সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে ও উপকারিতা

আজকের এই আর্টিকেলে সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে এবং সাফি সিরাপ উপকারিতা কি সম্পর্কে আলোচনা করব। এই সাফি সিরাপটি মূলত চর্মরোগ, ত্বকে ফুসকুড়ি, ব্রণ ও রক্ত দূষণ ইত্যাদি চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে না বাড়ে এবং সাফি সিরাপ উপকারিতা কি এ সকল প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন এই আর্টিকেলে।
সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে | সাফি সিরাপ উপকারিতা
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা সাফি সিরাপ সম্পর্কে তেমন একটা ধারণা নেই তাই আজকের এই আর্টিকালে আমরা আপনাদের সাথে সাফি সিরাপ উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা এবং সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে? সকল খুঁটিনাটি বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করবো এই আর্টিকেলে তাই এই পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।

সাফি সিরাপ খেলে কি হয়

সাফি সিরাপটি হামদার্দ কোম্পানি থেকে উৎপাদিত একটি শিরা এই সিরাপটি মুখের ব্রণ দূর করে, ফুসকুড়ি, চুলকানি, দাদ, প্রসাবে জ্বালাপোড়া ইত্যাদি বিভিন্ন চর্মরোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে এছাড়াও যাদের কোষ্ঠকাঠিন্য সমস্যা রয়েছে ঠিক মতন পায়খানা হয় না তাদের জন্য এই সাফি সিরাপটি খুবই উপকারী। 


আবার যাদের খাবারের প্রতি কোন রুচি নেই খিদে লাগে না তাদের জন্য এই সাফি সিরাপটি কার্যকারী সমাধান এছাড়াও এই সিরাপটি খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলায় এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে তাই এই সিরাপটি একটি ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খেতে পারেন।

সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে

সাফি সিরাপ একটি ইউনানী ওষুধ যা শরীর সুস্থ রাখার পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। সাফি এই সেরাটিতে রয়েছে নিম, রেউ চিনি, তুলসী ও অল্প পরিমাণে ক্যালরি রয়েছে যা আমাদের শরীরে ওজন কমাতে সাহায্য করে।

তাই আপনি যদি ওজন কমাতে চান তাহলে প্রতিদিন ১ চামচ করে সকাল, বিকাল এবং রাতে ৩ বার খালি পেটে খেতে পারেন তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই ওষুধটি খাওয়া উচিত এবং যাদের চিকন এবং দুর্বল শরীর তারা এই সিরাপটি খাওয়া থেকে দূরে থাকুন।

সাফি সিরাপ খাওয়ার নিয়ম

অনেকে আছেন যারা আগে থেকেই সাফি সিরাপ সেবন করে আছেন কিন্তু কোন উপকার পাচ্ছেন না এর প্রধান কারণ হচ্ছে সঠিকভাবে না খাওয়া তাই চলুন সাফি সিরাপ খাওয়ার নিয়ম গুলি জেনে নেওয়া যাক। এই সিরাপটি খাওয়ার আগে প্রথমেই সিরাপটি ভালোভাবে ঝাঁকিয়ে নিবেন। 

প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে ২-৪ চামচ করে প্রতিদিন ১ থেকে ২ বার সেবন করতে পারবেন।অপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে অর্থাৎ যাদের ১০ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে বয়স হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এক চামচ করে দৈনিক ১ থেকে ২ বার। শিশুদের ক্ষেত্রে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। 

সাফি সিরাপ খাবার খাওয়ার আগে না পরে খেতে হয়

অনেকেই জানতে চেয়ে থাকেন এই সাফি সিরাপ কখন খেতে হবে খাওয়ার আগে না পরে? এর উত্তর হল এই সিরাপটি আপনি খাওয়ার পরে সেবন করবেন এবং এর সাথে কোন কিছুই মেশাতে হবে না এটা সরাসরি খেয়ে নিবেন।

সাফি সিরাপ উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

আগে মনে রাখবেন একটি মেডিসিন আপনার শরীরে একটি কাজ করবে না আরো বিভিন্ন ধরনের কাজ করে যেমন ইউনানী যেগুলো মেডিসিন আছে সিনকার, এলকলি ইত্যাদি এই ধরনের একটি ওষুধ অনেকগুলো কাজ করে আমাদের শরীরে


এই সাফি সিরাপ এর মধ্যে দেওয়া আছে ৮টি থেকে ১০টি উপাদান যাতে করে আপনার একটি খেলে আরেকটি উপকার আসে। চলুন তাহলে এবার জেনে নেওয়া যাক সাফি সিরাপ উপকারিতা কি কি এবং কেন খাবেন। 

১. রক্ত পরিষ্কার করে 
যাদের শরীরে রক্তে দূষিত পদার্থ রয়েছে তাদের শরীরে রক্ত পরিষ্কার করতে সাফি সিরাপ বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

