সেরেলাক এর উপকারিতা ও দিনে কতবার খাওয়া যায় জেনে নিন

যেসব বাচ্চারা মায়ের দুধ খুব বেশি একটা পাই না এবং অতিরিক্ত খাবার প্রয়োজন হয়ে থাকে সেসব বাচ্চাকে সেরেলাক খাওয়ানো হয়ে থাকে। অনেক মা বাবা আছেন যারা সেরেলাক সম্পর্কে জানেনা। তাই আজকের আর্টিকালে সেরেলাক এর উপকারিতা এবং সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায় যে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।
সেরেলাক এর উপকারিতা । সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায়
মা বাবা আছেন যারা হরলিক্স সম্পর্কে জানলেও সেরেলাক এর উপকারিতা সম্পর্কে তেমন একটা জানেনা। সেরেলাক এর উপকারিতা এবং সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায়? সেরেলাক ১ খাওয়ার নিয়ম জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ সেরেলাক সামান্য সঠিক নিয়ম কয়বার খাওয়াতে হয় যদি না জেনে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার বাচ্চা স্বাস্থ্যর ঝুঁকি হতে পারে। 

সেরেলাক কোনটা ভালো হবে?

আপনি যদি আপনার শিশুকে সেরেলাক খাওয়াতে চান তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন তারপর সেরেলাক খাওয়াবেন। তবে আমার মতে এইসব বাইরের প্যাক জাতীয় খাবার না দেওয়াই উচিত কারণ এই এ সব তো প্রাকৃতিক নিয়মে তৈরি হয় না 

আর এগুলো ভিতরে কোন না কোন কেমিকাল মিশ্রণ থাকে তাই আমি বলব যে এইসব বাইরের প্যাকেট জাতীয় খাবার না খাওয়া নাই উচিত। আর যদি দেখেন যে বাচ্চার খাবার এবং দুধ খাওয়ানো সংকট দেখা দিয়েছে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেরেলাক খাওয়াবেন। 
সেরেলাক অনেক রকমের হয়ে থাকে যেমন দুধ এবং ভাত ফ্লেভার হয়ে থাকে। যেসব বাচ্চারা খেতে চায় না সেইসব বাচ্চার জন্য একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেরেলাক খাওয়াতে পারেন এবং একজন ডাক্তারি ভালো বলতে পারে কত বয়সের বাচ্চার জন্য সেরেলাক কোনটা ভালো হবে। তবে আপনি জানেন যে নেসলে খুবই সুপরিচিত একটি ব্যান্ড তাই নেসলে সেরেলাক শিশুকে খাওয়াতে পারেন।

সেরেলাক এর উপকারিতা

সেরেলাক এ পরিমাণে পুষ্টিগুণ রয়েছে। যেসব শিশু খেতে চাই না সেসব শিশুর ক্ষেত্রে সেরেলাক বেশ ব্যয়বহুল। এছাড়াও বাজারে কিনতে পাওয়া সেরেলাক শিশুর জন্য কতটা স্বাস্থ্যসম্মত সেটা নিয়ে অনেক মা-বাবা চিন্তায় করে থাকেন তাই আমরা সেরেলাক এর উপকারিতা সম্পর্কে বিস্তারিত আপনাদের জানাবো। 

শিশুর খাবারের কথা মনে পড়লে সেরেলাক মনে ভেসে ওঠে কারণ এটি তৈরি করতে বেশ সহজ এবং এটি সুস্বাদু স্বাদ যা জনপ্রিয় করে তুলেছে। আমেরিকায় শিশু বিশেষজ্ঞদের মতে যখন আপনার শিশুর বয়স ছয় মাস হবে তখনই সেরেলাক খাওয়ানো উচিত। এই সেরেলাক এর রয়েছে আইরন, ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, ওমেগা ৩ এবং ওমেগা ৬ এছাড়াও রয়েছে ১৮ টি পুষ্টিগুন উপাদান। 

যেসব শিশুর ওজন কম হয় এবং কোন মতেই শিশুর ওজন বাড়ছে না সে ক্ষেত্রে এই সেরেলাক ওজন বৃদ্ধিতে এবং শিশুর বিকাশে বেশ সহায়তা করে। এই সেরেলাক এ বিভিন্ন প্রকারের খাবার সংযুক্ত করা রয়েছে যেমন মাংসের গুড়া, ডালের গুড়া, ফলের গুড়া ইত্যাদি সংযুক্ত করে এই উপাদানটি তৈরি করা হয়েছে যা বাচ্চার জন্য খুবই পুষ্টিমান খাবার। আশা করি সেরেলাক এর উপকারিতা গুলো জানতে পেরেছেন।

