশনের পর ক্ষত জায়গায় ইনফেকশন হয়ে যায় তাহলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কারণ একজন চিকিৎসকে ভালো বলতে পারে আপনার ইনফেকশনের এখন কি অবস্থা। প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে অপারেশনের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কি এবং অপারেশনের পর কি কি খাওয়া উচিত ও কি কি খাওয়া যাবেনা এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছি।

আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দেবেন আর যদি আপনার কোন মতামত থেকে থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করে আমাদেরকে জানাতে পারেন। এরকম নিত্য নতুন অজানা তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে প্রতিনিয়ত চোখ রাখতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url