মোবাইল আসক্তির কুফল ও মুক্তির উপায় জেনে নিন

ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে প্রায় সকল বয়সের মানুষই এখন মোবাইল ফোনে আসক্তি হয়ে পড়েছে যার কারণে আমাদের দেশে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় কিশোরগ্যাং তৈরি হচ্ছে এবং বিবাহিতদের মাঝে ডিভোর্সের সংখ্যা বেড়েই চলেছে এছাড়া ছোট বাচ্চাদের পড়াশোনার উপর আগ্রহ উঠে যাচ্ছে। তাই আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইল আসক্তির কুফল এবং মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
মোবাইল আসক্তির কুফল ও মুক্তির উপায় জেনে নিন
যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাদেরকে বলব এই মোবাইল ফোনের আসক্তির কিছু ক্ষতিকর দিক রয়েছে যা এই আর্টিকেলে আপনাদের জানাবো। আপনি কিংবা আপনার ছোট বাচ্চা যদি মোবাইল ফোনে আসক্ত হয়ে থাকে তাহলে কিভাবে এই মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে মুক্তি পেতে পারেন সেটাও জানাবো এই আর্টিকেলে। তো মোবাইলে আসক্তির অজানা তথ্য জানতে হলে এই আর্টিকেল পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়তে থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ 

ভূমিকা

যারা একবার মোবাইল ফোনের আসক্ত হয়ে যায় তারা খুব সহজেই এই আসক্তি থেকে বের হতে পারে না। আর এই মোবাইল ফোনের আসক্তির অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে তা হয়তো অনেকেই জানেন না।বর্তমান সময়ে তরুণ-তরুণী দিনে ৬ থেকে ৭ ঘণ্টারও বেশি ফোন টিপেই কাটাচ্ছে। আবার অনেক মায়েরাই আসেন যারা বাচ্চাকে খাওয়ানোর জন্য মোবাইল ধরিয়ে দেন যার ফলে বাচ্চার হতে পারে মারাত্মক ক্ষতি।

আমরা অনেকেই আছি যারা মোবাইল আসক্তির কুফল অর্থাৎ ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানিনা তাদের জন্য আজকের এই আর্টিকেল পোস্টটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। নিচে মোবাইল আসক্তি কি, কারণ ও মোবাইল ফোনের আসক্তির ক্ষতিকর দিকগুলো কি কি এছাড়া মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।

মোবাইল আসক্তি কি

মোবাইল আসক্তি কি এটি অনেকে জানে না। মোবাইল আসক্তির পরিণতির কত ভয়ংকর শুনলেও অনেকেই ভয় পাইনা না এর পেছনে কারণ অতিরিক্ত মোবাইলের ব্যবহার জীবনকে ধ্বংস করে ধীরে ধীরে তাই এর ভয়ঙ্কর রূপ প্রতিীয়মান হয় বেশ সময় নিয়ে। ছোট স্ক্রিনের মাঝে মনোনিবেশ থাকে শতভাগ এই সময় সৃজনশীল কোনো চিন্তার ঘটেনা বহিঃপ্রকাশ। 
সবচেয়ে ভয়ংকর বার্তা হচ্ছে মোবাইলের ছোট স্ক্রিনে চাকচিক্যময় দেখতে দেখতে কখন যে সময় কেটে যায় ফলে আসল কাজের হয়ে যায় অসময় হুস ফিরলেই মনে হয় কি করছি আমি এই হল মোবাইল ফোনের আসক্তি। মোবাইল ফোন অতিরিক্ত চালানোর কারণে মানসিক এবং শারীরিকের উপর ক্ষতিকর প্রভাব পরে।

অল্প বয়স্ক এবং শিশুদের মোবাইলে আসক্তি সবচেয়ে বেশি ঝুঁকি রয়েছে। অনেক শিশু এবং অল্পবয়স্করা আছে যারা অকারণে কিছুক্ষণ পরপর অযথা মোবাইলে নোটিফিকেশন চেক করে এবং সারাদিন ছয় থেকে সাত ঘন্টারও বেশি মোবাইলের ভিতরেই কাটিয়ে দেয় এটাই হচ্ছে মোবাইল আসক্তি। 

এই মোবাইল আসক্তির উপকারিতা চাইতে ক্ষতিকর দিক গুলি বেশি। কোন মানুষ যখন মোবাইলে আসক্তি হয়ে যাই তখন তার কাছ থেকে মোবাইল সরিয়ে নিলে তখন সেই ক্ষিপ্ত হয়ে যায় এবং কোন কাজে তার মন বসে না। 