২. ফোড়া বা ব্রণ দূর করে
যাদের মুখের মধ্যে গোটা গোটা এক ধরনের ব্রণ রয়েছে বিশেষ করে মহিলাদের বেশি হয়ে থাকে এই ব্রণ গুলি যদি অতিরিক্ত হয় তাহলে ডাক্তারেরা ফোড়া বা ব্রণ দূর করণে সাফি সিরাপ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকে।

৩. শরীরে ফুসকুড়ি
শরীরে যদি ফুসকুড়ি হয় গোটা গোটা দানার মত তাহলে এক কথায় আপনার শরীরে ত্বকে যদি কোন সমস্যা হয় বা সৌন্দর্য বাড়াতে চান অথবা গোটা গোটা ফুসকুড়ি দূর করতে চান তাহলে সাফি সিরাপটি খুব ভালো কাজ করবে।

৪. একজিমা ও সোরাইসিস 
সোরাইসিস বলতে আপনার শরীরে সাদা সাদা হয়ে যায় বা কানের চিপায় দেখা যায় এমন জায়গায় সোরাইসিস বা সাদা সাদা হয়ে ওঠে এক ধরনের ছত্রাক। এই ছত্রাক দূর করার জন্য সাফি সিরাপটি ডাক্তারেরা দিয়ে থাকে।

৫. নাকের রক্তক্ষরণ
যাদের নাক দিয়ে এমনি এমনি রক্ত পড়ে তাদের কেউ এই সাফি সিরাপ চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
কোষ্ঠকাঠিন্য বলতে দীর্ঘদিন ধরে আপনার টয়লেটে সমস্যা হচ্ছে পায়খানা ক্লিয়ার হয় না ২-৩ দিন পর পর পায়খানা হয় তাদের ক্ষেত্রেও সাফি সিরাপটি দিয়ে পায়খানা বা টয়লেট ক্লিয়ার করা হয়।

৭. হাম বা প্রসাবকালীন জ্বালাপোড়া
হাম বলতে অনেকে আছেন যাদের হাম বা জল বসন্ত হলে ভালো হতে চাই না আবার অনেক সময় দাগ পড়ে যায় এই বসন্ত সমস্যা কমিয়ে আনার জন্য সাফি শিরাপটি দেওয়া হয়ে থাকে। তাছাড়া পুরুষ বা মহিলাদের দেখা যায় প্রসাব করার সময় জ্বালাপোড়া করে এই জ্বালাপোড়া কমানোর জন্য সাফি সিরাপ দেওয়া হয়।

আর এই সাফি সিরাপটি খাওয়ার ফলে কোন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি তবে আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এই সিরাপটি সেবন করবেন এবং এই সিরাপটি দীর্ঘদিন যাবত সেবন করবেন না। আশা করি আপনি সাফি সিরাপ উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কিনা তা জানতে পেরেছেন।

সাফি সিরাপ কতদিন খেতে হয়

যারা চিকিৎসার জন্য সাফি সিরাপ খাওয়ার কথা ভাবছেন বা খাচ্ছেন তাদের সাফি সিরাপ খাওয়ার নিয়ম ও সাফি সিরাপ কতদিন খেতে হয় তা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সাফি সিরাপটি ভালো ফলাফল পেতে হলে আপনাকে ১৫ থেকে ৩০ দিন লাগাতার খেতে হবে 


আর যদি কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় তবে সাফি সিরাপ খাওয়া বন্ধ করে দিন। প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য ২ থেকে ৩ চামচ দিনে ৩ বার খেতে হবে এবং বাচ্চাদের জন্য ১ চামচ করে খাওয়াতে পারেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়ানো উচিত।

সাফি সিরাপ খেলে কি মোটা হয়

সাফি সিরাপ খেলে মোটা হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই তবে আপনার যদি অতিরিক্ত স্বাস্থ্য হয়ে থাকে এবং শরীরের চর্বি থাকে তাহলে এই সিরাপটি চর্বি গলাতে ও ওজন কমাতে সাহায্য করে।

শেষ কথা

এই আর্টিকেলে সাফি সিরাপ খেলে কি ওজন কমে এবং সাফি সিরাপ উপকারিতা এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে কিনা সেই সকল বিষয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করেছি আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন। এই সাফি সিরাপ খাওয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ প্রতিটি ওষুধেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া রয়েছে তাই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাবেন।

এবং এই সাফি সিরাপটি দীর্ঘদিন সেবন করবেন না। আপনার যদি এই পোস্টটি ভাল লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন এবং নিত্য নতুন তথ্য পেতে আমাদের ওয়েবসাইটটিতে প্রতিনিয়ত চোখ রাখতে পারেন। ধন্যবাদ।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url