সেরেলাক ১ খাওয়ার নিয়ম

সেরেলাক গুলো যদি আমরা সঠিক উপায় শিশুকে না খাওয়াই তাহলে ডায়রিয়া বমি এবং স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে তাই আমরা এই অংশে সেরেলাক ১ খাওয়ার নিয়ম সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানাবো।বাজার থেকে সেরেলাক কেনার আগে সেটার মেয়াদ ভালোভাবে দেখে নিবেন 

এবং এই সেরেলাকটি বিভিন্ন বয়সের শিশুর জন্য আছে তাই কেনার আগে প্যাকেটের ওপরে আপনার শিশুর বয়স কত সেটা দেখে কিনবেন কারণ আপনি যদি আট বছরের শিশুর সেরেলাক যদি ছয় মাসে শিশুকে খাওয়ান সে ক্ষেত্রে ডায়রিয়া সহ বমিও হতে পারে। একটি বাটিতে তিন চামচ সেরেলাক ঢেলে তার ভেতর অল্প একটু কুসুম গরম পানি দিয়ে দিন 
তারপর সেটাকে মিক্স করুন অবশ্যই পরিমাণ মতো নেবেন যাতে পাতলা না হয়ে যায় আবার যাতে ঘন না হয়ে যায় তারপর মিক্স করার পর দেখবেন পায়েসের মত হয়ে যাচ্ছে। তারপর আপনি আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারবেন তবে খুব বেশি খাওয়াবেন না একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়ালে সবচেয়ে ভালো। আশা করি সেরেলাক ১ খাওয়ার নিয়ম গুলি বুঝতে পেরেছেন।

৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক

ছয় মাস বয়সের শিশুদের আপনি যেকোনো ব্র্যান্ডের সেরেলাক খাওয়াতে পারেন তবে আমার মতে নেসলে কোম্পানি ভালো হবে। এছাড়াও আপনি নিজের ঘরেই সেরেলাক তৈরি করতে পারেন ঘরোয়া উপায় যা আপনি চাইলে আপনার বাচ্চাকে রাস্তাঘাটে যে কোন পরিবেশে সেরেলাক খাওয়াতে পারবেন চলুন তাহলে জেনে নেওয়া যাক ৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক ঘরোয়া উপায়ে তৈরি করার নিয়ম সম্পর্কে।

রান্না ছাড়াই সেরেলাক তৈরি
এখন আপনাদের সাথে আলোচনা করব রান্না ছাড়াই কিভাবে অল্প টাইমে মধ্যে আপনার বাচ্চাকে সেরেলাক তৈরি করে খাওয়াতে পারবেন যার জন্য আপনাকে এক চামচ অথবা পরিবার মতন একটি
বাটিতে সেরেলাক ঢালুন এবং তার ভেতর হালকা কুসুম গরম পানি দিয়ে দিন পরিমাণ মতন যাতে পাতলা না হয়ে যায় এবং ঘন না হয়ে যায় তারপর আপনি আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। 
রান্না করে তৈরি সেরেলাক
সেরেলাক তৈরি করার জন্য মাখারাম প্রয়োজন। কাঁচা মাখারাম গুলো চুলাই ভালোভাবে অল্প তাপে ভেজে নিবেন। মাখারাম গুলো যখন ভাজা হয়ে যাবে তখন কিভাবে বুঝতে পারবেন? হাত দিয়ে মাখারাম গুলো চাপুন যদি ভেঙ্গে যায় তাহলে বুঝবেন মাখারাম গুলো ভাজা হয়ে গেছে 

এবং একটি বিলিন্ডারি সেটিকে গুঁড়ো করে নিন তাহলে আপনার শিশুকে খাওয়াতে পারবেন গরম পানি সাথে। এবং এটিকে অনেকদিন ধরে সংরক্ষণ করে রাখতে পারবে। আশা করি বুঝতে ৬ মাসের বাচ্চার সেরেলাক সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।

সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায়?

সেরেলাক বানানোর পরে শিশুকে চেষ্টা করবেন সাথে সাথে বানিয়ে সাথে সাথে খাওয়ানোর। সেরেলাকের ভিতর মিষ্টি দুধ এবং আর্টিফিশিয়াল ফ্লেভার থাকে যার কারণে খাবারটি অনেক সুস্বাদু হয়ে যায় এবং বাচ্চারা অনেক পছন্দ করে। 

অন্যান্য খাবার গুলো শিশু না খেতে চাইলেও সেরেলাক বা বাজার থেকে কেনা পণ্য মজা করে খাই তাই চেষ্টা করবেন বাচ্চাকে দিনে অন্তত পক্ষে একবারি এই সেরেলাক খাওয়াতে। কারণ এই সেরেলাক বেশি খাওয়ালে বাড়ির অন্যান্য খাবার খেতে চাইবে না। তাই সেরেলাক দিনে একবার খাওয়াবেন।

পাঁচ মাসের শিশুর খাবার সেরেলাক দেওয়া যাবে?