২৬১৭ জানেন এই নাম্বারটির অর্থ কি? এটা সেই নাম্বার যা একটি মানুষ দিনে কতবার তার ফোনের ডিসপ্লে টাচ করেছে আর এটা তো জুলাই ২০১৬ রিপোর্ট আর বর্তমানে অর্থাৎ ২০২০ সালে এই নাম্বারটা বের হয়েছে ৮৪০০ বার। 

আর যারা হাই উজার তারা তো প্রতিদিন ১৬ হাজার বারেরও বেশি তারা তাদের ফোনের স্ক্রিনে টাচ করে। টেকনোলজি যদিও একটি টুল যার সাহায্যে আমরা আমাদের কাজকে সহজ করতে পারি কিন্তু আজ টেকনোলজিকে এতটা খারাপ ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যার কোন লিমিট নেই। 

মোবাইল ফোন যত দিন দিন উন্নত হচ্ছে মানুষ ততই বোকা হচ্ছে মাফ করবেন কথাটা খারাপ লাগলেও এটাই সত্য। যারা অতিরিক্ত মোবাইলে গেম খেলে, ভিডিও দেখে এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সময় নষ্ট করে তারা বাস্তব জীবন থেকে আস্তে আস্তে দূরে সরে যায়। আশা করি মোবাইল আসক্তি কি তা ধারণা পেয়েছেন।

মোবাইল আসক্তির কারণ

আজকে শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কিন্তু বর্তমান সময়ে কিন্তু আমরা একটা ভিন্ন চিত্র দেখতে পাচ্ছি যে প্রায় ৮ থেকে ১২ শতাংশ শিশুরাই মোবাইল ফোন আসক্তি অথবা তারা প্রতিদিন তিন থেকে চার ঘন্টা তারা ফোন ইউজ করছে। যেটা আমাদের জন্য পরবর্তী প্রজন্মের জন্য একটা খুবই ক্ষতিকারক একটা বিষয়। 

আমরা বেশ কয়েকটি পয়েন্ট আউট করেছি যে এখন বাচ্চারা কেন একটু বেশি মোবাইলে আসক্তি হয়ে পড়েছে অর্থাৎ মোবাইল আসক্তি হওয়ার কারণ। চলুন তাহলে মোবাইলে আসক্তি হওয়ার কারণ গুলি জেনে নেওয়া যাক।

১। আউটডোর একটিভিটিস কমে যাওয়াঃ মানে হচ্ছে একটা সময় বাচ্চারা বাইরে গিয়ে খেলাধুলা করত স্বশরীরে কিন্তু এখন আর এটা করে না। এখন করা মা-বাবারা চাই ছেলে দূরে গিয়ে ঘরে থাকুক আর ঘরে থাকার ফলে কি হচ্ছে প্রতিনিয়ত তাকে মোবাইলটা দিয়ে মানিয়ে রাখা হচ্ছে যে ও যেন দুষ্টামি না করে কান্নাকাটি না করে এর ফলে বাচ্চারা বাইরে না গিয়ে ঘরে বেশিক্ষণ থাকার ফলে বেশি মোবাইলে আসক্তি হয়ে পড়ছে।

২। অভিভাবকের অসচেতনতাঃ এমনও হচ্ছে যে পরিবারের মা এবং বাবা দুই জনই চাকরি করে অথবা তাদের কর্ম ক্ষেত্রে নিয়ে ব্যস্ত থাকে ফলে তাদের বাচ্চাকে দেখাশোনা করার কেউ নেই তখন সেই বাচ্চা মোবাইলে গেম খেলে অথবা ইউটিউব এ ভিডিও দেখে আর এটা হচ্ছে বড় সমস্যা এই মোবাইলে আসক্তি হওয়ার কারণ।

৩। বাচ্চারা যখন অতিরিক্ত দুষ্টামি করেঃ অনেক সময় এটাও দেখা গেছে যে বাচ্চারা খুব বেশি দুষ্টামি করে যার ফলে একটা পর্যায়ে অভিভাবক বিরক্ত হয়ে পড়ে কিছুই করার থাকেনা তখন দেখা গেছে তাদেরকে মোবাইল হাতে ধরিয়ে দেয় ফলে মা বাবা একটু শান্তি পায় মানে হচ্ছে বাচ্চারা তাদেরকে আর বিরক্ত করে না। কিন্তু এভাবে যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে তাহলে বাচ্চারা মোবাইলে আসক্তি হয়ে পড়ে।

৪। শিক্ষাঃ করোনা কালীন পর থেকেই শিক্ষা ব্যবস্থা কিছুটা অনলাইনে ছড়িয়ে গেছে অর্থাৎ এখন শিক্ষার্থীরা বাইরে না গিয়ে ঘরে বসে মোবাইলে অনলাইন এর মাধ্যমে ক্লাস করছে ফলে অনেকেই অনলাইনে ক্লাস করার পাশাপাশি মোবাইলে বিভিন্ন গেমস এবং ভিডিও দেখছে ফলে এটাও একটি বড় কারণ মোবাইলে আসক্তি হওয়ার।

মোবাইল আসক্তির কুফল

আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যে জিনিসটির ওপর বেশি নির্ভরশীল সেটি হচ্ছে মোবাইল ফোন। ঘুম থেকে ওঠার জন্য এলালাম দেওয়া থেকে শুরু করে সারা দিনের বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাজে আমরা মোবাইল ফোন ব্যবহার করে থাকি। ছবি তোলা থেকে শুরু করে বিভিন্ন হিসাব-নিকাশ করা এবং বিভিন্ন পত্রিকা পড়ে থাকি এই মোবাইল ফোনের মাধ্যমে। 
আরো পড়ুনঃ Spy Cam Telegram Hidden Information
এছাড়া আমরা দিনের সর্বশেষ আপডেট তথ্য এই ফোনের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। তবে আমরা কিন্তু এর ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে তেমন একটা চিন্তা ভাবনা করি না। আপনি কি জানেন? এই মোবাইল ফোন অতিরিক্ত ব্যবহার করলে কি কি ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন অর্থাৎ আপনি যদি মোবাইল ফোনে আসক্তি হয়ে থাকেন তাহলে মোবাইল আসক্তির কুফল বা ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে জানা খুবই জরুরী।
  • দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়াঃ মোবাইলে আসক্তির উল্লেখযোগ্য ক্ষতিকর দিক হচ্ছে দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া। মোবাইল ফোনের স্ক্রিনের নীল আলো আমাদের চোখের রেটিনার জন্য ক্ষতিকর। তাই অতিরিক্ত সময় ধরে মোবাইলের দিকে তাকিয়ে থাকলে চোখের দৃষ্টি শক্তি অনেকটাই হারিয়ে ফেলতে পারেন এমনকি চিরতরে অন্ধ হয়ে যেতে পারেন।
  • ব্যাকপেইন সমস্যাঃ গত কয়েক বছর যাবত তরুণ তরুণীদের মধ্যে ব্যাকপেইনসহ মেরুদন্ডের বিভিন্ন সমস্যা দেখা যাচ্ছে এর মূল কারণ হচ্ছে মেরুর রজ্জুর উপর বেশি চাপ দেয়ার কারণে আর এই ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি দায়ী হচ্ছে অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার।
  • ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি রয়েছেঃ ইতালির একটি কোর্টে একজন মামলা দিল এই কারণে যে কোম্পানি তাকে দৈনিক ৩ থেকে ৪ ঘন্টা করে মোবাইল ফোনে ব্যস্ত রাখতো এবং টানা এরকম ১৫ বছর সে কথা বলেছে। পরে কোর্ট যাচাই-বাছাই করে দেখা গেল অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে তার ব্রেনে সত্যি টিউমার হয়েছে। তো এটা থেকে জানা যায় যে অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করার কারণে ব্রেনে টিউমার হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে।