পাঁচ এবং ছয় মাসের শিশুকে সেরেলাক খাওয়াতে পারবেন তবে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে শিশুকে খাওয়ানো শুরু করতে পারেন। তবে আমি বলব বাজারে কিনতে পাওয়া সেরেলাক প্যাকেটগুলি শিশুকে না খাওয়ানো। কারণ বাইরের জিনিসে অনেক কেমিক্যাল মিশানো থাকে ফলে আপনার বাচ্চার স্বাস্থ্য ঝুঁকি হতে পারে।

সেরেলাক এর দাম কত

সেরেলাক বর্তমান বাজার মূল্য অনুযায়ী ৩০০ টাকা থেকে ৪০০ টাকার ভিতর কিনতে পেয়ে যাবেন।সেরেলাকের অনেকগুলো ফেভার রয়েছে এবং অনেকগুলো বাজারে কোম্পানি রয়েছে এক একটি কোম্পানির একেক রকম দাম রয়েছে। তবে আপনার বাচ্চার জন্য নেসলে সেরেলাক সবচাইতে ভালো হবে এবং একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেটি আপনার বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন।

সেরেলাক খাওয়ার বয়স

সেরেলাক খাওয়ার সঠিক বয়স হচ্ছে ৬ থেকে ১০ মাস। তবে আপনি যদি ছয় মাসের আগে এবং ১০ মাসের পরে সেরেলাক খাওয়াতে চান তবে একজনের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াতে হবে আশা করি বুঝতে পেরেছেন সেরেলাক খাওয়ার সঠিক বয়স সম্পর্কে।

সেরেলাক এর অপকারিতা

সেরেলাক এর অপকারিতা এর যেমন উপকারিতা ও রয়েছে তেমনি অপকারিতা রয়েছে। তাই এই অংশে সেরেলাক এর অপকারিতা নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করব। আপনি যদি আপনার বাচ্চাকে দীর্ঘদিন যাবত সেরেলাক খাইয়ে থাকেন এবং হঠাৎ যদি সেরেলাক খাওয়ানো বন্ধ করে দেন সে ক্ষেত্রে বাচ্চার ওজন কমে যায়। 
আপনি যদি খুবই ব্যস্ত একজন মা হয়ে থাকেন তাহলে আপনার বাচ্চাকে সেরেলাক জাতীয় এসব খাবারগুলি দিতে পারেন তবে প্রতিবেলার খাবার কিন্তু সেরেলাক দেওয়া উচিত নয়। কারণ এ সেরেলাক  খেতে খুবই সুস্বাদু তাই বাচ্চারা অনেক পছন্দ করে 

সেজন্য আপনি যদি বেলায় সেরেলাক খাওয়ান আপনার বাচ্চাকে সেক্ষেত্রে অন্য যেসব প্রাকৃতিক খাবার হয়েছে সেগুলি আর খেতে চাইবে না সেজন্য আপনি আপনার শিশুকে দিনে একবার সেরেলাক খাওয়াতে পারেন।

বাজারে কিনতে পাওয়া সেরেলাক গুলি না কিনাই উত্তম কারণ সেই সেরেলাক এ বিভিন্ন রকম রং এবং কেমিক্যাল ব্যবহার করা হয় যেটা আপনার শিশুর জন্য স্বাস্থ্য ঝুঁকি কারণ হতে পারে। তাই চেষ্টা করবেন নিজে ঘরোয়া উপায়ে সেরেলাক বানিয়ে শিশুকে খাওয়ানোর। আশা করি সেরেলাক এর অপকারিতা
গুলো সম্পর্কে বুঝতে পেরেছেন।

শেষ কথা

আজকে আপনাদের সাথে সেরেলাক এর উপকারিতা এবং সেরেলাক দিনে কতবার খাওয়া যায় সে সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেছি এছাড়াও সেরেলাক খাওয়ার নিয়ম ইত্যাদি আরো অনেক বিষয়ে আপনাদের জানিয়েছি আশা করি আপনি পোস্টটি পড়েছেন এবং উপকৃত হয়েছেন। 

শেষে আরেকটি কথা বলব সেটা হচ্ছে আপনার বাচ্চাকে প্রতিনিয়ত সেরেলাক খাইয়ে অভ্যাসে পরিণত করবেন না কারণ এটি এমন একটি সুস্বাদু উপাদান যা আপনার শিশুর অন্য খাবারের প্রতি রুচি হারিয়ে যেতে পারে। এই পোস্টটি যদি ভালো লেগে থাকে অন্যদের সাথে শেয়ার করবেন আপনার যদি আর কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তবে নিচে কমেন্টের মাধ্যমে আমাকে জানাতে পারেন ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

Edu 360 BD নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url