  • অল্পতেই উদ্বিগ্ন ও হতাশ হওয়াঃ অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে যে মানসিক এবং শারীরিক সমস্যা দেখা যায় শুধু তাই নয় বরং মানসিকভাবে উদ্বিগ্ন এবং হতাশা করে তোলে। যখন কেউ অতিরিক্ত ফোন চালাই এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় অন্যের সফলতা বা নানা ধরনের ছবি, ভিডিও দেখে তখন তার মধ্যে মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি হয় ফলে হতাশা কাজ করে।
  • ঘুমের সমস্যা হওয়াঃ মোবাইল আসক্তির মধ্যে খুব খারাপ কুফল হচ্ছে ঘুমের সমস্যা হওয়া। আপনি যখন অতিরিক্ত মোবাইল ব্যবহার করবেন তখন আপনি রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারবেন না এমনকি রাতে তাড়াতাড়ি ঘুম আসবে না এবং ঘুমানোর সময় বিভিন্ন চিন্তাভাবনা কাজ করবে যার ফলে আপনি ঠিক মতন ঘুমাতে পারবেন না।
  • অযথা সময় নষ্ট হওয়াঃ আপনি মোবাইলের মাধ্যমে যত সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্ত হয়ে পড়বেন তত বেশি হতাশায় ভুগবেন এর কারণ হচ্ছে বর্তমানে ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় অযথা সব ভিডিও পাওয়া যায় যেগুলি দেখা মানে অযথা সময় নষ্ট করা তাই আপনিও যদি সময়ের পর সময় ধরে এসব ভিডিও দেখতে থাকেন তাহলে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট হয়ে যাবে।
  • ব্যাকটেরিয়ার আবাসস্থলঃ আমাদের টয়লেট নিয়মিত পরিষ্কার করলেও আমাদের হাতের ফোনটি প্রতিদিন পরিষ্কার করা হয় না আরে এই মোবাইল ফোন আমরা কল আসলে মুখে লাগাই এবং সব সময় হাতে রাখি ফলে মোবাইল ফোনে থাকা ব্যাকটেরিয়া আমাদের শরীরে গিয়ে নানা রকম অসুখ সৃষ্টি করতে পারে।
  • শ্রবণশক্তি কমে যাওয়াঃ মোবাইল আসক্তির আরো একটি কুফল হচ্ছে শ্রবণশক্তি কমে যাওয়া। অনেকেই দেখা যায় সব সময় কানে হেডফোন লাগিয়ে গান শুনে অথবা গেম খেলে এর ফলে শ্রবণশক্তি আস্তে আস্তে কমে যায়।
  • শুক্রাণু কমে যাওয়াঃ একটি গবেষণায় দেখা যায় মোবাইল ফোন থেকে বের হওয়া হাই ফ্রিকোয়েন্সীর ইলেক্ট্রো-ম্যাগনেটিক রেডিয়েশন একজন পুরুষের প্রজনন তন্ত্রের উপর প্রভাব ফেলে ফলে শুক্রাণু কমে যায় তাই যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোনে আসক্তি তাদের শুক্রাণু কমে যেতে পারে এবং সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারেন।
  • মেজাজ সব সময় খিটখিটে থাকেঃ যারা অতিরিক্ত মোবাইল ফোন ব্যবহার করেন তাদের মেজাজ সব সময় খিটমিটে থাকে ফলে তাদের সাথে কেউ যখন কথা বলে তারা তখন খারাপ ব্যবহার করে ফলে মানুষ তাকে খারাপ ভাবে তাই এই মোবাইল ফোনের আসক্তি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত।
  • চিন্তাশক্তি কমে যাবেঃ আপনি যখন অতিরিক্ত মোবাইল ফোনে আসক্তি হয়ে যাবেন তখন সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন ভিডিও দেখতে থাকবেন এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে চ্যাটিং করবেন এবং এইসব নিয়ে বেশি চিন্তা ভাবনা করবেন হলে আপনার চিন্তাশক্তি অনেকটাই কমে যাবে।

মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

মোবাইলের প্রতি আসক্তি হয়ে যাওয়া একটি মারাত্মক সমস্যা। মোবাইলে আসক্তি হওয়ার ফলে কোন কাজে মন বসে না, শরীরের বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হয়, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যায় এবং ছোট বাচ্চাদের পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ কমে যায় ইত্যাদি। আপনারা যারা মোবাইলে আসক্তি হয়ে গেছেন তাদের জন্য কিছু উপদেশ এবং উপায় রয়েছে যা জানলে আপনারা মোবাইল আসক্তিতে মুক্তি পেতে পারেন। 
  • মোবাইলের নোটিফিকেশন বন্ধ রাখুনঃ আপনি যে ফোনটি ব্যবহার করছেন সেই ফোনটি সেটিং এ গিয়ে নোটিফিকেশন বন্ধ করে দিন যাতে কোন অ্যাপস এর নোটিফিকেশন আপনার ফোনে না আসে ফলে মোবাইলের প্রতি আপনার আসক্ত অনেকটাই কমে যাবে।
  • বাটন ফোন ব্যবহার করুনঃ মোবাইল আসক্তি সবচেয়ে সেরা উপায় হচ্ছে বাটন মোবাইল ব্যবহার করা। কারণ আপনি যদি বাটন ফোন ব্যবহার করেন তাহলে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন না আর ইন্টারনেট ব্যবহার না করার কারণে আপনার ফোনের প্রতি কোন আগ্রহ জন্মাবে না আর এইভাবেই আস্তে আস্তে আপনার ফোনের প্রতি আসক্ত কমে যাবে।
  • বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোঃ আপনি যখন খুবই একাকীত্ব তাই ভোগেন তখন চেষ্টা করবেন বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার এতে করে আপনার মোবাইল ফোন চালানোর কথা মাথায় আসবে না কারণ আপনি বন্ধুদের আড্ডায় ব্যস্ত থাকবেন আর এটাই একটি সেরা উপায় মোবাইল ফোন আসক্তি থেকে বাঁচার।
  • বাইরে অথবা মাঠে খেলাধুলা করাঃ মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির আরও একটি সেরা উপায় হচ্ছে বাইরে অথবা মাঠে খেলাধুলা করা। কারন আপনি যদি বাসায় বসে থাকেন তাহলে আপনার মোবাইল টিপতে মন চাইবে আর যদি আপনি বাইরে গিয়ে খেলাধুলা করেন তাহলে মোবাইল ফোন টিপতে সময় পাবেন না তাই চেষ্টা করুন অবসর টাইমে বাইরে অথবা মাঠে খেলাধুলা করার।
  • মোবাইল ফোন নির্দিষ্ট টাইমে ব্যবহার করাঃ অনেকে আছেন যারা সবসময় মোবাইল ফোন টিপেন এতে করে আরো মোবাইলের প্রতি আসক্ত বেড়ে যায় তাই আপনি যদি দিনে কত ঘন্টা মোবাইল টিপবেন এটি একটি নির্দিষ্ট টাইম অনুযায়ী ব্যবহার করেন তাহলে আপনার মোবাইলের প্রতি আসক্ত অনেকটাই কমে যাবে। তাই চেষ্টা করুন নির্দিষ্ট একটি টাইমে মোবাইল ফোন ব্যবহার করার।
  • আসক্তি অ্যাপস বন্ধ রাখাঃ প্রথমে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে আপনি মোবাইল ফোনের কোন অ্যাপটির ওপর আসক্তি। আপনি যেই অ্যাপসটির ওপর আসক্তি সেই অ্যাপসটি মোবাইল ফোন থেকে আনইন্সটল করে দিন অথবা লক করে দিন যাতে করে ওই অ্যাপটি ব্যবহার না করা যায় তাহলে মোবাইল আসক্তি থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেন।
  • মোবাইল রাখার জায়গা পরিবর্তন করাঃ আমরা অনেকেই রাতে ঘুমানোর জায়গায় পাশে মোবাইল রেখে দিও অথবা পড়ার টেবিলে পাশে মোবাইল রেখে দিই ফলে কিছুক্ষণ পরপরই মোবাইলে হাত চলে যায় অথবা টিপতে মন চাই তাই এমন জায়গায় মোবাইল ফোনটি রাখুন যাতে আপনার নাগালের বাইরে থাকে এতে করে আপনার মোবাইল টিপার আগ্রহ অনেকটাই কমে যাবে।
  • ফোনে বিরক্তিকর পাসওয়ার্ড ব্যবহার করাঃ আপনি যদি আপনার মোবাইল ফোনে বিরক্তিকর পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে কি হবে মোবাইল খুলতে বেশ বিরক্ত কর লাগবে আর এই বিরক্তিকর লাগার কারণে আপনি যে ঘনঘন মোবাইল চেক করতেন সেটি আস্তে আস্তে দূর হয়ে যাবে ফলে মোবাইল আসক্তি থেকে কিছুটা রেহাই পাবেন।
  • সব সময় ব্যস্ত থাকাঃ বর্তমান সময়ে বেকারত্ব মানুষের সংখ্যা অনেকটাই বেশি অনেকে আছেন যারা বেকার বাড়িতে বসে থেকে মোবাইল টিপেন ফলে মোবাইলের প্রতি আস্তে আস্তে আসক্তি হয়ে পড়ে তাই মোবাইলের আসক্তি থেকে বাঁচতে দৈনন্দিন জীবনে এমন কাজকে বেছে নিন যে কাজ করলে আপনার মোবাইল ব্যবহার করার সময় যাতে না পাওয়া যায়।
  • গ্রুপ চ্যাট বন্ধ রাখুনঃ মোবাইলের আসক্তির অন্যতম কারণ হচ্ছে গ্রুপ চ্যাট। বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় গ্রুপ চ্যাটে সারাদিন কথা বললেও যেন কথা শেষ হয় না তাই প্রয়োজন ছাড়া গ্রুপ চ্যাট বন্ধ করে রাখুন এতে করে অনেকটাই মোবাইলে আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
  • পরিবারকে সময় দেওয়াঃ মোবাইল আসক্তি থেকে বাঁচতে অন্যতম উপায় হচ্ছে পরিবারকে বেশি বেশি সময় দেওয়া। আপনি যদি পরিবারের কারো সাথে খেলাধুলা করেন অথবা গল্প করেন তাহলে আপনি মোবাইল টিপার সময় পাবেন না তাই চেষ্টা করুন বেশি বেশি পরিবারকে সময় দেওয়ার।
  • মোবাইল বন্ধ রাখাঃ আপনি যখন পড়ালেখা করবেন অথবা কোন গুরুত্বপূর্ণ কাজ করবেন তখন চেষ্টা করবেন মোবাইল ফোন বন্ধ করে রাখার আর এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তি পাওয়ার। 

বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি হয়

অধিকাংশ বাবা মায়েরাই আজকাল বাচ্চাকে খাবার খাওয়াতে গিয়ে বা বাঁচার বিরক্ত করছে জালা যন্ত্রণা করছে তাকে চুপচাপ রাখার জন্য বাচ্চার হাতে মোবাইল ফোন দিয়ে রাখে ফলে বাচ্চার ইচ্ছামত মোবাইল ফোনে গেমস অথবা ইউটিউবে ভিডিও দেখছে যার কারণে বাচ্চার মধ্যে মোবাইলের আসক্তি তৈরি হয় আর এটি দীর্ঘ মেয়াদে বাচ্চার জন্য অনেক ক্ষতি করছে। তো চলুন জেনে নেওয়া যাক বাচ্চাদের মোবাইল দেখলে কি কি হয়।
  • পড়াশুনার প্রতি মনোযোগ কমে যাওয়া।
  • চোখের দৃষ্টিশক্তি আস্তে আস্তে কমে যাওয়া।
  • বাচ্চার স্মরণশক্তি দুর্বল হয়ে যাওয়া ফলে সহজে কিছু মনে রাখতে পারে না।
  • দেরিতে কথা বলা অথবা চুপ থাকা।
  • ঠিকমতো খাবার না খাওয়া।
  • ব্রেন টিউমারের ঝুঁকি।
  • রাতে ঠিকমতো ঘুম না হওয়া।

মোবাইল আসক্তি রোগ

আধুনিক প্রযুক্তির এই যুগে ঘন্টা পর ঘন্টা মোবাইল ব্যবহার করার অভ্যাস কমবেশি অনেকেরই আছে মোবাইলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করা অনেকের কাছে নেশার মতোই এই নেশা থেকে নানা সমস্যা পড়ার অভিজ্ঞতা আছে কারো কারো। 
এবার ২৯ বছর বয়সে একজন তরুণী ও সোশ্যাল মিডিয়া ইনফ্লুয়েন্স দাবি করেছেন দিনে ১৪ ঘণ্টা করে মোবাইলে কাজ করতে করতে তিনি ডিজিটাল ভাটিগো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন তাকে চলাফেরার জন্য কিছু দিন হুইলচেয়ার ব্যবহার করতে হয়েছে। এক প্রতিবেদনে বলা হয় ফেনেলা ফক্স নামের ওই ব্রিটিশ তরুণীর সকাল থেকে রাতের অধিকাংশ সময় কাটতো মোবাইল ব্যবহার করে তিনি ইনস্টাগ্রামে আসক্তি হয়ে গিয়েছিলেন।

আমাদের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক আজকের এই আর্টিকেলে মোবাইল আসক্তির কুফল এবং মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি আশা করি আপনি সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়েছেন। আপনি যদি মোবাইল ফোনে আসক্তি হয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত এ নেশা থেকে বেরিয়ে আসুন কেননা এটি একটি খুবই মারাত্মক সমস্যা।

এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অন্যদের সাথে শেয়ার করে দিবেন আর আপনার যদি কোন প্রশ্ন অথবা কোন কিছু জানার থাকে তাহলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url